রহস্যময় সৌন্দর্যের দৃষ্টান্ত ছিলেন এই অভিনেত্রী; এক খলনায়ককে দিয়েছিলেন মন, অথচ সারা জীবন একটু ভালবাসা খুঁজে বেরিয়েছেন চাতকের মতো
- Published by:Siddhartha Sarkar
- news18 bangla
Last Updated:
Madhubala Birth Anniversay: যে অভিনেত্রীর কথা হচ্ছে, তিনি সেটের ছোট তারকাদের সঙ্গে বাক্যালাপেও যেতেন না। কথা হচ্ছে, সুন্দরী অভিনেত্রী মধুবালার। যাঁর সৌন্দর্য যেন এক রহস্য। অভিনেত্রী নিজে প্রেমে পড়েছিলেন। কিন্তু কে জানত যে, অভিনেত্রীর হৃদয়ই তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবে, আর কেড়ে নেবে তাঁর প্রাণ।
বি-টাউনে এমন অনেক তারকা ছিলেন, যাঁদের অহঙ্কারের গল্প শোনা যায়। এঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন রাজ কুমার, ফিরোজ খান, দিলীপ কুমার প্রমুখ। তাঁরা নিজেদের শর্তে কাজ করেছেন, কোনও পরিচালকের কথাই তাঁরা মানতেন না। সেই সময় মূলত পুরুষ অভিনেতারাই দাপিয়ে রাজত্ব করতেন ইন্ডাস্ট্রিতে। তবে বি-টাউনের এক কন্যে নিজের সৌন্দর্যের জাদুতে এই সমস্ত নায়ককেই এক কথায় পাগল করে তুলেছিলেন। কিন্তু তিনি নিজের মন দিয়েছিলেন এক খলনায়ককে। যে অভিনেত্রীর কথা হচ্ছে, তিনি সেটের ছোট তারকাদের সঙ্গে বাক্যালাপেও যেতেন না। কথা হচ্ছে, সুন্দরী অভিনেত্রী মধুবালার। যাঁর সৌন্দর্য যেন এক রহস্য। অভিনেত্রী নিজে প্রেমে পড়েছিলেন। কিন্তু কে জানত যে, অভিনেত্রীর হৃদয়ই তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবে, আর কেড়ে নেবে তাঁর প্রাণ।
advertisement
যন্ত্রণাময় জীবন: মধুবালা মাত্র ছত্রিশ বছর বেঁচেছিলেন। আর যতদিন বেঁচেছেন, ততদিনের মধ্যে প্রত্যেকটা দিন তাঁকে তীব্র যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। যদিও সেই যন্ত্রণা কখনওই নিজের চোখেমুখে ফুটে উঠতে দেননি। আসলে জন্ম থেকেই হৃদযন্ত্রে ছিদ্র ছিল তাঁর। সেটাই যেন কাল হয়। হৃদয়ে ছিদ্র থাকলেও তাঁর মন ছিল প্রচণ্ড উদার। ফলে নিজের ছবির প্রত্যেক অভিনেতা এবং পরিচালককে দেখামাত্রই প্রেমে পড়তেন তিনি।
advertisement
প্রতিনিয়ত চর্চার কেন্দ্রে থাকত অভিনেতার ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবন: নিজের সৌন্দর্য এবং দুর্ধর্ষ অভিনয় প্রতিভার জোরে সকলের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন মধুবালা। পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে মধুবালার জনপ্রিয়তা ছিল তুঙ্গে। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস ৫৫’, ‘চলতি কা নাম গাড়ি’, ‘হাফ টিকিট’, ‘হাওড়া ব্রিজ’ এবং ‘কালা পানি’-র মতো ছবি। প্রত্যেক ছবির অভিনেতা এবং পরিচালককেই প্রেম প্রস্তাব দিয়ে বেড়াতেন অভিনেত্রী। মাত্র ছত্রিশ বছর আয়ুই সম্বল ছিল তাঁর। তবে ক্ষণজন্মা এই অভিনেত্রীর জীবনের গল্প কিন্তু ভূরি ভূরি। আসলে সব সময়ই ব্যক্তিগত এবং পেশাগত জীবনের দিক থেকে চর্চার কেন্দ্রে থাকতেন তিনি।
