স্বামী বিদেশে... বাড়িতে স্ত্রী একা...! স্বামীর বন্ধু কি করল জানেন? শিউরে উঠবেন ঘটনা শুনলে!

আজকাল সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের জীবনের রন্ধে রন্ধে ঢুকে গিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া এড়িয়ে চলা প্রায় অসম্ভব। সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে এমন অনেক নতুন নতুন বন্ধু জুটে যায় যাঁরা অল্প সময়েই জীবনের বেশ অনেকটা জায়গা জুড়ে নেয়।

আবার এই সোশ্যাল মিডিয়ার ইন্টারনেট বন্ধুত্বই কিন্তু কখনও কখনও অপ্রত্যাশিত মোড় নেয়। কেরলের একটি সাম্প্রতিক ঘটনা ইন্টারনেট বন্ধুত্বের আড়ালে আজকাল যে প্রতারণাগুলি ঘটছে তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।

এমন ঘটনা ঘটল যা এককথায় নাড়িয়ে দিয়েছে নেটিজেনদের বড় অংশকে। পুরো ঘটনাটি শুনলে আপনিও আঁতকে উঠবেন শুধু না, আগামী দিনে সতর্ক হবেন সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারে।

ঠিক কী ঘটেছিল কেরলে? একজন মহিলা তাড়াহুড়ো করে এমন একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন যা তাঁর জীবনকে রীতিমতো উল্টেপাল্টে দেয় এক লহমায়। আসলে ওই মহিলার স্বামী কর্মসূত্রে বাইরে থাকতেন আর তারই কারণে ওই মহিলা এমন একটি কাণ্ড করে বসেন যার জন্য তাঁকে রীতিমতো ভারী মূল্য চোকাতে হয়।

বস্তুত দেশ-বিদেশে স্মার্টফোন ও সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। আর পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অনলাইনে প্রতারণার ঘটনাও। সোশ্যাল মিডিয়ায় আলাপ হওয়া লোকেদের অন্ধভাবে বিশ্বাস করার অনেক ঘটনাই রয়েছে যা আমাদের বারবার চোখ খুলে দেয়।

আসলে বন্ধুত্ব হলেও এই ভার্চুয়াল জগতের 'ইন্টারনেট বন্ধুত্ব' কখনও কখনও অপ্রত্যাশিত মোড় নেয়। কেরলের একটি সাম্প্রতিক ঘটনা ইন্টারনেট বন্ধুত্বের আড়ালে যে প্রতারণাগুলি ঘটছে তা সামনে নিয়ে এসেছে।

ঘটনায় ওই মহিলাকেও এমনই একটি ভয়ঙ্কর সমস্যার সামনে পড়তে হয় যখন তাঁর পাঠানো একটি ছবির কারণে তাঁর জীবন রীতিমতো ওলোটপালোট হয়ে গিয়েছিল। চলুন জেনে নেওয়া যাক এই ব্ল্যাকমেলের ঘটনার পিছনের আসল ঘটনা।

ত্রিশুরের ওই গৃহবধূর স্বামী বিদেশে কর্মরত ছিলেন। তাই তিনি একাই থাকতেন। জানা যায়, এই সময় তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর স্বামীর এক বন্ধু কাথিরের সংস্পর্শে আসেন। দুজনের মধ্যে বন্ধুত্ব গাঢ় হয়। একসময় এই পরিচিতি ও কাছাকাছি আসা কাথিরকে মহিলার নিজের নগ্ন ছবি পাঠানো পর্যন্ত পৌঁছে যায়।

তখনই কাথিরের আসল রূপ প্রকাশ্যে আসে। সে তার নগ্ন ছবি নিজের কাছে রেখে ওই মহিলাকে সমানে ব্ল্যাকমেইল করতে থাকে। সে ছবিগুলি মহিলার স্বামীর কাছে পাঠিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করার হুমকি পর্যন্ত দেয়।

নিজের সুনাম নষ্ট হবে এই ভয়ে কাথিরকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত দিতে বাধ্য হন ওই মহিলা। কিন্তু টাকার জন্য মরিয়া কাথির আবারও টাকার জন্য চাপ দিতে শুরু করে।

কাথিরের চাপাচাপিতে বিরক্ত হয়ে শেষমেশ পুলিশের দ্বারস্থ হন ওই মহিলা। পুলিশ তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাথিরকে কাট্টুর এলাকায় আটক করে। বর্তমানে পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে। এই ঘটনা এরপর সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক ভাবে ভাইরাল হয় যা শুনে রীতিমতো হতবাক সবাই।

এই ধরনের জালিয়াতি ঠেকাতে আইন:প্রসঙ্গত, আমাদের দেশে এই ধরনের সাইবার অপরাধ প্রতিরোধের জন্য খুবই কঠোর আইন রয়েছে। তথ্য প্রযুক্তি আইন ২০০০-- এই আইনের অধীনে অশ্লীল ছবি ও ভিডিও প্রচার করা একটি অপরাধ।

ধারা ৬৭: ইলেকট্রনিক মাধ্যমে প্রাপ্তবয়স্ক বিষয়বস্তু প্রকাশ বা ট্রান্সমিশন-এর মতো অপরাধ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হবে।

ধারা ৬৭A: এটি আরও গুরুতর অপরাধ। কোনও ব্যক্তি যৌন ইঙ্গিতমূলক বিষয়বস্তু তৈরি, প্রকাশ বা বিতরণ করলে তাকে পাঁচ বছরের জেল এবং মোটা জরিমানা দিতে হতে পারে।

ধারা 66E: আপনার সম্মতি ছাড়া আপনার ব্যক্তিগত ছবি তোলা বা কাউকে পাঠানো অপরাধ। এই অপরাধে তিন বছরের কারাদণ্ড বা দুই লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। তবে শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়স্কদের ছবি রাখাই অপরাধ নয়। এই ছবি কারও কাছে পাঠালে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করলে কঠিন শাস্তি হতে পারে।