

•করোনা (Coronavirus) সংক্রমণ রুখতে প্রয়োজন সঠিক টেস্ট বা ভাইরাস নির্ণয়। বিশেষজ্ঞরা শুরু থেকেই বলছেন, যত বেশি টেস্ট হবে তত সংক্রমণের পরিমাণ কমানো সম্ভব হবে। তা ছাড়াও করোনা টেস্টিংয়ের ফল হিসেবে বোঝা যাবে সংক্রমণের মাত্রাও। স্বাস্থ্যক্ষেত্রেও সেই অনুযায়ী পরিবর্তন করা বা কাজ করা সম্ভব হবে। করোনা (Covid 19) সংক্রমণ হলে কী পরীক্ষা করলে সঠিক ফল আসবে বা কোন পরীক্ষা করলে কী হয়, তা নিয়ে অনেকেরই জিজ্ঞাস্য থাকে। অনেকেই জানেন না কী পরীক্ষা আদৌ হয় করোনার জন্য। কোন পরীক্ষায় বা তাড়াতাড়ি ফল আসে? বলে রাখা ভাল করোনা ভাইরাস নির্ণয়ের একাধিক পদ্ধতি রয়েছে। তার মধ্যেই কয়েকটি উল্লেখ করা হল৷


•RT-PCR টেস্ট-প্যাানডেমিকের (Pandemic) মাঝেই নতুন ভাইরাস নির্ণয়ের একাধিক পরীক্ষা আবিষ্কার হয়। সামনে আসে নতুন নতুন পদ্ধতি। প্রথমের দিকে একটি টেস্ট করে তার রিপোর্ট আসতে বেশ কয়েক দিন লেগে যেত। কিন্তু দেখা যায়, তাতে রোগী সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন, না হলে মৃত্যু হওয়ার পর রিপোর্ট আসছে। যার জন্য সংক্রমণের মাত্রাও বাড়তে থাকে। করোনা সংক্রমণ শুরুর কিছুদিন পর চালু হয় RT-PCR টেস্ট বা Real Time Reverse Transcription Polymerase Chain Reaction টেস্ট। যা এখনও পর্যন্ত SARS-CoV-2 নির্ণয়ের সব চেয়ে উপযোগী পদ্ধতি বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। SARS-CoV-2 ভাইরাসে সিঙ্গল লং স্ট্র্যান্ড Ribonucleic Acid বা RNA থাকে। RT-PCR টেস্ট সেই RNA টিকেই চিহ্নিত করে। এ ক্ষেত্রে নাক, মুখের সোয়াব বা স্যালাইভা থেকে স্যাম্পেল কালেক্ট করা হয়। এই পরীক্ষাও দু'রকমের হয়। একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া, আরেকটি একটু তাড়াতাড়ি হয়।


•ন্যানো PCR টেস্ট (Nano PCR)-RT-PCR টেস্টের কিছু সমস্যা আছে। একটু সময় বেশি লাগে। খুব সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা একটি নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন। Nature Biomedical Engineering-এ প্রকাশিত সমীক্ষা অনুযায়ী, এই Nano PCR টেস্টে RT-PCR-এর ঝামেলাগুলো থাকার সম্ভাবনা নেই। একটি পোর্টেবেল ডিভাইজেই এই পরীক্ষাটি করা হবে, যার প্রাথমিক ধাপটি RT-PCR-এর মতোই।


•করোনার পরীক্ষায় Thermocycling পদ্ধতি ব্যবহার করে RNA-কে বর্ধিত করা হয় বা বাড়ানো হয়। যার জন্য প্রয়োজন পড়ে হিট বা তাপের। বিজ্ঞানীরা এ ক্ষেত্রে Plasmonic Heating Method ব্যবহার করে থাকেন। যাতে দ্রুত যন্ত্রাংশটি গরম করতে Magnetic Resonance And Vibrations পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।


•এই Nano PCR পদ্ধতিতেও নাক, মুখ ও স্যালাইভা থেকে স্যাম্পেল নেওয়া হয়। মোট ৭৫ জন করোনা-আক্রান্ত রোগী ও ৭৫ জন সুস্থ রোগীর উপরে এই পরীক্ষা করা হয়। এবং পরীক্ষায় দেখা যায়, RNA খুব সঠিক ভাবেই নির্ণয় করা গিয়েছে। এই প্রক্রিয়াটি RT-PCR এর থেকে দ্রুত হয়। আর এই পদ্ধতিটি শুরু করোনা নয়, অন্যান্য ভাইরাস টেস্টের জন্যও ব্যবহার করা যেতে পারে।


•TrueNat- ভারতীয় সংস্থার তৈরি এই TrueNat পদ্ধতি একটি চিপ বেসড, ব্যাটারি চালিত ডিভাইজ। যাতে মাত্র এক থেকে দু'ঘণ্টার মধ্যে RT-PCR পদ্ধতিতে RNA নির্ণয় করা সম্ভব হয়। এটি খুবই নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।


•LAMP test- এই পরীক্ষাটি Real Time Loop Mediated Amplification বা LAMP টেকনোলজির উপরে তৈরি। যাতে করোনাভাইরাস নির্ণয় করা যায়। এটিও একটি ব়্যাপিড টেস্টিং পদ্ধতি। যাতে ৩০ মিনিটের মধ্যে ভাইরাস নির্ণয় করা যায়। এই পদ্ধতিটিকে US Food And Drug Administration’s-এর তরফে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।


•Rapid antigen test- US Food And Drug Administration অনুযায়ী, যদি শরীরে অ্যান্টিজেন (SARS-CoV-2 প্রোটিন) থেকে থাকে, তা হলে এই পদ্ধতিতে তা ধরা পড়ে। পরীক্ষাটি করতে মাত্র ১৫ থেকে ৩০ মিনিট সময় লাগে। তবে, এটি COVID 19 নির্ণয় করতে সব সময় পারে না। অনেক সময়ে ভুল রিপোর্টও আসতে পারে। সাধারণত, Rapid Antigen টেস্ট করার পর আবার RT-PCR টেস্ট করে নিশ্চিত হয়ে নেওয়া যায়।