Liver Cancer Prevention Tips: তরুণদের এই এক খারাপ অভ্যাসেই হতে পারে সবচেয়ে বড় বিপদ! মাত্র ২০ বছর বয়সেই 'শেষ' হয়ে যাবে লিভার...

দেশজুড়ে লিভার ক্যানসারের ঘটনা ক্রমশ উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। পূর্বে মনে করা হত এটি শুধুমাত্র ৪০ বা ৫০ বছরের পরের রোগ। কিন্তু বর্তমান চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। ২০ বছর বয়সেই অনেকে লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ক্যানসার মূলত একটি নীরব রোগ। প্রাথমিকভাবে উপসর্গ খুব কম দেখা যায় বা একেবারেই ধরা পড়ে না। যখন রোগ প্রকট হয়, তখন চিকিৎসা কঠিন হয়ে ওঠে। ফলে অল্প বয়সেই নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা ও সঠিক ডায়েট অপরিহার্য।

গোকুলাম হাসপাতাল, তিরুবনন্তপুরমের সিনিয়র কনসালট্যান্ট গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট ডাঃ প্রবীণ কেশব বলেন, “বর্তমানে লিভার ক্যানসারের সবচেয়ে বড় কারণ হল নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (NAFLD)। ভারতে প্রতি চারজনে একজন এই সমস্যায় ভুগছেন। এটি যদি অগ্রাহ্য করা হয়, ভবিষ্যতে ক্যানসারে পরিণত হতে পারে।”

তিনি আরও যোগ করেন, “আজকের তরুণ প্রজন্ম অল্প বয়স থেকেই অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড, মদ্যপান, ও ব্যায়ামের অভাবে আক্রান্ত হচ্ছে ফ্যাটি লিভার ডিজিজে। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনই মূলত এই রোগের ভিত্তি তৈরি করছে।”

AIG হাসপাতাল, হায়দরাবাদের ইন্টারভেনশনাল রেডিওলজিস্ট ডাঃ জিগনেশ রেড্ডির মতে, “লিভার ক্যানসার বেড়ে যাওয়ার পেছনে প্রসেসড ফুডের ভূমিকা বিরাট। তরুণরা আজকাল ময়দা, তেল, চিপস, ফ্রোজেন ফুড, কোল্ড ড্রিংকস, এবং প্যাকেটজাত খাবার নিয়মিত খাচ্ছেন। এসব খাবার ধীরে ধীরে লিভারকে অকেজো করে দেয়।”

তিনি আরও বলেন, “দক্ষিণ ভারতে প্রসেসড চাল ও ফ্রুক্টোজযুক্ত খাদ্য বেশি ব্যবহৃত হয়। তার সাথে আর্দ্র আবহাওয়া মিলে মেটাবলিক লিভার ডিজিজ তৈরি করে যা ভবিষ্যতে ক্যানসারে পরিণত হয়।”

চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, রিফাইন্ড তেল, ময়দা, কেক, পেস্ট্রি, স্ন্যাক্স, মদ—এইসব খাবারই ধীরে ধীরে লিভারের কোষ ধ্বংস করে দেয়। এর ফলে লিভারের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা হ্রাস পায় এবং লিভার সেরে ওঠার ক্ষমতাও কমে যায়।

নিউ দিল্লির আপোলো হাসপাতালের লিভার বিশেষজ্ঞ ডাঃ রচনা তিওয়ারি বলেন, “আজকের দিনে টিনএজারদের মধ্যেও ফ্যাটি লিভারের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। মূলত রাতজাগা, জাঙ্ক ফুড, ও ডিহাইড্রেশন এর জন্য দায়ী। সময়মতো চিকিৎসা না নিলে এটি ভবিষ্যতে ক্যানসারে রূপ নিতে পারে।”

চিকিৎসকেরা পরামর্শ দিচ্ছেন, প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা, পর্যাপ্ত জলপান, ঘরে তৈরি খাবার, ও ট্রান্স ফ্যাটমুক্ত খাদ্যই লিভার ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করবে। সেই সঙ্গে বছরে একবার লিভার ফাংশন টেস্ট (LFT) করিয়ে নেওয়া বাঞ্ছনীয়।

সতর্কতা ও সঠিক সচেতনতা ছাড়া এই বিপদ ঠেকানো কঠিন। তরুণ প্রজন্মকে এখন থেকেই সুস্থ জীবনযাপন শুরু করতে হবে। কারণ, ক্যানসার বয়স দেখে হয় না—যা এখন প্রমাণিত।

Disclaimer: এই খবরের মধ্যে দেওয়া ওষুধ/স্বাস্থ্য সম্পর্কিত পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রাপ্ত। এটি সাধারণ তথ্য এবং ব্যক্তিগত পরামর্শ নয়। তাই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনও কিছু ব্যবহার না করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। নিউজ18 বাংলা কোনও ব্যবহারে ক্ষতির জন্য দায়ী থাকবে না।