Prashant Kishor: বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হবেন প্রশান্ত কিশোর? সামনে রয়েছে মধু কোড়ার ইতিহাস! বিহারে ম্যাজিক দেখাবেন পিকে, তৈরি হচ্ছে পথ

বিহারই নয়, দেশজুড়ে আলোচনা চলছে যে নির্বাচনী কৌশলবিদ থেকে রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠা প্রশান্ত কিশোর কি বিহার নির্বাচন ২০২৫-এ বড় খেল দেখাবেন? এবার নির্বাচনী ময়দানে PK-এর জন সুরজ পার্টি একটি নতুন বিকল্প হিসেবে উঠে এসেছে।

PK-এর দাবিগুলি এবং বিহারের পরিবর্তিত রাজনৈতিক বাতাস অনেক প্রশ্ন তুলেছে। প্রথমত, PK কত আসন জিততে পারেন? তিনি কি কিংমেকারের ভূমিকা পালন করবেন, যেমন ২০০৬ সালে ঝাড়খণ্ডে মধু কোড়া করেছিলেন?

যদি NDA বা মহাগঠবন্ধন সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকে পিছিয়ে যায় তাহলে কি PK মুখ্যমন্ত্রী বা উপমুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন? দিল্লি, মুম্বই এবং দেশের অন্যান্য অংশে বসবাসকারী লোকেদের মধ্যে এই প্রশ্ন বারবার উঠছে যে PK বিহারে কত আসন জিততে চলেছেন?

প্রশান্ত কিশোর যিনি আগে একজন সফল নির্বাচনী কৌশলবিদ ছিলেন, এখন তার পার্টিকে বিহারের সমস্ত ২৪৩ আসনে নির্বাচন লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তার দাবিগুলি এবং বিহারের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনেক প্রশ্ন তুলেছে। PK-এর সভাগুলিতে যেভাবে ভিড় জমছে, তা থেকে অনুমান করা যেতে পারে যে তিনি কিছু বড় করতে চলেছেন।

এমন পরিস্থিতিতে বড় প্রশ্ন হল, প্রশান্ত কিশোর কি ২০০৬ সালে ঝাড়খণ্ডে মধু কোড়া যা করেছিলেন, তা বিহারে করতে পারবেন? প্রশান্ত কিশোর দাবি করেছেন, তার পার্টি বিহারে পরিবর্তনের ঢেউ আনবে। তিনি বলেছেন যে বিহারের ৬০%-এর বেশি লোক নতুন ব্যবস্থা চায়, যা শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং উন্নয়নের উপর কেন্দ্রীভূত হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে PK-এর সমস্ত ২৪৩ আসনে নির্বাচন লড়া একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ। PK-এর কৌশলে ব্রাহ্মণ, রাজপুত, দলিত এবং কুর্মি সম্প্রদায়কে সামলানোর ‘BRDK ফর্মুলা’ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা বিহারের জাতিগত সমীকরণগুলি বিবেচনা করে গুরুত্বপূর্ণ। যদিও অনেক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ দাবি করেছেন, জন সুরজ বিহারে ১০ থেকে ৩০ আসন পেতে পারে।

বিশেষ করে সেই অঞ্চলে যেখানে যুবক এবং হতাশ ভোটাররা বিকল্পের সন্ধানে রয়েছে। বিহারে গড় জয়ের ব্যবধান ১৬,৮২৫ ভোট ছিল এবং ভোটার তালিকায় পরিবর্তন ফলাফলকে প্রভাবিত করতে পারে। যদি জন সুরজ এই কাছাকাছি আসনগুলিতে প্রভাব ফেলে তাহলে এটি NDA এবং মহাগঠবন্ধনের জন্য চ্যালেঞ্জ হতে পারে। যদিও, PK-এর এই দাবি যে তার পার্টি একা সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্থাৎ ১২২ আসন অর্জন করবে। অনেক বিশ্লেষক একে যদিও অতিরঞ্জিত মনে করছেন। কারণ RJD এবং BJP-এর মতো বড় দলের ভোট ব্যাংক এখনও শক্তিশালী।

২০০৬ সালে ঝাড়খণ্ডে নির্দলীয় বিধায়ক মধু কোড়া জোটের অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর আসন অর্জন করেছিলেন। PK কি এমন কিছু করতে পারেন? বিশেষজ্ঞদের মতে যদি BJP-JDU বা RJD-কংগ্রেস সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকে পিছিয়ে যায় তাহলে জন সুরজ কিংমেকারের ভূমিকা পালন করতে পারে।

কিন্তু PK স্পষ্ট করেছেন যে তিনি কোনও জোটে যোগ দেবেন না। যদিও, নির্বাচনের পরে হরিয়াণায় দুষ্যন্ত চৌটালার মতো ভূমিকা যদি PK পালন করেন তাহলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। ২০২০-এর হরিয়ানা নির্বাচনে দুষ্যন্ত চৌটালা BJP-এর বিরোধিতায় নির্বাচন লড়েছিলেন কিন্তু সরকারে উপমুখ্যমন্ত্রী হয়ে প্রায় সাড়ে চার বছর মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন।

অন্যদিকে, ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মধু কোড়ার উদাহরণ বিহারে পুরোপুরি প্রযোজ্য নয়। কোড়ার সাফল্য ছোট রাজ্য এবং নির্দলীয় বিধায়কদের সংখ্যার উপর নির্ভর করেছিল, যেখানে বিহারে বড় দলের প্রভাব রয়েছে। তবুও, PK-এর যুবক ভোটার এবং অতি পিছিয়ে পড়া ও দলিত সম্প্রদায়গুলিতে বাড়তে থাকা আবেদন BJP এবং RJD-এর ভোট ব্যাংকে সিঁধ কাটতে পারে।

PK নীতীশ কুমারের JDU-কে ২৫ আসনের কম পাবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন এবং দাবি করেছেন যে নভেম্বর ২০২৫-এর পরে নীতীশ মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন না। যদিও, এটি সম্ভাবনা কম যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন না হলে BJP এবং নীতীশ কুমার PK-কে CM বানাবে। হ্যাঁ PK-কে ডেপুটি CM-এর অফার অবশ্যই করা যেতে পারে। কিন্তু সম্ভবত PK তা মানবেন না। এমন পরিস্থিতিতে PK-এর জোট বিরোধী মনোভাব এবং তার উচ্চাকাঙ্ক্ষা মুখ্যমন্ত্রী পদ পর্যন্ত লক্ষ্য হতে পারে।