advertisement
খলনায়কের প্রেমে পড়লেন অভিনেত্রী: দিলীপ কুমারের সঙ্গে জড়িয়েছিল মধুবালার নাম। অভিনেতার সঙ্গে প্রেম এবং বিচ্ছেদের জন্য মধুবালা প্রচারের আলোয় চলে এসেছিলেন। এরপরেই গায়ক কিশোর কুমারের সঙ্গে অভিনেত্রীর বিয়ে নিয়ে শুরু হয় জোর চর্চা। তবে দিলীপ কুমারের প্রেমে পড়ার আগে বলিউডের এক খলনায়কের প্রেমে পড়েছিলেন অভিনেত্রী। আর এই খলনায়ক হলেন প্রেমনাথ। ইটাইমস-এর সঙ্গে আলাপচারিতায় একবার মধুবালার বোন মধুর ভূষণ এই বিষয়টি প্রকাশ্যে এনেছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে, ১৯৫১ সালে ‘বাদল’ ছবিতে একসঙ্গে কাজ করেছিলেন মধুবালা আর প্রেমনাথ। সেই সময় বেশ কিছু ছবিতে খলচরিত্রে দেখা যেত প্রেমনাথকে।
advertisement
মেকআপ রুমে প্রেম প্রস্তাব: প্রেমনাথের মেক-আপ রুমে সটান ঢুকে পড়ে প্রেমপত্র এবং ফুল দিয়ে বসেন মধুবালা। এদিকে কী ঘটছে, বুঝে উঠতে পারছিলেন না অভিনেতা। প্রেমপত্র খুলতেই প্রেমনাথ দেখেন যে, তাতে লেখা রয়েছে, যদি তুমি আমায় ভালবাসো, দয়া করে এই গোলাপটা গ্রহণ করো অথবা আমায় ফিরিয়ে দাও। প্রথমে ঘাবড়ে গেলেও আনন্দের সঙ্গে গ্রহণ করেন এই প্রস্তাব। দু’জনের মধ্যে প্রেম শুরু হয়। প্রেমনাথের বেশ খেয়ালও রাখতেন অভিনেত্রী। এমনকী বলিউডের অন্দরে কান পাতলে এ-ও শোনা যায় যে, অ্যালার্মের মতো প্রতিদিন প্রেমিক প্রেমনাথের ঘুম ভাঙিয়ে দিতেন মধুবালা। কিন্তু সেই সম্পর্কের শীঘ্রই অবসান ঘটে যায়। কারণ দিলীপ কুমারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হচ্ছিল মধুবালার।
advertisement
কিংবদন্তিদের সঙ্গে কাজ: শাম্মি কাপুর, দিলীপ কুমার, কিশোর কুমার এবং রাজ কাপুরের মতো কিংবদন্তি অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করেছেন মধুবালা। তিনি পর্দায় এলেই চারিদিক ফেটে পড়ত হাততালিতে। সেই সময়কার তারকা ছিলেন শাম্মি কাপুর। সেই যুগে প্রত্যেক অভিনেত্রীই তাঁর সঙ্গে কাজ করতে চাইতেন। বহু অভিনেত্রীর কেরিয়ার গড়েছিলেন শাম্মি কাপুর। কিন্তু মধুবালার সৌন্দর্যে অভিভূত ছিলেন স্বয়ং শাম্মি কাপুরও।
advertisement
মধুবালার সৌন্দর্যে ভুলেছিলেন সংলাপও: শাম্মি কাপুরের একটি পুরনো সাক্ষাৎকার তুলে ধরেছে মুভি টকিজ নামে একটি ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডল। তিনি বলেছিলেন যে, “ওহ! উনি এতটাই সুন্দর ছিলেন যে, ওঁর সৌন্দর্য দেখে আমি জ্ঞান হারিয়েছিলাম। ১৯৫৩ সালের ‘রেল কা ডিব্বা’ ছবির সময় আমি যখন ওঁকে দেখি, তখন আমি নিজের সংলাপ পর্যন্ত ভুলে গিয়েছিলাম।” যদিও নিজেক কেরিয়ারে একাধিক হিট ছবি দিয়েছেন মধুবালা। তবে দিলীপ কুমারের সঙ্গে ১৯৬০ সালের ছবি ‘মুঘল-ই-আজম’-এ অভিনয় করেছিলেন। যা ইতিহাস গড়েছিল।