Time Travel-Time Machine: চাইলেই যেতে পারবেন আপনার অতীতে-ভবিষ্যতে! সম্ভব কিন্তু! টাইম ট্রাভেল নিয়ে চমকে ওঠা খবর প্রকাশ্যে
- Published by:Suman Biswas
- news18 bangla
Last Updated:
Time Travel-Time Machine: টাইম ট্রাভেল বা সময় পরিভ্রমণ বলতে সহজ ভাষায় অতীতে বা ভবিষ্যতে যেতে পারাকে বোঝায়। ধরুন, কেউ যদি ২০০০ সালে ফিরে যেতে পারে বা ২০৩০ সালের পৃথিবীতে চলে যেতে পারে, তবে এটিকেই টাইম ট্রাভেল বলা হচ্ছে।
advertisement
advertisement
প্রাচীন মহাকাব্য বা লোকগল্পে সময় ভ্রমণের অনেক কাহিনী প্রচলিত ছিল। খ্রিস্টীয় অষ্টম শতাব্দীর জাপানের লোককথার এক চরিত্র উরাশিমার সময় ভ্রমণের গল্পও বেশ জনপ্রিয়। বিজ্ঞান বলছে, ভবিষ্যত ভ্রমণ সম্ভব। তবে সিনেমা বা সায়েন্স ফিকশনের নানা কমিকসের মতো নয়। অস্ট্রিয়ার প্রখ্যাত গণিতবিদ কুর্ট গডেল ম্যাথমেটিক্সের মাধ্যমে দেখিয়েছেন যে এই ব্রহ্মাণ্ডে কিছু Closed Timelike Curve থাকা সম্ভব যা নির্দেশ করে সময় ভ্রমণও সম্ভব, তবে বিশেষ কিছু শর্তে।
advertisement
বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটন মনে করতেন মহাবিশ্বের সব স্থানে সময় প্রবাহের হার সমান, অর্থাৎ পৃথিবীতে এক ঘণ্টা অতিক্রম হওয়া মানে মহাবিশ্বের সবখানে এক ঘণ্টা অতিক্রম হবে। যা অলরেডি ঘটে গেছে তা সবার জন্যই অতীত। কিন্তু আইনস্টাইন এর বিরোধিতা করে বলেছেন, মহাবিশ্বের সব স্থানে সময় প্রবাহের হার এক না, যা ঘটে গেছে তা সবার জন্য অতীত নাও হতে পারে। এ সম্পর্কে তার থিওরি অব রিলেটিভিটি বা আপেক্ষিকতা তত্ত্ব প্রকাশের পর সময় সম্পর্কে সবার ধারণার আমুল পরিবর্তন হয়।
advertisement
ধরুন, কোন ব্যক্তিকে আলোর গতিতে ছুটে চলতে পারে এমন কোনও একটি মহাকাশযানে উঠিয়ে দেওয়া হল এবং তিনি ভ্রমণে বেরিয়ে পড়লেন মহাজগতের এপার থেকে ওপার। কিন্তু পৃথিবীতে ফিরে এসে দেখা যাবে অনেক বছর কেটে গেছে যেখানে ওই ব্যক্তির কাছে মনে হবে মাত্র অল্প কিছু সময় পার হয়েছে। এভাবেই আইনস্টাইনের থিওরিতে টাইম ট্রাভেলের ফর্মুলা ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এই থিওরির ব্ল্যাকহোল ও ওয়ার্মহোলের ডিপ কানেকশন রয়েছে।
advertisement
ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণগহ্বর হল তারার খুব দুর্দশাপূর্ণ অবস্থা। তারাগুলো একেবারে চুপসে গিয়ে ভর একদম একটি বিন্দুতে এসে পৌঁছায়, যার ফলে স্থান, সময়ের মাত্রা ইনফিনিট বা অসীম হয়ে যায়। সেখানে আলো প্রবেশ করলেও আর বের হয়ে আসতে পারে না। এদিকে, আইনস্টাইনের Theory Of General Relativity অনুসারে ভর যত বেশি, সময়ও ততো ধীর হবে। তাই কেউ যদি কোনো মহাকাশযান নিয়ে ব্ল্যাকহোলের আশপাশে ভ্রমণ করতে থাকেন আর অন্য একটি মহাকাশযান যদি পৃথিবীর চারদিকে ভ্রমণ করতে