Aditya L1: আর থাকবে না কোনও রহস্য, ‘ভূত’-‘ভবিষ্যত’ সূর্যের নাড়ি-নক্ষত্র জানিয়ে দেবে এই মিশন

ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (ইসরো) দেশের প্রথম মিশন সূর্য আদিত্য এল ১ -র জন্য পুরোপুরি তৈরি।  ২ সেপ্টেম্বরের এই মিশনের জন্য কাউন্টডাউন ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। ইসরোর চেয়ারম্যান এস. আদিত্য-এল ১ মিশন শুরুর আগে সোমনাথ শুক্রবার সুলুরুপেতার শ্রী চেঙ্গালাম্মা পরমেশ্বরী মন্দিরে ঈশ্বর দর্শনে যান৷ সেখানে দেবী মায়ের কাছে মিশনের সাফল্যের জন্য প্রার্থনা করেন। মন্দিরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, সকাল সাড়ে ৭টায় মন্দিরে পৌঁছে প্রার্থনা করেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা৷

আদিত্য-এল 1 মহাকাশযানটি সূর্যের কক্ষপথের দূরবর্তী পর্যবেক্ষণ এবং L1 (সূর্য-আর্থ ল্যাগ্রাঞ্জিয়ান পয়েন্ট) এ সৌর বায়ু অধ্যয়নের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, যা পৃথিবী থেকে প্রায় ১.৫ মিলিয়ন কিলোমিটার দূরে।

উৎক্ষেপণের পর, আদিত্য-এল1 পৃথিবী থেকে প্রায় ১৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরত্বে সূর্যের দিকে যাবে এবং ল্যাগ্রেঞ্জ পয়েন্টে অবস্থান করবে। এরপরে, এটি ৫ বছর ধরে ওই মহাকাশের ওই এলাকার  উপর নজর রাখবে এবং এটি নানাভাবে স্টাডি করার পরে, এটি পৃথিবীতে বিজ্ঞানীদের কাছে ডেটা পাঠাবে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, আদিত্য এল-১ মিশন ভারতের জ্যোতির্পদার্থবিদ্যা (অ্যাস্ট্রোফিজিক্স) এবং সৌর পদার্থবিদ্যার (সোলার ফিজিক্স) ক্ষেত্রকে অনেক দূর এগিয়ে  নিয়ে যাবে।

আদিত্য এল-১ পৃথিবীতে আইস এজের ইতিহাস কী ছিল সে সম্পর্কেও তথ্য সংগ্রহ করবে। এই মিশনটি সৌর কার্যকলাপ বুঝতে সাহায্য করবে এবং পৃথিবীতে এর প্রভাবও জানা যাবে। এর সাহায্যে আমরা জানতে পারব বরফ যুগের কারণ কী এবং ভবিষ্যতে কী কী সম্ভাবনা রয়েছে।

১১ বছরে সূর্যের কিছু পরিবর্তন হয়। এই পরিবর্তনগুলি তার চৌম্বকীয় ক্রিয়াকলাপও ঘটে, যাকে চক্র বলা হয়। এটা বলা হয় যে কখনও কখনও চৌম্বক ক্ষেত্রের এই পরিবর্তনগুলিও আক্রমণাত্মক হয়। এ কারণে সৌরজগতে শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটছে। এখন এই মিশনের সাহায্যে ভারত এই সমস্ত পূর্বের তথ্য অধ্যয়ন করতে সক্ষম হবে।

সূর্যের বাইরে একটি করোনা পৃষ্ঠ রয়েছে এবং সৌরজগতের সমস্ত দিক থেকে শক্তির ব্যাপক মুক্তি পৃথিবীর জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। শুধু তাই নয়, পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করতে পাঠানো স্যাটেলাইটও এই নির্গমনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। করোনাল ম্যাস ইজেকশন (সিএমই) কখন ঘটছে তা আমাদের জানতে হবে এবং এখন এই মিশনের সাহায্যে আমরা তা খুঁজে বের করতে পারব।

এই মিশনের সাহায্যে ইসরো বিজ্ঞানীরা প্রথমবারের মতো সূর্যের চৌম্বক ক্ষেত্রের বিদ্যমান যন্ত্র সম্পর্কে জানতে পারবেন। শুধু তাই নয়, আদিত্য এল১-এর সাহায্যে সূর্য থেকে নির্গত অতিবেগুনি রশ্মির প্রবাহ পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে। এর সাহায্যে সৌর বায়ু বিশ্লেষণ করা যায়।

আদিত্য-এল1 PSLV-C57 রকেটের মাধ্যমে উৎক্ষেপণ করা হবে।

আদিত্য-L1 মিশনের উদ্দেশ্য হল 'L1' এর চারপাশে কক্ষপথ থেকে সূর্যকে অধ্যয়ন করা। বিভিন্ন তরঙ্গ ব্যান্ডে সূর্যের আলোকমণ্ডল, ক্রোমোস্ফিয়ার এবং বাইরেরতম স্তর-পেরিফেরি পর্যবেক্ষণ করার জন্য এতে সাতটি যন্ত্র থাকবে।

ISRO প্রধান বলেছেন যে আদিত্য মিশন শনিবার রাত ১১.৫০ টায় চালু হবে। তিনি বলেছিলেন যে এই মিশনের উদ্দেশ্য সূর্য অধ্যয়ন করা। তিনি বলেছিলেন যে সান অবজারভেটরি মিশনের পরে, মহাকাশ সংস্থা আগামী দিনে এলভি-ডি3 এবং পিএসএলভি সহ আরও বেশ কয়েকটি উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করবে। চন্দ্রযান-৩ মিশন সম্পর্কে  বলেন, সব কিছু ঠিক আছে এবং কাজ চলছে।