Arthritis: গাঁটের ব্যথা ভেবে অবহেলা করছেন? আসলে কী হতে পারে জানেন, বিশেষজ্ঞ যা জানালেন...
- Written by:Trending Desk
- trending desk
- Edited by:Sanchari Kar
Last Updated:
Arthritis: ঠিক ডায়াবেটিসের মতোই আর্থ্রাইটিসকে ভাল ভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যেতে পারে। এক্ষেত্রে সঠিক নিয়ন্ত্রণ এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনই মূল চাবিকাঠি।
আর্থ্রাইটিসের কথা শুনলেই মানুষের মনে যেন একটা আতঙ্ক কাজ করে। তাঁরা ভাবেন যে, এটা এমন একটা ক্ষয়রোগ, যার কোনও নিরাময় নেই। ফলে রোগী আশাহীনতায় ভুগতে শুরু করেন। যদিও বিষয়টা একেবারেই তেমন নয়। এই কথা জানাচ্ছেন কলকাতার সিএমআরআই-এর ডিপার্টমেন্ট অফ রিউম্যাটোলজি অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল ইমিউনোলজির কনসালট্যান্ট ডা. সৌনক ঘোষ।
advertisement
আর্থ্রাইটিসে গাঁটে ব্যথা হয় এবং গাঁট বা জয়েন্ট ফুলে যেতে থাকে। আর্থ্রাইটিস কয়েক ধরনের হয়। আর সব আথ্রাইটিস কিন্তু অটোইমিউন রোগের কারণে হয়, এমনটা নয়। অনেকেই হয়তো বয়স্ক আত্মীয়দের হাঁটু ব্যথার কথা শুনে থাকবেন। যার ফলে তাঁরা হয়তো হাঁটাচলা কিংবা সিঁড়ি ভাঙতে সমস্যার সম্মুখীন হন। এর পিছনে থাকা মূল কারণ হল অস্টিওআর্থ্রাইটিস। ইনফ্লেমেটরি আর্থ্রাইটিক রোগের তুলনায় এটা প্রকৃতিগত দিক থেকে বেশ মেকানিক্যাল। সাধারণ ধরনের ইনফ্লেমেটরি আর্থ্রাইটিসের মধ্যে অন্যতম হল রিউম্যাটয়েড আথ্রাইটিস। যা সাধারণত সন্তান জন্মানোর বয়সী মহিলাদের প্রভাবিত করে।
advertisement
রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস (আরএ) হল একটি অটোইমিউন রোগ। যা গোটা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষকে আক্রমণ করে। এটা নিছক জয়েন্টের ব্যথা নয়, বরং একটি ক্রনিক অবস্থা। যেখানে দেহের ইমিউন সিস্টেম ভুলবশত দেহের জয়েন্ট বা গাঁটগুলিকেই আক্রমণ করে বসে। এর ফলে ইনফ্লেমেশন বা প্রদাহ, যন্ত্রণা এবং জয়েন্টের ক্ষতি হতে পারে। রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস প্রাথমিক ভাবে ছোট ছোট জয়েন্টগুলিকে আক্রমণ করে। তবে ধীরে ধীরে বড় জয়েন্টগুলিতেও তা ছড়িয়ে পড়ে। এর জেরে কখনও কখনও মর্নিং স্টিফনেস, অবসন্ন ভাব বা ক্লান্তি এবং পেশি দুর্বলতা দেখা দিতে পারে।
advertisement
রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস শুধুমাত্র একটা জয়েন্টের রোগ নয়। জয়েন্টে ব্যথা এবং ফুলে যাওয়ার বিষয়ে রোগী সাধারণ ভাবে অভিযোগ করেন। তবে অনেক সময় চোখের শুষ্কতা, স্কিন র্যাশ এমনকী সময়ে চিকিৎসা না হলে ফুসফুসের সমস্যা পর্যন্ত হতে পারে। তবে ভাল বিষয় হল, আজকালকার দিনে রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসের চিকিৎসার একাধিক বিকল্প পাওয়া যায়। যদি রোগ দ্রুত ধরা পড়ে, তাহলে রোগীর স্বাভাবিক জীবনযাপনের সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। রোগ নির্ণয়ের জন্য রয়েছে নির্দিষ্ট কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা। তবে একজন রিউম্যাটোলজিস্ট সঠিক ভাবে পরীক্ষা করেই ব্যথার কারণ কিংবা রোগ নির্ণয় করতে পারেন।
advertisement
আর আশ্চর্যজনক ভাবে, মহিলাদের ক্ষেত্রেই এই রোগ সাধারণত দেখা যায়। গর্ভবতী মহিলা কিংবা হবু মায়েরা তার ব্যতিক্রম নন। আবার মহিলাদের জন্য কিন্তু প্রেগনেন্সি হল একটা আশীর্বাদ। তবে এই সময় নির্দিষ্ট হরমোন এবং কোষ বিভিন্ন ক্ষেত্রেই আর্থ্রাইটিস নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। কিন্তু সন্তান প্রসবের পরে সেই রোগ আবার চাগাড় দিয়ে উঠতে পারে। প্রেগনেন্সিতে নিরাপদে ব্যবহার করার জন্য নির্দিষ্ট কিছু অ্যান্টি-রিউম্যাটিক ওষুধ রয়েছে। তবে রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত হবু মায়েদের নজরদারিতে রাখা আবশ্যক।
advertisement
ধরা যাক, এমন কাউকে চেনেন যাঁর গাঁটে ব্যথা এবং ফোলা গাঁটের সমস্যা আছে। সেই ব্যথা হয়তো সকালের দিকে এতটাই খারাপ আকার ধারণ করে যে, রোগী নড়াচড়া পর্যন্ত করতে পারেন না। তাহলে বুঝতে হবে যে এটা আর্থ্রাইটিসের কারণেই হচ্ছে। ঠিক ডায়াবেটিসের মতোই এই রোগকে ভাল ভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যেতে পারে। এক্ষেত্রে সঠিক নিয়ন্ত্রণ এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনই মূল চাবিকাঠি।
advertisement
এই রোগের যদিও সঠিক কারণ এখনও অধরা। তবে জিনগত এবং পরিবেশগত কারণ এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসের কোনও উপশম নেই, কিন্তু প্রথমেই ধরা পড়লে উপসর্গগুলিকে দমন করা যাবে। আর রোগের অগ্রগতিও রুখে দেওয়া সম্ভব। ওষুধ, ফিজিক্যাল থেরাপি এবং লাইফস্টাইল মডিফিকেশনের মাধ্যমে রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস নিয়ন্ত্রণ করে রোগীর জীবনের মান উন্নত করা সম্ভব। আর রোগের জটিলতা এড়াতে শিক্ষা এবং সচেতনতাও অত্যন্ত জরুরি।