*করোনামুক্ত বাম চিকিৎসক নেতা ফুয়াদ হালিম। নতুন করে কোনওরকম শারীরিক সমস্যা না হওয়ায় রবিবার তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আপাতত বাড়িতে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে তাঁকে। জ্বর, শ্বাসকষ্ট নতুন করে না হওয়ায় তাকে রবিবার দুপুরে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়। সম্পূর্ণ বিশ্রামের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। সংগৃহীত ছবি।
*লকডাউনের দীর্ঘ সময় এবং আনলকের সময়ও প্রতিনিয়ত অসংখ্য রোগী দেখেছেন ফুয়াদ হালিম। এরপরই গত কয়েকদিন আগেই তাঁর শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। পরপর দু’বার তিনি করোনা পরীক্ষা করান। দু’বারই রিপোর্ট নেগেটিভ আসে, তারপরেও তাঁর শ্বাসকষ্ট হওয়ায় চেষ্ট এক্স–রে করা হয়। সিটি স্ক্যান–সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। সেখানেই ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপরই তাঁকে সোমবার মিন্টো পার্কের বেলভিউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রাহুল জৈনের তত্ত্বাবধানে।
*এরপর হাসপাতালে তার আরও দু-বার করোনা পরীক্ষা করা হয়, সেই দুবারই রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। চিকিৎসকরা তাও নিশ্চিত হওয়ার জন্য পঞ্চমবার করোনা পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেয়। আর সেই রিপোর্ট বৃহস্পতিবার রাতে পজেটিভ আসে। অর্থাৎ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন চিকিৎসক ফুয়াদ হালিম। তবে এরই সঙ্গে তার ভাইরাল নিউমোনিয়া চিহ্নিত করেন চিকিৎসকরা।
*ফুয়াদ হালিম। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার প্রবাদপ্রতিম টানা ২৯ বছরের স্পিকার সিপিএম নেতা আব্দুল হালিমের পুত্র। নিজেও সিপিএম দলের সদস্য। গত লোকসভা নির্বাচনে হেভিওয়েট ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্র থেকে সিপিএমের হয়ে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন আর বিপুল ভোটে তৃণমূলের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে হেরেছিলেন। তাতে কী? তিনি যে হার না মানা এক চিকিৎসক। তাই রাজনৈতিক পরাজয় মানুষের কাছ থেকে তাঁকে দূরে সরিয়ে দেয়নি। বরং গরিবের জন্যে ভাবনা বেড়েছে তাঁর। করোনা-লকডাউন বিধ্বস্ত এক রাজ্যের রাজধানী শহরে বসে চিকিৎসক, ফুয়াদ হালিম তাঁর নিজস্ব হাসপাতালে মাত্র ৫০ টাকায় সাধারণ মানুষের ডায়ালিসিস করার ব্যবস্থা করেছেন।
*১২ বছর আগে ফুয়াদ হালিম, তাঁর পরিবার, দেশ বিদেশে ছড়িয়ে থাকা বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে পার্ক স্ট্রিটের পাশের কিড স্ট্রিটের এমএলএ হোস্টেলের বিপরীতে বাড়ির পাশেই হাসপাতাল গড়েন। কলকাতা স্বাস্থ্য সংকল্প। মূলত গরিবের হাসপাতাল। শুরু হয়েছিল সাড়ে 500 টাকা দিয়ে ডায়ালিসিস করা। পরে কমিয়ে লকডাউনের আগে পর্যন্ত মাত্র ৩৫০ টাকায় ডায়ালিসিস হত এই হাসপাতালে। কিন্তু লকডাউন ঘোষণা হতেই তিনি ভাবেন, যাতায়াতের তেমন সুযোগ কোথায় এখন? আসতে-যেতেই যে অনেক টাকা বেরিয়ে যাবে মানুষগুলোর! সিদ্ধান্ত নেন কমানো হবে ডায়ালিসিসের খরচ।