থাকে তবে ব্ল্যাকহোল ভ্রমণকারীর বয়স, পৃথিবীর চারপাশে ঘোরা ব্যক্তির বয়সের অর্ধেক হবে। এখন প্রশ্ন হল ব্ল্যাক হোলে না ঢুকে কেন এর চারপাশে ঘোরার কথা বললাম। এর উত্তর হল, ব্ল্যাকহোলে ঢুকলে কেউ আর বের হতে পারবে না। সেখানে মহাকর্ষ বল খুব বেশি। ব্ল্যাকহোলের গ্রাভিটেশনাল ফিল্ডের শেষ সীমানাকে বলা হয় ঘটনা দিগন্ত, যা অতিক্রম করে ফেললে যেকোন ব্যক্তি বা বস্তুকে আগের অবস্থায় আর কখনই পাওয়া সম্ভব না।
advertisement
কীভাবে টাইম ট্রাভেল সম্ভব? এক্ষেত্রে ওয়ার্মহোল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দর্শক, স্পেস বা মহাশূন্যের পথ কখনই সমতল নয়। তাই আলো যখন মহাশূন্যের ভেতর দিয়ে যায়, তখন বাঁকা স্পেসের মধ্য দিয়ে একটি বাঁকানো পথে চলতে বাধ্য হয়। কিন্তু এই বাঁকা পথের পাশাপাশি আরও একটি সংক্ষিপ্ত রাস্তাও আছে। সেই সংক্ষিপ্ত পথই হচ্ছে ওয়ার্মহোল। ওয়ার্মহোলকে অনেক সময় আইনস্টাইন-রজেন ব্রিজ নামেও ডাকা হয়ে থাকে।
advertisement
ধরুন, এই সৌরজগৎ থেকে আলফা সেন্টরাইতে কেউ যেতে চাইলে আলোর গতিতে তার সময় লাগবে ৪.৩ বছর। আবার ওই ব্যক্তির ভর থাকায় তার পক্ষে আলোর গতিতে ভ্রমণ সম্ভব না। কিন্তু ওয়ার্মহোলের মাধ্যমে শর্টকাট রাস্তায় ওই ব্যক্তির পক্ষে সহজেই আলফা সেন্টরাইতে প্রবেশ করে আবার নিজের সৌরজগতেও ফিরে আসা সম্ভব। তার মানে তিনি ভবিষ্যতেও যেতে পারবেন আবার অতীতেও ফিরে আসতে পারবেন। তবে অতীতে ফিরে আসা কতটুকু সম্ভব তা নিয়ে কিছু বিতর্ক আছে।
advertisement
এটি পরিষ্কার যে টাইম ট্রাভেল সাধারণ কোনও ঘটনা নয়, এটি প্রকৃতিবিরোধী। মজার ব্যাপার হল, আইনস্টাইনের থিওরি অনুযায়ী যে বিশেষ ক্ষেত্রগুলোর উপস্থিতিতে টাইম ট্রাভেল সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে, তার সবকিছু আবার স্টিফেন হকিংয়ের কোয়ান্টাম তত্ত্ব সাপোর্ট করছে না। তবে আইনস্টাইন, স্টিফেন হকিং, থর্নের মতে, ওয়ার্মহোল বাস্তবে পাওয়া সম্ভব হলে এটা দিয়েই টাইম ট্রাভেল সবচেয়ে সম্ভাবনাময় হবে বলে মত তাদের। তাই সায়েন্টিফিক থিওরি অনুযায়ী টাইম ট্রাভেল সম্ভব, তবে বাস্তবিক অর্থে আলোর গতিতে না পৌঁছাতে পারলে সম্ভব না।
advertisement
সেক্ষেত্রে, এমন একটি টাইম মেশিন বানাতে হবে যেখানে আলোর গতির কাছাকাছি গতি অর্জন করা সম্ভব। আশার কথা হলো, University of Connecticut এর ফিজিক্সের প্রফেসর রোনাল্ড ম্যালেট একটি সার্কেলড্ লেজারের সাহায্যে ঘূর্ণায়মান ব্ল্যাকহোলের মত পরিস্থিতি সৃষ্টির করে টাইম ট্রাভেলকে বাস্তবায়িত করার জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। তার এই ডিভাইসের আদলে ভবিষ্যতে টাইম মেশিন বানানো যাবে বলে দাবি তার। তবে সময়ই বলে দেবে এটি দিয়ে আদৌ অতীত কিংবা ভবিষ্যতে যাওয়া সম্ভব কি-না।
advertisement