যাতায়াতের পথে খবরের কাগজে মোড়া খাবার খাচ্ছেন? জানেন নিজের শরীরের কত বড় ক্ষতি করছেন ?

শনিবারের চিঠি পত্রিকা এবং তার সম্পাদক সজনীকান্ত দাসকে নিয়ে একটা কাহিনী বেশ প্রচলিত। একদা ট্রেনে সফরের সময়ে দাস দেখেন যে এক মা ছেলের কুকর্ম সাফ করছেন ট্রেনের সিট থেকে শনিবারের চিঠির একটা পাতা ছিঁড়ে।

সজনীকান্ত একটুও বিচলিত না হয়ে আত্মপরিচয় দেন এবং জানান যে তাঁর সম্পাদিত পত্রিকা এভাবে সমাজের আবর্জনা সাফ করার কাজে আসছে দেখে তিনি যারপরনাই খুশি।

এ কাহিনীর সত্য-মিথ্যা নির্ণয় কঠিন। তবে, খবরের কাগজ যে শুধুই খবর পেশ করার কাজে আসে না, তা আমরা কে না জানি! ওর পাতা ছিঁড়ে তৈরি হয় ঠোঙা, তাতে করে কত খাবার জিনিস, সবজি বাড়িতে নিয়ে আসি আমরা। ঝালমুড়ি খাই খবরের কাগজ থেকে তৈরি ঠোঙায়।

দোকান থেকে সিঙাড়া, জিলিপি, আলুর চপ, কচুরির মতো কত-শত খাবার বাড়িতে নিয়ে আসতে এই খবরের কাগজের ঠোঙাই ভরসা। রাস্তায় দাঁড়িয়ে গরম গরম তেলেভাজা বা ডিম-পাঁউরুটি খেতে গেলে সেও তো খবরের কাগজের মাপমতো ছিঁড়ে রাখা পাতাতেই ক্রেতার হাতে তুলে দেন দোকানিরা।

বছর কয়েক আগেও অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলের বদলে রুটি মুড়ে দেওয়া হত খবরের কাগজের পাতায়।

ফলে, ভ্রমণের সময়ে বা দোকানে কিছু খাওয়ার সময় প্লেট হিসেবে সংবাদপত্রের ব্যবহার আমাদের কাছে নতুন কিছু নয়। তবে চিকিৎসকরা এমন ভাবে খবরের কাগজে যাঁরা খেয়ে থাকেন, তাঁদের সাবধান থাকতে বলছেন। চিকিৎসকদের মতে এতে স্বাস্থ্যের উপর ব্যাপক প্রভাব পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে, এর অসুবিধা সম্পর্কে আমাদের সম্পূর্ণ তথ্য জানা গুরুত্বপূর্ণ।

ডা. শ্রেয়াস পিটালিয়া জানিয়েছেন, অনেকেই খবরের কাগজে করে খাবার খান, যা স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই ক্ষতিকারক। আসলে যখনই খবরের কাগজে গরম খাবার রাখা হয়, গরম থাকার কারণে কাগজের কালি গলে গিয়ে লেগে যায়। এটি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর।

কারণ সংবাদপত্রের কালিতে রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়, যাতে ডাই আইসোপ্রোপাইল ফ্যাথালেট, ডায়েন আইসোপ্রোপিলেটের মতো নানা রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করা হয়। এর থেকে ক্যানসারের মতো মারাত্মক রোগও হতে পারে। এছাড়াও এটি শিশুদের বুদ্ধিবৃত্তির বিকাশকেও হ্রাস করে। তাই অতিরিক্ত গরম খাবার একেবারেই খবরের কাগজে রেখে খাওয়া উচিত নয়।