Trump Asim Munir Meeting Explainer: পাক প্রধানমন্ত্রীকে টপকে সেনাপ্রধান আসিম মুনির সঙ্গে মাখো মাখো সম্পর্ক ট্রাম্পের! দুই মাসে দু’বার মার্কিন সফর! ভারতের জন্য এ কোন ইঙ্গিত? জানুন...
- Published by:Sounak Chakraborty
- news18 bangla
Last Updated:
Trump Asim Munir Meeting Explainer: পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে ট্রাম্প দুই মাসে দু’বার ডেকেছেন। প্রধানমন্ত্রীকে উপেক্ষা করে এই বৈঠকের নেপথ্যে রয়েছে চিন–আমেরিকা সম্পর্ক, মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা ও নতুন ভূরাজনৈতিক সমীকরণ, যা ভারতের জন্য কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে, বিস্তারিত জানুন...
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান মাত্র দুই মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন। এই ঘনঘন বৈঠক নানা জল্পনা ও প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। প্রথমত, আমেরিকা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকে উপেক্ষা করে সরাসরি সেনাপ্রধানের সঙ্গে আলোচনা করছে। দ্বিতীয়ত, এর মাধ্যমে ট্রাম্প আসলে কী বার্তা দিতে চাইছেন—ভারতের উদ্দেশ্যে কোনও সিগন্যাল, নাকি মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের সঙ্গে উত্তেজনা পরিস্থিতিতে পাকিস্তানকে নিজের পক্ষে রাখতে চাইছেন।
advertisement
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বৈঠক একটি নতুন ভূরাজনৈতিক সমীকরণের ইঙ্গিত দেয়, যেখানে আমেরিকা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক গড়ে তুলছে মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য। যদি ইরানে আবার হামলা হয়, তাহলে পাকিস্তানকে যেন একটি ইসলামি দেশ হওয়া সত্ত্বেও নিরপেক্ষ থাকতে বলা যায়। তবে ফাইনান্সিয়াল টাইমস-এর মতে, এই সম্পর্ক বাইরে থেকে যতই ঝকঝকে লাগুক, এটি ঝুঁকিপূর্ণ চুক্তি হতে পারে।
advertisement
ভারতের জন্য এই পরিস্থিতি একটি ধাক্কা। সন্ত্রাসবাদের ইস্যুতে পাকিস্তানকে বিশ্ব মঞ্চে এক্সপোজ করার জন্য ভারত দীর্ঘদিন ধরে যে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়েছিল, তা এই সম্পর্কের কারণে ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। এমন মনে হচ্ছে, আমেরিকা পাকিস্তানের সঙ্গে পুরনো ঘনিষ্ঠ নীতিতে ফিরে যাচ্ছে। কংগ্রেস এবং ভারতের প্রতিরক্ষা সচিব এটিকে তাদের কূটনীতির জন্য “গুরুতর ধাক্কা” বলে বর্ণনা করেছেন।
advertisement
প্রশ্ন—পাকিস্তান কি এখন চিন ও আমেরিকা দুই দিকই সামলাতে চাইছে? —হ্যাঁ, সেটাই স্পষ্ট। ট্রাম্প সম্প্রতি ভারতের প্রতি একের পর এক কূটনৈতিক ধাক্কা দিয়েছেন, অথচ পাকিস্তানকে প্রশ্রয় দিয়েছেন। পাকিস্তানও চিনকে পাশে রাখছে। আমেরিকা যাওয়ার আগে মুনির বেইজিংয়ে চিনের তৎকালীন উপ-রাষ্ট্রপতি হান ঝেং ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন, যেখানে তাঁকে “চিনের বিশ্বস্ত অংশীদার” বলা হয়েছে। চিন স্পষ্ট জানিয়েছে, পাকিস্তান তাদের অগ্রাধিকারে থাকবে। উভয় দেশ যৌথ সামরিক মহড়া, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা ও প্রতিরক্ষা আধুনিকীকরণে সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে সম্মত হয়েছে। পাকিস্তান চিনের সবচেয়ে বড় অস্ত্র ক্রেতা, গত পাঁচ বছরে তার প্রায় ৮১% অস্ত্র আমদানি চিন থেকেই হয়েছে।
advertisement
প্রশ্ন—পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে উপেক্ষা করে কেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বারবার সেনাপ্রধান মুনিরকে ডাকছেন? —যদিও শাহবাজ শরিফ আনুষ্ঠানিকভাবে দেশের নেতা, বাস্তব কৌশলগত ও রাজনৈতিক ক্ষমতা এখন সেনাপ্রধানের হাতে কেন্দ্রীভূত। তাঁর ফিল্ড মার্শাল পদে উন্নীত হওয়া তাঁর শক্তি বৃদ্ধির প্রমাণ। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি সামরিক শাসনের প্রথম ধাপ, যেখানে সেনাবাহিনী সরাসরি ক্ষমতায় হস্তক্ষেপ করছে এবং সরকার কেবল আনুষ্ঠানিক মুখপাত্রে পরিণত হচ্ছে।
advertisement
প্রশ্ন—দুই মাসে দু’বার হোয়াইট হাউসে মুনিরকে ডাকার পেছনে কি ট্রাম্পের কোনও বিশেষ কৌশল আছে? —প্রথমবার ট্রাম্প জুনের শেষ সপ্তাহে মুনিরকে ডাকেন। এবার আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে তিনি হোয়াইট হাউসে পৌঁছান। ট্রাম্প তাঁকে “যুদ্ধ থামানোর জন্য” প্রশংসা করেছেন, আর মুনির ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেছেন। এর মানে, আমেরিকা বুঝে গেছে যে পাকিস্তানে যদি কারও সঙ্গে কথা বলা লাগে, তবে সেটি মুনির, কারণ ক্ষমতা তাঁর হাতেই।
advertisement
advertisement
প্রশ্ন—এতে কি বোঝা যায় যে পাকিস্তানে গণতন্ত্র পিছিয়ে পড়েছে এবং গণতন্ত্রের দাবিদার আমেরিকাও সেনাকে স্বীকৃতি দিচ্ছে? —একদম তাই। মুনিরকে বারবার ডাকা এবং প্রধানমন্ত্রীকে উপেক্ষা করা প্রমাণ করছে যে দেশটির প্রকৃত ক্ষমতা এখন সেনাবাহিনীর হাতে। এ অবস্থায় পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ গণতন্ত্র, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উঠছে।
advertisement
প্রশ্ন—ট্রাম্প কি মনে করছেন আসিম মুনিরে বেশি শক্তি আছে? —ট্রাম্প সাধারণত শক্তিশালী ও একনায়কসুলভ নেতাদের পছন্দ করেন। আসিম মুনির তাঁর কাছে সেরকমই একজন—একজন স্ট্রংম্যান। সম্ভবত মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে তিনি পাকিস্তানকে নিজের পাশে রাখতে চাইছেন। তাঁর মনে হচ্ছে, যদি ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধের অবস্থা হয়, তাহলে পাকিস্তান শান্তির দূত হিসেবে কাজ করতে পারে। আমেরিকার কৌশল দেখে মনে হচ্ছে, ট্রাম্প মুনিরকে দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি, অর্থনৈতিক সুযোগ এবং শক্তির ভারসাম্য প্রভাবিত করার একটি কূটনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে দেখছেন।