Professor Sengupta: ওয়েব সিরিজের দুনিয়ায় পদার্পণ করছেন ‘খুকুমণি হোম ডেলিভারি’-র দীপান্বিতা; আসছে ‘প্রফেসর সেনগুপ্ত’, প্রকাশ্যে এল প্রথম ঝলক
- Published by:Siddhartha Sarkar
Last Updated:
আগামী জুলাই মাসেই ক্লিক ওটিটি প্ল্যাটফর্মে আসতে চলেছে ওয়েব সিরিজ ‘প্রফেসর সেনগুপ্ত’। পরতে পরতে রোমহর্ষক রহস্যে ভরা এই থ্রিলার ধর্মী ওয়েব সিরিজের প্রথম ঝলক সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে।
ছোট পর্দায় তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করেছেন অভিনেত্রী দীপান্বিতা রক্ষিত। সৌজন্যে ‘খুকুমণি হোম ডেলিভারি’ এবং ‘তুঁতে’। এই দুই ধারাবাহিকের হাত ধরেই যেন দর্শকদের ঘরের মেয়ে হয়ে উঠেছিলেন তিনি। তবে বেশ কিছু সময় ধরে ছোট পর্দা থেকে দূরে রয়েছেন তিনি। অবশ্য এবার তিনি পা রাখতে চলেছেন ওয়েব সিরিজের দুনিয়ায়। আগামী জুলাই মাসেই ক্লিক ওটিটি প্ল্যাটফর্মে আসতে চলেছে ওয়েব সিরিজ ‘প্রফেসর সেনগুপ্ত’। পরতে পরতে রোমহর্ষক রহস্যে ভরা এই থ্রিলার ধর্মী ওয়েব সিরিজের প্রথম ঝলক সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে। আর ‘প্রফেসর সেনগুপ্ত’-র হাত ধরেই প্রথম বার ওয়েব সিরিজে অভিনয় করতে চলেছেন দীপান্বিতা। তাঁর পাশাপাশি এই সিরিজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা যাবে জয় সেনগুপ্ত, জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, অনুজা রায় এবং জিৎসুন্দর চক্রবর্তীকে।
advertisement
আপাতদৃষ্টিতে দুর্ঘটনা বলে মনে হলেও ময়নাতদন্তে উঠে আসে অন্য তথ্য! সেই খুনের তদন্ত করতেই অনির্বাণের জীবনে প্রবেশ করেন অফিসার ইন চার্জ রজত। কারণ যে ছেলেটি খুন হয়েছে, সে আদতে অনির্বাণেরই প্রাক্তন ছাত্র। সেই খুনের তদন্ত করতে করতেই অনির্বাণের কাছে তিন্নির কথা জানতে পারেন রজত। এদিকে তিন্নির বাড়িতে গিয়ে চমকে ওঠেন রজত। কারণ ছোট্ট শিশুটি জানায় যে, সে না কি তার অনি আঙ্কেলের রেফ্রিজারেটরে একটা কাটা কান দেখতে পেয়েছে। জানা যায় যে, তিন্নিকে একটা পুতুল বানিয়ে দেবেন বলে অনির্বাণ সিলিকনের তৈরি হিউম্যান বডি পার্টস কিনে এনেছেন। এতে রজতের সন্দেহ আরও দৃঢ় হতে থাকে।
advertisement
সন্দেহের বশবর্তী হয়ে রজত তিন্নির পুতুলটা দেখে তার একটি কান ছিঁড়ে সেটা ফরেন্সিকে পাঠান। কারণ এর কিছু দিন আগেই পুলিশ একটি মেয়ের মৃতদেহ জলাশয় থেকে উদ্ধার করেছিল, যাঁর কান, ঠোঁট এবং হাতের আঙুল নিপুণ ভাবে কাটা ছিল। এরপর সার্চ ওয়ারেন্ট নিয়ে অনির্বাণের বাড়ি পৌঁছে যান রজত। রজত এসিপি-র কাছে জানান যে, তিনি অনির্বাণের বাড়ি সার্চ করতে চান, কারণ তিনি নিশ্চিত যে, অনির্বাণ কিছু লুকোচ্ছেন। নাহলে কেউ হিউম্যান বডি পার্টস দিয়ে বাচ্চার জন্য পুতুল কেন বানাবেন? রহস্যময় এই বাড়িতে কি লুকোনো আছে? প্রফেসর অনির্বাণ কি সত্যিই এই খুনের ব্যাপারে কিছু জানেন? এই সমস্ত প্রশ্নই ঘুরপাক খেতে থাকে। আর এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেতে গেলে দেখতেই হবে হাড়-হিম করা থ্রিলার ‘প্রফেসর সেনগুপ্ত’।
advertisement
