কার্বাইডে পাকা আম খেলেই সর্বনাশ...! চিনবেন কী করে 'আসল' না 'নকল'? গাছ পাকা আম চেনার সহজ নিয়ম জানুন, ঠকতে হবে না আর!

গ্রীষ্মকাল মানেই যেমন প্যাঁচপ্যাঁচে গরম। আঠালো চিটচিটে ঘামে ভেজা রাতদিন, ঠিক তেমনই এই গ্রীষ্মকালেই আছে হরেক ফলের মজা। কারণ গরম এলেই তার পিছু পিছু আসে পাকা আম, জাম, কাঁঠাল, লিচুর সময়। আর আম তো আবার ফলের রাজা।

কিন্তু দ্রুত ও অধিক সংখ্যক পাকা আম বাজারজাত করতে অসাধু ব্যবসায়ীরা একটি পদ্ধতি ব্যবহার করেন যা নিয়ে ইতিমধ্যেই বার বার সতর্ক করছে প্রশাসন। সম্প্রতি এই নিয়ে বিশেষ সতর্কতা জারি করল কেন্দ্র।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের অধীনস্থ FSSAI তথা ‘ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথোরিটি অফ ইন্ডিয়া’ জানিয়েছে ক্যালশিয়াম কার্বাইড গ্যাসের সাহায্যে আম পাকানোর বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। ২০১১ সালেই নিষিদ্ধ হয়েছিল আম পাকাতে এই গ্যাসের ব্যবহার।

বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এই বিষয়ে ফের আম ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত সকলকেই সতর্ক করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের খাদ্য নিয়ামক দফতরগুলিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই ধরনের বেআইনি কার্যকলাপে যুক্ত থাকলেই কড়া পদক্ষেপ করার কথাও বলা হয়েছে।

বাজারে গেলেই যে পাকা আম আজকাল দেখতে পাওয়া যায় তার অনেকটাই কিন্তু কার্বাইডে পাকানো আম। জানেন এই আমের থেকে আসল গাছপাকা আমের তফাত কোথায়? কী করে বোঝা যায় কোনটা গাছপাকা আর কোনটা কার্বাইড পাকানো? মরশুম শুরুর মুখে অবশ্যই জেনে নেওয়া জরুরি।

কিন্তু কী ভাবে আম মধ্যবিত্ত বাঙালি চিনবেন বাজারে গিয়ে কোন আম আসল পাকা আর কোনটি ক্যালসিয়াম কার্বাইড দিয়ে পাকানো? এক্ষেত্রে কিন্তু কিছু সহজ পদ্ধতি আছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক এই প্রতিবেদনে।

১) স্বাদ - কার্বাইডে পাকা আমের স্বাদ তেমন মিষ্টি হবে না। কিছুটা জোলো প্রকৃতির হয় এই আম। কিন্তু গাছপাকা আম তেমন হয় না। গাছ পাকা আম স্বাদের দিক থেকেও অতুলনীয় হবে। আসল স্বাদ দুই ধরনের আম খেলেই বোঝা সম্ভব।

২) গায়ে দাগ - রাসায়নিক প্রয়োগের কারণে আমের গায়ে কালো দাগ পরে যেতে পারে। এই দাগ দিয়ে কার্বাইড পাকা আম চেনা সম্ভব। কার্বাইডে পাকানো আমের মধ্যে এই দাগ থাকে। কিন্তু গাছপাকা আমের গায়ে এমন দাগ থাকার সম্ভাবনা নেই। অল্পবিস্তর যা দাগ থাকে তা আমের নিজস্ব বা পড়ে যাওয়ার কারণে তৈরি হওয়া।

৩) আমের ত্বক - আমটি গাছ পাকা না কার্বাইডে পাকানো আমের ত্বক দেখলেও বোঝা যায়। সাধারণত কার্বাইড এর পাকা আমের ত্বক অনেকটাই নরম এবং কুঁচকানো হয় কিন্তু গাছ পাকা আমের ক্ষেত্রে তেমনটা হয় না বরং টানটান থাকে।

৪) ত্বকের বর্ণ - কার্বাইডে পাকানো আমের ত্বক সাধারণত পুরোপুরি হলুদ বা কমলা রঙের হয়। গাছ পাকা আমের গায়ের রং কিন্তু হলুদ বা কমলা রঙের হবে না। এটি একেবারে প্রাকৃতিক আমের রং এর মতোই হবে। যা দেখলেই চেনা যায় এছাড়াও কার্বাইডের পাকানো আমের ত্বকটি কিছুটা চকচক করে যা রাসায়নিক প্রয়োগের কারণেই হয়ে থাকে।

৫) আমের গন্ধ - কার্বাইডে পাকানো আমে সাধারণত গন্ধ পাওয়া যায় না। অথচ আমটি দেখতে পাকা আমের মতো হয়। অথচ পাকা আমের সুমিষ্ট গন্ধ একমাত্র গাছপাকা আমেই পাওয়া সম্ভব। তাই আমের গন্ধ দিয়ে কার্বাইডের পাকানো আমের সঙ্গে গাছপাকা আমের তফাৎ করা সহজ।

ডিসক্লেইমার: লেখায় উল্লেখিত দাবি বা পদ্ধতি পরামর্শস্বরূপ। এটি মেনে চলার আগে অবশ্যই সরাসরি বিশেষজ্ঞ/চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। নিউজ 18 বাংলা এই মতামতের দায় নেয় না। এই পরামর্শ সাধারণ জ্ঞান থেকে উপলব্ধ। এই বিষয়ে নিশ্চিত জানতে অবশ্যই ফল বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।