১৭ ঘণ্টা পর অবশেষে নিয়ন্ত্রণে এসেছে ট্যাংরার ভয়াবহ আগুন(Fire at Tangra)। কিন্তু কীভাবে ঘটল এই বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড (Kolkata Fire), তা জানতে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি(Highpower Investigation Committee) গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(CM Mamata Banerjee)। ছবি ও প্রতিবেদন : উজ্জ্বল রায়
তবে ট্যাংরার এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল এই শহরের বুকে পুকুর বা জলাশয়ের প্রয়োজনীয়তা কতটা। কারণ যে গুদামে আগুন লেগেছে, তার সংলগ্ন ভবাপাগলা সরণির একটি পুকুর থেকে শনিবার রাত থেকে লাগাতার জল তুলেছে দমকল (Kolkata Fire)। স্থানীয় বাসিন্দারা সাহায্য করেছে দমকলকে সেই পুকুর চিহ্নিত করতে ও জল তুলতে।
উদ্ধারকার্য চলে টানা প্রায় ১৬-১৭ ঘণ্টা। উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন পাম্প লাগিয়ে জল তোলা চলে নিকটস্থ ওই জলাশয় থেকে। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, আগুন যেভাবে ভয়াবহ চেহারা ধারণ করছিল, তাতে এই পুকুর থেকে জল না দিলে আগুন আরও ছড়িয়ে পড়ত। দমকলেরও বক্তব্য, প্রথমে একসঙ্গে এত জলের চাহিদা মেটানোর জন্য পুকুর ও খালের জল সাহায্য করেছে। ছবি ও প্রতিবেদন : উজ্জ্বল রায়
প্রসঙ্গত, স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, বাম আমলে এই পুকুর ভরাট করার চেষ্টা হয়েছিল। তখন স্থানীয়রা রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁরা বুঝেছিলেন এলাকায় পুকুরের প্রয়োজনীয়তা কতটা। তারপর থেকে একাধিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় জলের যোগান দিয়েছে এই পুকুর। শনিবারের অগ্নিকাণ্ডেও ত্রাতার ভূমিকায় ভবপাগলা সরণির এই পুকুর। ছবি ও প্রতিবেদন : উজ্জ্বল রায়
উল্লেখ্য, শনিবার সন্ধ্যায় ট্যাংরা (Tangra Fire)থানার মেহের আলি রোডের চামড়া, কাপড়-সহ সহজদাহ্য বিভিন্ন জিনিসের কারখানায় আগুন লেগে যায়। সেখানে বড় মাপের গুদামও ছিল। আগুন প্রথম ছড়ায় সেই গুদামে। পরে তা গোটা কারখানাকে গ্রাস করে। আগুনের তীব্রতা এতটাই ছিল যে তা নিয়ন্ত্রণে আনতে দমকল কর্মীদের যথেষ্ট বেগ (Kolkata Fire) পেতে হয়। ছবি ও প্রতিবেদন : উজ্জ্বল রায়
সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে খালি করে দেওয়া হয় গুদামের আশপাশের বস্তি এলাকা। রাত ১২টাতেও আগুন (Tangra Fire)পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। দমকলের ২০টি ইঞ্জিন সেই চেষ্টা চালিয়ে যায়। দমকলের তিনজন কর্মী আগুন নেভাতে গিয়ে আহত হন। জল নেওয়া হয় পাশের খাল থেকেও (Kolkata Fire)। ছবি ও প্রতিবেদন : উজ্জ্বল রায়
স্থানীয় সূত্রের খবর, গুদাম সংলগ্ন কারখানায় চামড়া, ফোম, কাপড় এবং রেক্সিনের মতো দাহ্য সামগ্রী দিয়ে বিভিন্ন পণ্য তৈরি হতো। মূলত কাঁচামাল মজুত রাখা হত ওই গুদামে। সেই কাঁচামালের মধ্যে রাসায়নিক সামগ্রীও ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, খুব কম সময়ের মধ্যে গোটা কারখানা ভস্মীভূত হয়ে যায়। আগুনের দাপটে কারখানার টিনের চাল পুরোপুরি ভেঙে পড়ে। তবে কারখানার দেওয়াল শক্তপোক্ত হওয়ায় অগ্নিকাণ্ডের ঘন্টা তিনেক পরও সংলগ্ন বস্তি রক্ষা পায়। ছবি ও প্রতিবেদন : উজ্জ্বল রায়
কারখানার পাশের মসজিদের ছাদে উঠেও আগুন নেভানোর চেষ্টা চলে। লাগোয়া কয়েকটি বাড়ি আগুনের গ্রাসে গেলেও কেউ হতাহত হয়নি। ঘিঞ্জি অঞ্চলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে দমকল কর্মীদের। কারখানার চারদিক থেকে তাঁরা আগুন আয়ত্তে আনার চেষ্টা করেন। এলাকার কিছু মানুষ অবশ্য দমকল দেরিতে আসার অভিযোগে সরব হন। দমকলের তরফে যা অস্বীকার করা হয়েছে। ছবি ও প্রতিবেদন : উজ্জ্বল রায়
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলার জীবন সাহা। তিনি বলেন, আশপাশের বাসিন্দাদের ঘর থেকে বের করে অন্যত্র রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাঁদের জন্য কমিউনিটি কিচেন চালু করা হয়েছে। এদিকে ওই কারখানার ভিতরে কোনও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না বলেই দমকল সূত্রে খবর। এই বিষয়গুলি খতিয়ে দেখে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান মন্ত্রী। আগুন নেভাতে ব্যস্ত দমকল।