এই প্রসঙ্গে পরিচালক রাজদীপ ঘোষ বলেন যে, “যখন KLiKK প্রথম এই প্রজেক্ট নিয়ে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে আমায় গল্পটি শোনায়, তখনই আমি বুঝতে পারি যে, এটি এমন একটি গল্প, যা নিয়ে আমি আগে কখনও কাজ করিনি। আমি সব সময়ই এই ধরনের গল্প নিয়ে কাজ করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সেই সুযোগ আমার কাছে আসেনি। স্বাভাবিক ভাবেই উত্তেজনা ছিল অপরিসীম। এই সিরিজের জন্য আমরা বিভিন্ন জায়গায় শ্যুটিং করেছি। যদিও আমরা অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছি, তবে পুরো টিমের কঠোর পরিশ্রম আমাদের এই গল্পটিকে জীবন্ত করে তুলতে সাহায্য করেছে। দর্শকদের এটাই বলব যে, বিগত চার বছর ধরে KLiKK-এর এই নতুন ছন্দে সিরিজ পরিবেশনের মধ্যে এটা একটা উপহার। পাঁচ এপিসোডের সাইকোলোজিক্যাল থ্রিলার ‘প্রফেসর সেনগুপ্ত’। অসাধারণ অভিনয়, দুর্দান্ত সিনেমাটোগ্রাফি আর তার উপরে হৃদয়স্পর্শী মিউজিকাল ট্রিটমেন্ট।”
advertisement
তিনি আরও বলেন যে, “KLiKK-এর সঙ্গে এটা আমার চতুর্থ কাজ হলেও জয় সেনগুপ্ত, জয়জিৎ, দীপান্বিতা, জিৎসুন্দর - এঁদের সকলের সঙ্গে এটা আমার প্রথম কাজ। আর প্রথম কাজ হলেও শ্যুটিং ফ্লোরে সেটা আমি কখনওই টের পাইনি। আমাদের ইদানীং খুবই কম সময়ের মধ্যেই শুটিং শেষ করতে হয়। অভিনেতা-অভিনেত্রীদের অভিনয় নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। কারণ তাঁরা প্রত্যেকেই এই ইন্ডাস্ট্রিতে যথেষ্ট অভিজ্ঞ। আমার গাইডেন্স মেনে তাঁরা অসাধারণ অভিনয় করেছেন। আর তার ফলাফল সিরিজ মুক্তি পেলেই আপনারা দেখতে পাবেন।”
advertisement
প্রফেসর সেনগুপ্তর চরিত্রে অভিনয় করছেন অভিনেতা জয় সেনগুপ্ত। তাঁর কথায়, “কলকাতার ইন্ডাস্ট্রি প্রতিভায় সমৃদ্ধ হলেও লম্বা দৌড়ের ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চালানোর ক্ষেত্রে তারা এখনও হয়তো কিছুটা পিছিয়ে। অনেক প্ল্যাটফর্ম আশার আলো দেখিয়ে শুরু করেছিল ঠিকই, কিন্তু বেশিরভাগই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারেনি। আসলে গুণগত মানের গল্প বলা, আর্থিক স্থায়িত্ব ও নতুন দর্শক টানার মধ্যে ভারসাম্য রাখতে না পেরেই টিকে থাকতে পারেনি। তবে ক্লিক (KLIKK) সেই দিক থেকে ব্যতিক্রম। কারণ ওরা শুধু টিকেই থাকেনি, দৃঢ়তার সঙ্গে দৃপ্ত পদক্ষেপে এগিয়েও গিয়েছে। তার জন্য অবশ্যই অভিনন্দন প্রাপ্য তাদের।”
advertisement
অভিনেতা বলে চলেন যে, “এটি ছিল ক্লিক-এর সঙ্গে আমার প্রথম বাংলা ওয়েব সিরিজ। আর এই কাজটি মানসিক ভাবে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং লেগেছে। মানসিক বিপর্যয়ের স্মৃতি ও লালসার টানাপোড়েন, সংস্কার ও নৃশংসতার দ্বন্দ্ব— সব কিছুর ভারসাম্য বজায় রেখে এগোনোটা সত্যিই কঠিন। এই প্রজেক্টের পরিচালক রাজদীপ ঘোষ ও তাঁর টিমের মধ্যে এক অসাধারণ মানসিকতা দেখেছি — যেটা আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে বড়ই দুর্লভ। চিত্রনাট্য কিংবা সীমিত কোনও পরিধির গণ্ডিতে আটকে না থেকে একটা নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি পূরণের আকাঙ্ক্ষা রয়েছে। রাজদীপ ও চিত্রগ্রাহক শুভজিৎ রায় মিলে সেই দৃষ্টিভঙ্গিকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কারিগরি দক্ষতা ও শৈল্পিক নৈপুণ্য নিয়ে এসেছেন, যা একটি মনস্তাত্ত্বিক থ্রিলারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমি আশা করি যে, দর্শকরা এই প্রজেক্টের পরিশ্রম ও সম্মিলিত প্রচেষ্টাকে আন্তরিক ভাবে গ্রহণ করবেন এবং এর প্রশংসাও করবেন।”
