Uttam Kumar: অভিনয়ের আগে উত্তম কুমারের পেশা কী ছিল জানেন? অবাক কাণ্ড! সেই সূত্রেই খোঁজ পেলেন গৌরী দেবীর
- Published by:Suman Biswas
- news18 bangla
Last Updated:
Uttam Kumar: ১৯২৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর কলকাতায় তার জন্ম। পরিবারের দেওয়া নাম ছিল অরুণ কুমার। বাবা সাতকড়ি চট্টোপাধ্যায় আর মা চপলা দেবী গৃহিণী। অভাব-অনটনের সংসার; কোনওমতে দিন কেটে যায়।
১৯৫৩ সালের কথা, মুক্তি পেল নির্মল দের ছবি 'সাড়ে ৭৪'। মুক্তির পর কমেডি ছবিটি নিয়ে সবার কী উল্লাস। ছবিতে নামি সব তারকা_ কে নেই! চারদিকে কথা হচ্ছিল, ছবিটির মাধ্যমে কী এক নতুন জুটি এসেছে পর্দায়। বয়স্করা মজেছিলেন তুলসী চক্রবর্তী আর মলিনা দেবীতে। তাদের দাবি, হিরো-হিরোইন তো তুলসী-মলিনা। নতুন জুটি তো সাইড রোলে! ছবিটি বক্স অফিস কাঁপিয়ে দিল ৷ টানা আট সপ্তাহ চলল এই ছবি ৷ শুরুর গল্পটা ঠিক উল্টো।
advertisement
১৯২৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর কলকাতায় তার জন্ম। পরিবারের দেওয়া নাম ছিল অরুণ কুমার। বাবা সাতকড়ি চট্টোপাধ্যায় আর মা চপলা দেবী গৃহিণী। অভাব-অনটনের সংসার; কোনওমতে দিন কেটে যায়। গিরিশ মুখোপাধ্যায় রোডের একটিমাত্র ঘরে তাঁরা থাকেন ৷ ভরসা বাড়িটি নিজের। বাবার সামান্য বেতনে সংসার চলছে না। উপায় না দেখে উপার্জনে নেমে পড়লেন বাড়ির বড় ছেলে অরুণ।
advertisement
advertisement
advertisement
advertisement
'ফ্লপ মাস্টার জেনারেল': ছবি ফ্লপ হচ্ছে, তারপরও দমে যাননি অরুণ। হাতে ছিল তখনও 'সহযাত্রী' ও 'নষ্টনীড়' ছবি। মন-প্রাণ দিয়ে অভিনয় করলেন। ফল আগের তিনটির মতোই। ছবি ফ্লপ করছে কিন্তু সুযোগ পেয়ে যাচ্ছেন ৷ বিষয়টি ভালভাবে নিল না অনেকেই। আড়ালে-আবডালে তাঁকে ডাকা শুরু হল 'ফ্লপ মাস্টার জেনারেল' বা 'এফএমজি' বলে। নামটা রটে গেলে সিনেমাপাড়ায়। খবরের পাতায় এফএমজি ঘিরে খবরও ছাপা হল।
advertisement
অরুণ থেকে অরূপ, পরে উত্তম: অসফলতার ধারাবাহিকতা চলছিল। এর মধ্যে সরোজ মুখোপাধ্যায়ের 'মর্যাদা' ছবিতে নায়ক হলেন। তবে পরিচালকের সঙ্গে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নাম পাল্টে হলেন অরূপ কুমার। তাতেও কাজ হল না। ‘সহযাত্রী’ ছবিতে অভিনয় করছিলেন বিখ্যাত অভিনেতা পাহাড়ি সান্যালের সঙ্গে। শুটিংয়ের ফাঁকে আড্ডায় পাহাড়ি সান্যাল হঠাৎ বলে বসলেন-'তুমি অরুণ নও হে, তুমি যে উত্তম, উত্তম কুমার।' তার পরামর্শে নাম পাল্টে হয়ে গেলেন উত্তম কুমার। নাম বদলের প্রথম ছবি সহযাত্রীতেও সাফল্য ধরা দিল না। ১৯৫১ সালে 'সঞ্জীবনী'ও ফ্লপ হল। 'বসু পরিবার' ছবিতে নায়কের ভূমিকায় নয়, ছিলেন পার্শ্বচরিত্রে। ছবিটি বেশ ভাল চলল, অভিনয়ের জন্য প্রথম প্রশংসিত হলেন উত্তম।
advertisement
এক বছরেই ১৪ ছবি: 'সাড়ে ৭৪'-এর জোয়ারের ঢেউ গিয়ে পড়ল পরের বছর। ১৯৫৪ সালে মুক্তি পেল উত্তম অভিনীত ১৪টি ছবি, তার মধ্যে সাতটিই সুচিত্রার সঙ্গে জুটি বেঁধে। 'দৃষ্টিদান' দিয়ে শুরু করে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত ৩৩ বছরে বাংলা-হিন্দি মিলিয়ে প্রায় আড়াইশ' ছবিতে অভিনয় করেছেন উত্তম। প্রথম ছবিতে মায়া মুখোপাধ্যায়, সর্বশেষ 'ওগো বধূ সুন্দরী'তে মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়-সহ সর্বমোট ৪৬ জন তার নায়িকা হয়েছেন।
advertisement
কিংবদন্তি জুটি ও রহস্য: ১৯৫৪ সালে 'ওরা থাকে ওধারে' ছবি দিয়ে উত্তম-সুচিত্রা জুটি পাকাপাকিভাবে দর্শক হৃদয়ে স্থান করে নেয়। তিপান্নর যাত্রা পঁচাত্তরে গিয়ে 'প্রিয় বান্ধবী' দিয়ে শেষ হয়। ২২ বছরে মুক্তি পেয়েছে উত্তম-সুচিত্রা জুটির সর্বমোট ৩১টি ছবি। কিন্তু রূপালি পর্দার বাইরে কেমন ছিল তাদের সম্পর্ক? পেশাগত, নাকি বন্ধুত্বের? নাকি আরও কিছু? এসব প্রশ্নের শুরু হয়েছে অনেক আগেই, শেষ হয়নি কখনও! সুচিত্রা সেনের জীবনের শেষ ছবি হতে পারত উত্তমের সঙ্গে; এমনকি উত্তমেরও। কী যে ঘটেছিল, ১৯৬২ সালের পর তারা একসঙ্গে ছবি করা কমিয়ে দেন। সুচিত্রা কেনই বা সিনেমা জগৎ ছেড়ে চলে গেলেন লোকচক্ষুর অন্তরালে, তাও এক চিরকালীন রহস্য। গৌরী দেবীকে ছেড়ে ১৯৬৩ সাল থেকে ১৯৮০ সালে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তিনি সুপ্রিয়া দেবীর সঙ্গে ছিলেন।