দোর্দণ্ডপ্রতাপ এই নারী আবার লেডি ডন নামেও পরিচিত। কিন্তু তাঁদের আলাপ এবং প্রেম কীভাবে হয়েছিল, সেই গল্পই শুনে নেওয়া যাক আজ। শায়েস্তা বরাবরই পড়াশোনায় ভাল ছিলেন। স্নাতক স্তরের পড়াশোনা করার সময়ই আতিকের সঙ্গে পরিচয়। সুন্দরী শায়েস্তাকে প্রথম দেখাতেই প্রেমে পড়ে যান আতিক। শোনা যায়, শায়েস্তা না কি খুবই মেজাজী ছিলেন। আর এই স্বভাবই তাঁর প্রতি আরও আকর্ষণ করেছিল অষ্টম শ্রেণী উত্তীর্ণ গ্যাংস্টার আতিককে।
এদিকে ১৯৯৬ সাল নাগাদ নিজের অপরাধ আড়াল করার জন্য রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলেন আতিক। বিধায়ক পদও লাভ করে ফেলেছিলেন। সেই সময় চকিয়া এলাকায় বেশ নামডাক এবং মর্যাদার অধিকারী হয়েছিলেন ৩৪ বছর বয়সী আতিক। ফলে তাঁর বিয়ের জন্য প্রচুর সম্বন্ধ আসছিল। আর ঠিক এই সময়ই বেশ কাছাকাছি আসেন আতিক-শায়েস্তা। শায়েস্তার পরিবার প্রয়াগরাজের দামুপুরে থাকত। তাঁর বাবা ছিলেন এক জন পুলিশকর্মী। ফলে তাঁর বাবা আগে থেকেই আতিকের পরিবারকে চিনতেন।
তিনিও চাইতেন, আতিকের সঙ্গেই তাঁর মেয়ের বিয়ে হোক। সেই কারণে শায়েস্তার পরিবারের সদস্যরা সম্বন্ধ নিয়ে আতিকের বাড়ি পৌঁছে যান। অবশেষে দুই পরিবারের সম্মতি নিয়ে ১৯৯৬ সালের ২ অগাস্ট বিবাহবন্ধনে বাঁধা পড়েন আতিক-শায়েস্তা। পুলিশ কোয়ার্টারে বেড়ে ওঠা শায়েস্তা যেন আতিকের প্রাসাদোপম বাড়ির রাজরানি হয়ে উঠলেন। সুন্দরী স্ত্রী-র প্রতি গভীর ভালোবাসা ছিল আতিকের। এমনকী এ-ও শোনা যায় যে, শায়েস্তাকে খুশি করার জন্য হামেশাই দামী দামী উপহার দিতেন তিনি। আর সেগুলি পেয়ে যারপরনাই খুশি হতেন শায়েস্তা।
সেই সময় টাকার অভাব ছিল না তাঁদের। কারণ প্রচুর কালো টাকা কামিয়েছিলেন আতিক।
শুধু উপহারই নয়, স্ত্রীকে খুশি করার জন্য বেড়াতেও নিয়ে যেতেন আতিক। তবে স্বামীর থেকে পাওয়া শায়েস্তার সবথেকে প্রিয় উপহারটি ছিল একটা কোল্ড স্টোরেজ। মজা করে এই স্টোরেজটিকে গোল্ড স্টোরেজ বলে ডাকতেন শায়েস্তা। কারণ এখান থেকে প্রতি বছর প্রায় ৩ কোটি টাকা আয় হত। এইটারও একটা আলাদা গল্প রয়েছে।
আসল মালিকের থেকে ছিনিয়ে নিয়ে নিজের স্ত্রী-কে কোল্ড স্টোরেজটি উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন আতিক। সম্প্রতি আতিকের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে একটি অ্যালবাম উদ্ধার করা হয়েছে। এই অ্যালবামটির প্রত্যেক ছবিতে যেন ফুটে উঠেছে আতিক-শায়েস্তার সম্পর্কের গভীরতা। প্রসঙ্গত, এই দোর্দণ্ডপ্রতাপ দম্পতির পাঁচ ছেলে ছিল। বাইরে আতিকের যতই জারিজুরি থাকুক না কেন, তাঁর জীবন এবং বাড়ির সমস্ত কিছুর চাবিকাঠি ছিল শায়েস্তার হাতেই। এমনকী স্বামী জেলে যাওয়ার পরে ব্যবসার দায়িত্ব সামলাতেন শায়েস্তাই।