advertisement
অভিনেতা জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় আবার বলেন যে, “KLiKK-এর সঙ্গে দ্বিতীয়বার কাজ করে যেন ঘরে ফেরার অনুভূতি হয়েছিল। আর এই অভিজ্ঞতাটি সত্যিই অসাধারণ ছিল। যেহেতু শ্যুটিংটি আমার প্রিয় জায়গাগুলির মধ্যে একটি জায়গায় হয়েছিল, তাই আমি প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করেছি - বিশেষ করে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি, বাতাসে ঠান্ডার আভাস এবং আমাদের চারপাশের প্রকৃতি। আসলে আবহাওয়াই এক নিখুঁত মেজাজ তৈরি করে দিয়েছিল। পোকামাকড়ের ডাক এবং মাঝে মাঝে লোডশেডিংয়ের মধ্যে আমাদের শ্যুটিং-পরবর্তী আড্ডাও সমস্ত বিষয়টাকে আরও স্মরণীয় করে তুলেছিল! আর দীর্ঘ বিরতির পর একজন পুলিশের চরিত্র করা অবশ্যই একটি চ্যালেঞ্জ ছিল। আমি জানতাম যে, এক্ষেত্রে আমাকে আলাদা ভাবে দেখাতে একটু অতিরিক্ত কিছু যোগ করতে হবে। আর আমার মনে হয়, আমি ঠিক সেটাই করেছি! পরিচালক হিসেবে রাজদীপের সঙ্গে এটি আমার প্রথম কাজ। আর আমি অবশ্যই বলব যে, এটি একটি দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা ছিল।”
advertisement
অভিনেত্রী দীপান্বিতা রক্ষিতের বক্তব্য, “এটি আমার প্রথম ওয়েব সিরিজ। আর আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ যে, আমি এই গুরুত্বপূর্ণ ওয়েব ডেবিউ আত্মপ্রকাশের যাত্রাটি ক্লিক-এর সঙ্গে করতে পেরেছি। আমি তাদের সম্পর্কে অনেক কিছু শুনেছি এবং এখন ক্লিক পরিবারের অংশ হতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। আমার সহ-অভিনেতারা দারুণ ছিলেন এবং শ্যুটিং সেটে আমাদের খুব স্বাচ্ছন্দ্যময় এক সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। যদিও মনোরম পাহাড়ে শুটিংয়ের সময়সূচি খুবই ব্যস্ততায় ভরা ছিল এবং আবহাওয়া কখনও কখনও বেশ বিপজ্জনক হয়ে উঠেছিল। আমি ছোট এই অ্যাডভেঞ্চারের অভিজ্ঞতাটি পুরোপুরি ভাবে উপভোগ করেছি।”
advertisement
অভিনেত্রী আরও বলেন যে, “প্রফেসর সেনগুপ্ত-র গল্পে একাধিক লেয়ার রয়েছে এবং আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি যে, আমি জয় সেনগুপ্ত এবং জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো প্রতিভাবান সিনিয়র অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি, যাঁদের আমি ছোটবেলা থেকে পর্দায় দেখে বড় হয়েছি। আমার সমসাময়িক জিৎসুন্দর এবং অনুজার সঙ্গে অভিনয় করেও খুবই উপভোগ করেছি। যদিও আমরা প্রথমবার একসঙ্গে কাজ করছিলাম, তবে আমরা একে অপরের সঙ্গে ভাল সম্পর্কও গড়ে তুলেছি এবং নিজেদের অভিনয় আরও ভাল করার জন্য একে অপরকে সাহায্য করেছি। সরল, তরুণ চাকরিজীবী এক মেয়ে শ্রেষ্ঠার চরিত্র ফুটিয়ে তোলা সত্যিই একটি চমৎকার অভিজ্ঞতা ছিল। সে তার কাজ এবং ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্য বজায় রাখে। সে একজন সাধারণ ও সুন্দরী মেয়ে, যার মুখে সব সময় হাসি লেগেই থাকে এবং সে গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পারে। আর মানুষের ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে ভাল ধারণা তৈরী করতে পারে। আমি অত্যন্ত উৎসাহের সঙ্গে এই সিরিজের ট্রেলার লঞ্চের জন্য অপেক্ষা করছি।”