২০ হাজার টাকা, এটাই ছিল 'ডিল'...! জম্মু স্টেশনে বড় 'খেলার' প্ল্যানে ছিল RPF, কিস্তিমাৎ দিয়ে দিল ACB, মুহূর্তে যা ঘটল, ছুটল ঘাম..!

ভারতীয় রেল যেন ভারতের ধমনী। এই রেল পরিষেবা গোটা দেশকে একসূত্রে বেঁধে রেখেছে। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষকে গন্তব্যে পৌঁছে দেয় ট্রেন। আর এই ট্রেন ও স্টেশন গুলিতে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ বজায় রাখতে রয়েছে রেলের একাধিক নিয়ম।

রেলপথে ও স্টেশনগুলোতে কোনও রকম বেআইনি কাজ যাতে না হয় সেদিকেও সতর্ক দৃষ্টি থাকে ভারতীয় রেলের। রেলের আধিকারিকরা ছাড়াও প্রতিটি ট্রেন ও স্টেশনে অসামাজিক ও অপরাধমূলক কাজকর্ম ঠেকাতে থাকে রেল পুলিশ অর্থ আরপিএফ।

ট্রেনের কামরায় প্রায়ই বিনা টিকিটের যাত্রীদের ধরপাকড় করতে চলে অভিযান। এছাড়াও টিটি ও টিটিই উভয় পদে থাকা টিকিট পরীক্ষকরাও চালান তল্লাশি। কিন্তু এই এত নিরাপত্তা বলয় ও কঠোর দৃষ্টি সত্ত্বেও এই বিপুল বিরাট পরিষেবা চলাকালীনই ট্রেনের কামরা বা স্টেশনে ঘটে যায় এমন ভয়ঙ্কর কিছু যা হতবাক করে দেয় আমাদের।

সম্প্রতি জম্মু কাশ্মীরের এমনই একটি ঘটনা চোখ খুলে দিয়েছে বাঘা বাঘা রেলকর্তাদেরও। যদিও বিরাট এক ষড়যন্ত্র প্রথম ধাপেই ধরা পরে গিয়েছে রেল পুলিশের চাতুর্যে। তবে এই ঘটনা নিঃসন্দেহে ভারতীয় রেলের জন্য যথেষ্ট লজ্জার।

দুর্নীতি দমন ব্যুরো তথা এসিবি-র পাতা ফাঁদেই ধরা পড়ল এক বিরাট অপরাধ! যে অপরাধে অপরাধী আবার আর কেউ নয়, আইনেরই রক্ষক! ঠিক কী চলছি জম্মু স্টেশনে? শুনলে চোখ কপালে উঠতে বাধ্য।

সবকিছু প্রকাশ্যে আসতে জানা গিয়েছে আরপিএফ-এর এক এএসআই একজন ব্যক্তিকে চুরির মামলা থেকে বাঁচাতে ১ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেছিলেন। শুনে তাজ্জব হয়ে যাচ্ছেন তো? তাহলে পুরোটা শুনুন!

কারণ শুধু টাকা চাওয়াতেই শেষ নয়, ওই আরপিএফ এএসআই ও চুরির অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তির মধ্যে ঘুষের অঙ্ক নিয়ে রীতিমতো দরাদরি চলে ও শেষমেশ ৫০ হাজার টাকায় রফা হয়। চুক্তির প্রথম কিস্তি হিসেবে ২০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ছিল।

তবে ঘুষ দেওয়ার আগেই ওই ব্যক্তি দুর্নীতি দমন ব্যুরোতে যোগাযোগ করে পুরো ঘটনাটি খুলে বলেন। কোনও বিলম্ব না করেই ফাঁদ পাতে এসিবি। অভিযুক্ত এএসআইকে হাতেনাতে গ্রেফতার করতে এরপর আর সময় লাগেনি দুর্নীতি দমন শাখার।

অভিযুক্তদের বাড়ি ও অফিসেও তল্লাশি করা হচ্ছে।এসিবি টিম ফাঁদ পেতে অল্প সময়েই ওই অভিযুক্ত এএসআইকে হাতেনাতে গ্রেফতার করে নিয়েছে। এমনকি অভিযুক্ত এএসআইয়ের কাছ থেকে ঘুষের প্রথম কিস্তির টাকাও উদ্ধার করা হয়েছে।

এরপর স্থানীয় ম্যাজিস্ট্রেট এবং সাক্ষীদের উপস্থিতিতে অভিযুক্ত এএসআই মোহাম্মদ আকরাম চৌধুরীর বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয়। বিষয়টি নিয়ে এখনও তদন্ত চলছে।

এসিবি-র তৎপরতায় ষড়যন্ত্রের প্রথম কিস্তির টাকা করায়ত্ত করার আগেই ধরা পরে যায় ওই অভিযুক্ত এএসআই। প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় সংস্থা যখন এই মামলার তদন্ত শুরু করে, তখন আরও চাঞ্চল্যকর সত্যি প্রকাশ্যে এসে পরে।

জম্মু রেল স্টেশন সম্পর্কিত এই মামলায় গ্রেফতার এএসআই -এর পুরো নাম মহম্মদ আকরাম চৌধুরী। অভিযোগ করা হয়েছে যে আরপিএফের এএসআই মহম্মদ আকরাম চৌধুরী তার অসৎ উদ্দেশ্য পূরণের জন্য এক ব্যক্তির কাছ থেকে ১ লক্ষ টাকা দাবি করেছিলেন।

পরে ৫০ হাজার টাকায় 'ডিল' স্থির হয়েছিল। আর সেই মতো চুক্তির প্রথম কিস্তি হিসাবে ২০ হাজার টাকা আকরামকে দিতে হয়েছিল ওই ব্যক্তিকে। তবে অভিযুক্ত এএসআই তার অসৎ উদ্দেশ্যে সম্পূর্ণ সফল করার আগেই, দুর্নীতি দমন ব্যুরো (এসিবি) পুরো বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পেরে যায় ও দ্রুত পদক্ষেপ করে।