বিয়ের ৪ বছরেও শারীরিক সম্পর্ক হয়নি, স্বামী মেয়ে সেজে অনুষ্ঠানে নাচেন, ক্ষোভে-দুঃখে বিবাহবিচ্ছেদ চাইলেন স্ত্রী

বিয়ের প্রথম রাতেই অবাক হয়েছিলেন স্ত্রী। স্বামীর আচরণ অস্বাভাবিক লেগেছিল তাঁর। এর পর কেটে গিয়েছে ৪ বছর! স্বামীর সঙ্গে তাঁর দাম্পত্য জমে উঠল না। সমস্যাটা কী? হঠাৎ একদিন জানতে পারলেন ভয়াবহ সত্যি! কী সেটা?

 বর শুধু ভালবাসেননি, তা নয়। ওই বধূ জানিয়েছেন, চার বছরেও স্বামীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক হয়নি তাঁর। এখানেই শেষ নয়, স্বামীর মোবাইল ঘাঁটতে গিয়ে যে সব ছবি দেখেছেন, তাতে তাঁর মাথা ঘুরে গিয়েছে। সে সব ছবিও এখন পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন তিনি। 

তাতে দেখা যাচ্ছে, যুবতীর স্বামী মেয়ে সেজে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নাচেন। কিন্নরদের সঙ্গে মেশেন। এই নিয়ে স্বামীর সঙ্গে তাঁর ঝগড়াও হয়। কিন্তু তিনি এসব মানতে নারাজ। 

যুবতী তখন শ্বশুর শাশুড়ির কাছে এই নিয়ে অভিযোগ করেন। তাঁরা ছেলেকে কিছু না বলে, যুবতীর উপরেই পাল্টা অত্যাচার শুরু করেন। এই পরিস্থিতিতে আর সংসার করতে রাজি নন যুবতী। তিনি বিবাহবিচ্ছেদ চান।

মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রের এমন অদ্ভুত ঘটনায় শোরগোল পড়েছে। ২৩ বছর বয়সী যুবতী গৃহবধূ স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ২০২০ সালে ধুমধাম করে তাঁদের বিয়ে হয়েছিল। ছেলের পরিবারকে ১২ লাখ টাকার গয়না দিয়েছিল মেয়ের পরিবার। সঙ্গে ঘর সাজাবার যাবতীয় জিনিস।

বধূর অভিযোগ, বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে পা রাখতেই বর জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি এখন শারীরিক সম্পর্কের জন্য তৈরি নন, তাঁর চিকিৎসা চলছে। শুনতে অদ্ভুত লাগলেও কিছু মনে করেননি যুবতী। স্বামীর কথা মেনে নিয়ে আলাদা ঘরে থাকতেন। কিন্তু তারপর চার বছর কেটে গিয়েছে। এখনও তাঁদের মধ্যে কোনওরকম শারীরিক সম্পর্ক হয়নি।

বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই ছোটখাটো বিষয় নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে ঝামেলা শুরু হয়। ঝগড়া, বিবাদ লেগেই থাকে। যুবতীর অভিযোগ, ঝগড়ার সময় শুশুর শাশুড়ি তাঁকে মারধরও করতেন। গোটা বিষয়টা স্বামীকে জানান তিনি। সহানুভূতি তো মেলে না, উল্টে তিনিও পেটাতে শুরু করেন।

তিনি জানিয়েছেন, এর মধ্যে একবার গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। সেই সময় শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে বাপের বাড়িতে রেখে আসেন। পরে সুস্থ হয়ে ফের শ্বশুরবাড়িতে ফেরেন তিনি। এসে দেখেন, ননদ তাঁর ঘর দখল করে নিয়েছেন। এরপর ২০২৩ সালে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাঁকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় বলে অভিযোগ।

ওই মহিলা পুলিশকে আরও জানান, তিনি যখন স্বামীর মোবাইল চেক করেন, তখন একটি চমকপ্রদ বিষয় সামনে আসে। মোবাইলে পাওয়া ছবিতে দেখা গিয়েছে, তাঁর স্বামী মেয়েদের মতো পোশাক পরেন এবং অনুষ্ঠানে নাচ করেন। বৃহন্নলা এবং তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের সঙ্গেই মূলত আড্ডা দেন স্বামী, এমনই জানতে পারেন স্ত্রী।  এদিকে জিজ্ঞাসা করতেই অস্বীকার করেন তাঁর স্বামী। শুরু হয় অত্যাচার। 

পুলিশ জানিয়েছে, বিবাদ মেটাতে উভয় পক্ষকে থানায় ডাকা হয়েছিল। কিন্তু স্বামী আর স্ত্রীর সঙ্গে থাকতে রাজি নন। স্ত্রী-ও এখন তাই বিবাহবিচ্ছেদ চাইছেন। এই মামলা এখন পারিবারিক আদালতে পাঠানো হবে।