Nude Model Nikita Gokhale: দারিদ্র্য ফিকে করেছিল সোনালি স্বপ্নের রং! বিদেশেই রূপকথারা ধরল উড়ান, হলেন Nude মডেল...
- Published by:Sanjukta Sarkar
- news18 bangla
Last Updated:
Nude Model Nikita Gokhale: নিকিতার কাহিনি যেন রূপকথার গল্প, "জীবনের গল্প হোক যত অল্প খানিক বদলাক না"...
নিকিতা গোখলের আজ আর কোনও পরিচয়ের প্রয়োজন নেই। গরীব ঘরে বেড়ে ওঠা এই মডেল শুধু দেশেই নয় বিদেশেও তার সৌন্দর্যের স্বাক্ষর রেখেছেন। নিকিতা একজন পেশাদার ন্যুড মডেল (Nude Model Nikita Gokhale)। বিখ্যাত প্লে বয় ম্যাগাজিনেও নিজের জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। কিন্তু তার শৈশব কেটেছে দারিদ্রের মধ্যে। অত্যন্ত অনটনের মধ্যেই বড় হয়েছেন নিকিতা। ছবি ইনস্টাগ্রাম।
প্রতিবেশীদের দেওয়া বাসি ভাত খেয়ে এক এক দিন কেটে যেত নিকিতার। নিকিতা গোখলে জানান, তিনি আম বিক্রি করে খাবারের ব্যবস্থা করতেন একটা সময়। তিনি বলেন, 'আম নিয়ে যাওয়ার সময় মানুষ টাকা ছুড়ে দিত, আমি সেই টাকাগুলো তুলে নিয়ে সন্ধ্যার খাবারের ব্যবস্থা করতাম। ১৫ বছর বয়সে গাছ থেকে ঝড়ে পড়া আম বাজারে বিক্রি করতাম প্রতি কেজি ২ টাকায়। এই ছিল আমাদের রাতের খাবারের 'জুগাড়'। আমাদের অবস্থা এমন ছিল যে প্রতিবেশীরা রাতের অবশিষ্ট ভাত আমাদের দিতেন এবং মা তা ধুয়ে লবণ-মরিচ যোগ করে আমাদের খাওয়াতেন। আমরা এভাবেই বড় হয়েছি'।
নিকিতার কাহিনী এগোয় এরপরেও। বলেন, 'দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়ার সময় আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমি সিএ হব। আমি পড়াশোনায় খুব ভালো ছিলাম কিন্তু স্কুলে আমার গায়ের বর্ণের জন্য আমাকে বঞ্চিত করা হত। একবার বাড়িতে আমার বিয়ের কথা উঠল, আমি ভাবলাম যে এখন আমি আমার স্বপ্ন পূরণ করতে পারব না, তাই আমি বাড়ি ছেড়ে তুমসার থেকে পালিয়ে নাগপুর চলে আসি। আমি সেখানে আমার আত্মীয়ের কাছে থাকলাম।'
এরপরেই কাজ খুঁজতে শুরু করেন নিকিতা। অভিনেত্রী তথা মডেল বলেন, "তখন আমি একটি মার্কেটিং সংস্থায় কাজ পেয়েছিলাম যেখানে আমাকে কিছু কার্ড বিক্রি করতে হয়েছিল। এ জন্য কমিশন হিসেবে কিছু টাকা পেতাম। শুরুতে কার্ড বিক্রি না হলেও কিছুদিন পর বিক্রি শুরু হয়। আমি CA এর জন্য কোচিং শুরু করলাম। ধীরে ধীরে হিসাবের কাজও করা শুরু করি।'
এমনকি স্টক এক্সচেঞ্জের কাজও শিখেছেন নিকিতা। এরপরে একটা সময় তিনি নাগপুর থেকে চণ্ডীগড়ে চলে আসেন। সেখানে একটি কোম্পানিতে স্টক মার্কেটিংয়ের কাজ শুরু করেন। নিকিতা জানান, কিছুদিন পর নিজের শেয়ার মার্কেটিংয়ের কাজ শুরু করেন তিনি। অনেক টাকা রোজগার করেন। এর মধ্যে একটি বাড়ি এবং একটি গাড়িও কিনেছেন নিকিতা। সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল আচমকা বদলায় ভাগ্য। বড় ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। সাত বছরের পরিশ্রম, সঞ্চয় সব ধূলিস্যাৎ।
একটি সাক্ষাৎকারে নিকিতা গোখলে বলেন, তার কাজ যখন বন্ধের মুখে, ঠিক সেই সময়ে ফেসবুকে এক ব্যাংককের মডেলের সঙ্গে আলাপ হয় তাঁর। তিনি বলেন, 'মডেল আমাকে মেসেজ করে বলেন যে আমেরিকার একজন ফটোগ্রাফার আছেন, যিনি নগ্ন ফটোশুটের জন্য ডাস্কি কালার মডেল খুঁজছেন। সে আমাকে বলল তুমি কেন এই কাজ কর না। কত টাকা পাবো জানতে চাইলে তিনি বলেন, একদিনে চার থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা পাওয়া যাবে। আমি হ্যাঁ করি। ফটোগ্রাফার আমার ছবি তোলেন এবং সন্ধ্যা নাগাদ আমার অ্যাকাউন্টে দেখলাম ৪.৫ লক্ষ টাকা এসে গিয়েছে।
আমি যখন প্রথমবার নগ্ন হয়ে ছবি তুললাম, তখন আমার কিছুতেই খারাপ লাগেনি। এরপর প্লেবয় ম্যাগাজিনের জন্য নির্বাচিত হই। তবে এরপর কয়েক বছর কোনো কাজ পাইনি। ২০১৫ সালে, আমি অ্যাডামের সাথে দেখা করি, যিনি লন্ডনে একটি বিজ্ঞাপন সংস্থায় কাজ করছিলেন। তিনি আমার সাথে আমেরিকার এক মডেলিং এজেন্সির যোগাযোগ করিয়ে দেন। সেখান থেকে আমার ক্লাসিক্যাল আর্ট ন্যুডের যাত্রা শুরু হয়। এরপর আর ফিরে তাকাইনি।'
উল্লেখ্য, নিকিতা গোখলে ২০১৫ সালে 'মিস ইন্ডিয়া বিকিনি', 'মিস ওয়ার্ল্ড বিকিনি', 'মিস কিউট ওয়ার্ল্ড বিকিনি', ২০১৬ সালে জার্মানিতে 'মিস গ্ল্যামারাস ফেস ওয়ার্ল্ড' পুরস্কার জিতে নিয়েছেন। এছাড়াও তিনি ২০১৬ সালে 'মিস ইউফোরিয়ান ট্যুরিজম মাল্টা'-এ ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন। আজ তিনি একজন সুপরিচিত ন্যুড আর্ট মডেল। অ্যাকাউন্ট তার সাহসী ফটোতে ভরপুর নিকিতার ইনস্টাগ্রাম। কিন্তু আজও শৈশব কৈশোরের সেই কালো দিনগুলি ভুলতে পারেননি নিকিতা।