তৃণমূল নেতাদের সম্পত্তি: ‘‘দল সবটাই নজর রাখছে, দলই সিদ্ধান্ত জানাবে’’- সম্পত্তি বৃদ্ধি নিয়ে বড় বয়ান
- Published by:Debalina Datta
- news18 bangla
Last Updated:
আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল বলছেন নেতারা৷ তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদের সম্পত্তির পরিমাণ নিয়ে সরাসরি বয়ান দিলেন জ্যেতিপ্রিয় মল্লিক ও স্বর্ণকমল সাহারা৷
#কলকাতা: বাংলার ১৯ নেতা-মন্ত্রীদের সম্পত্তি কী ভাবে বাড়ছে, তা এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট খতিয়ে দেখুক, এমনই আর্জি জানানো হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। সেই মামলায় সোমবার ইডিকেও জুড়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এই ঘটনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া রাজনৈতিক মহলে৷ যাদের সম্পত্তি তদন্ত প্রক্রিয়ার মধ্যে আসতে চলেছে তারা অনেকেই বলেছেন এটা হল রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। অনেকেই আবার বলছেন, আইন আইনের পথেই চলবে।
advertisement
প্রসঙ্গত, কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে এই আর্জি জানিয়েছিলেন আইনজীবী শামিম আহমেদ। হাইকোর্টে তিনি ১৯ জন নেতা-মন্ত্রীর একটি তালিকা-সহ তাঁদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির হিসেব দিয়ে বলেছিলেন, ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত এই নেতা-মন্ত্রীদের সম্পত্তি বিপুল পরিমাণে বেড়েছে।যাঁদের নাম রয়েছে তাঁরা সকলেই ২০১১ ও ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে লড়েছেন। অনেকেই আবার ২০২১ সালের নির্বাচনে লড়াই করে জিতেছেন। নির্বাচনের সময়ে কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামায় নিজেদের সম্পত্তি ও দায়ের হিসাব জমা দেন। সেখান থেকেই দেখা যাচ্ছে কার সম্পদ কতটা বেড়েছে।কলকাতা বন্দরের বিধায়ক ফিরহাদ হাকিমের সম্পত্তি ২০১১ সালে ছিল ৩ কোটি ৭৭ লক্ষ ৮০ হাজার ৮৮ টাকা। দেনা ছিল ৫৪ লক্ষ ১ হাজার টাকা।
advertisement
পাঁচ বছর পরে ফিরহাদের সম্পত্তি হয় ৬ কোটি ৫ লক্ষ ১৬ হাজার ২৬১ টাকা। দেনা ছিল ৫৩ লক্ষ ৯৯ হাজার টাকা। দমদমের তৃণমূল বিধায়ক ব্রাত্য বসুর ২০১১ সালে মোট সম্পত্তি ছিল ৭৩ লাখ ৯ হাজার ৮০১ টাকা। দেনা ছিল ৪ লক্ষ ৭৩ হাজার ৯১৬ টাকা। পাঁচ বছর পরে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে ব্রাত্যর মোট সম্পত্তি ছিল ১ কোটি ৯৫ লক্ষ ২৯ হাজার ১৭৭ টাকা। কোনও দেনা ছিল না। আসানসোল উত্তরের তৃণমূল বিধায়ক মলয় ঘটকের ২০১১ সালে মোট সম্পত্তি ছিল ৬১ লক্ষ ৬৪ হাজার ২৯৫ টাকা। দেনা ছিল ১৪ লক্ষ ৭৮ হাজার ৩১৪ টাকা ২৮ পয়সা। পাঁচ বছর পরে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে মলয়ের মোট সম্পত্তি ছিল ৮৮ লক্ষ ৯ হাজার ৫৩৫ টাকা। দেনা ছিল ২২ লক্ষ ৯৪ হাজার ৪৩১ টাকা।
advertisement
২০১১ সালে হলদিয়া আসন থেকে লড়ার সময়ে তৃণমূল বিধায়ক শিউলি সাহা জানিয়েছিলেন, তাঁর মোট সম্পত্তি ৭৪ লক্ষ ১৮ হাজার ৮৪৯ টাকার।২০১৬ সালে শিউলি লড়েন পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুর আসন থেকে। তখন সম্পত্তি ছিল ১ কোটি ৮৮ লক্ষ ৬৬ হাজার ২৪৩ টাকার। দেনা ছিল ২ লক্ষ ৭৪ হাজার টাকা।রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র ২০১১ সালে জানান, মোট সম্পত্তি ৭ কোটি ৮ লক্ষ ৭৬ হাজার ৩১৬ টাকা। দেনা নেই। খড়দহ আসন থেকে ২০১৬ সালেও জেতেন তিনি। তখন জানান, সম্পত্তি ১১ কোটি ৭৪ লক্ষ ৮১ হাজার ৫৫৫ টাকা। দেনা নেই।
advertisement
২০১১ সালে হাবরার বিধায়ক হওয়ার সময়ে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের মোট সম্পত্তি ছিল ৮০ লক্ষ ২৬ হাজার ৪৪৪ টাকার। দেনা ছিল ৩ লক্ষ ৬ হাজার ৩৬৩ টাকা। পাঁচ বছর পরে ২০১৬ সালে রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় যে হলফনামা জমা দেন তাতে জানান, মোট সম্পত্তি ১ কোটি ৫১ লক্ষ ৩ হাজার ৮৭ টাকা। রাজ্যের বন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানিয়েছেন, ২০১৬ সালে নির্বাচনের সময় হিসাব জমা দেওয়া হয়েছে। আদালত সেটা দেখুক। তবে দলের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলব। দল দেখবে সবটাই। কোথায় প্রতিহিংসার রাজনীতি চলছে দল সেটা দেখবে। তবে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। দল সবটা তাই দেখবে।
advertisement
এন্টালির তৃণমূল বিধায়ক স্বর্ণকমল সাহা ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে হলফনামায় জানান তাঁর মোট সম্পত্তি ২ কোটি ৫৫ লক্ষ ৮৩ হাজার ৮৪ টাকা। স্বর্ণকমল সাহা ২০১৬ সালে জানান, তাঁর মোট সম্পত্তি ৬ কোটি ৬৯ লক্ষ ৩৫ হাজার ৪৩৫ টাকা। দেনা নেই। তিনি জানিয়েছেন, এটা আইনের ব্যাপার। আইনজীবীদের সাথে কথা বলছি৷ দলগত ভাবেও দেখা হচ্ছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার একটা দিকও আছে। শুধু তৃণমূলের দিকেই আঙুল তোলা হয়েছে। দেখা যাক কি দাঁড়ায় গোটা বিষয়টি।