India America: 'দু’মুখো সাপ' ট্রাম্প! মোদিকে বন্ধু বলেও 'অপমান' করার বিরাট 'ছক', ভারতের উপর ২৫-৫০% পর পুরো ১০০% শুল্কের চাপ

রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও আক্রমনাত্মক হয়ে উঠেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ ট্রাম্প ইউরোপীয় ইউনিয়নের (EU) কর্তাদের স্পষ্টভাবে বলেছেন যে যদি তারা ভ্লাদিমির পুতিনের উপর চাপ সৃষ্টি করতে চান, তাহলে চিন এবং ভারতের উপর ১০০% পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা উচিত। ট্রাম্পের নতুন গেম প্ল্যানের লক্ষ্য হল সেই দেশগুলিকে দমানো যারা রাশিয়ার তেল কিনে সেই দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করছে।

আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এক মার্কিন এবং এক ইউরোপীয় কূটনীতিক দিয়ে জানিয়েছে যে, ইইউ-র কর্তা ডেভিড ও'সুলিভান এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক সম্মেলন আহ্বানের সময় ট্রাম্প এই দাবি করেন।

আমেরিকার যুক্তি, রাশিয়ার অর্থনীতির চাকা ঘুরছে চিন ও ভারতের মতো দেশগুলির কারণে, যারা প্রচুর পরিমাণে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল কিনছে। এই কারণেই আমেরিকা চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন ১০০% পর্যন্ত শুল্ক আরোপের মাধ্যমে এই দেশগুলির উপর চাপ সৃষ্টি করুক। ট্রাম্প চাইছেন যে ইইউ এই কাজটা করুক যার বকলমে থাকবে আমেরিকা৷

ট্রাম্প বেশ কয়েকবার ইউরোপকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করেনি। গত বছর, রাশিয়া থেকে ইইউর গ্যাস সরবরাহ ছিল প্রায় ১৯%। তবে, ইইউ বলেছে যে তারা শীঘ্রই এই নির্ভরতা বন্ধ করবে।

এখন পর্যন্ত, ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়াকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার উপর বেশি জোর দিয়ে আসছে। কিন্তু ট্রাম্পের এই নতুন প্রস্তাব রাশিয়াকে শুল্ক-ভিত্তিক কৌশল গ্রহণ করতে বাধ্য করতে পারে। আর্থিক সংবাদপত্র ফিনান্সিয়াল টাইমসের মতে, ট্রাম্প এর আগেও বেশ কয়েকবার ভারত ও চিনের উপর শুল্ক বাড়ানোর হুমকি দিয়েছেন।

মনে করিয়ে দেই যে ট্রাম্প প্রথমে ভারতীয় পণ্যের উপর ২৫% শুল্ক আরোপ করেছিলেন এবং রাশিয়া থেকে তেল কেনা অব্যাহত রাখার জন্য অতিরিক্ত ২৫% শুল্ক আরোপ করেছিলেন। এইভাবে, ভারতীয় পণ্যের উপর আমেরিকান শুল্ক ৫০% বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে, এখনও পর্যন্ত তিনি ১০০% শুল্ক আরোপের মতো কঠোর পদক্ষেপ নেননি।

তবে একদিকে ইইউর কাছে ভারতের উপর শুল্ক বাড়ানোর কথা বলছেন ট্রাম্প, অন্যদিকে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন যে আমেরিকা ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য বাধা কমানোর জন্য কাজ করা হচ্ছে। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও চিঠি লিখেছেন। শীঘ্র নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে কথা বলারও ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প৷

বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের কৌশলের সরাসরি লক্ষ্য হল রাশিয়ার উপর অর্থনৈতিক চাপ আরও শক্ত করা। ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য রাশিয়ার উপর চাপ প্রয়োগ করা যেতে পারে কেবল তখনই যখন এর বৃহত্তম ক্রেতা ভারত এবং চিন অর্থনৈতিক আঘাতের সম্মুখীন হবে।