সোনা, রুপো, প্ল্যাটিনাম ছাড়ুন...! আগামী ১০ বছরে সোনার চেয়েও 'দামি' হবে এই 'মেটাল', নাম শুনলেই চমকাবেন!

'সোনা', এই একটি ধাতু দেখলেই যেমন লাফিয়ে ওঠেন মহিলারা ঠিক তেমনই ভারতীয় ঐতিহ্যে এই সোনাকে শুভ ধাতু হিসেবেও গণ্য করা হয়ে এসেছে প্রাচীন কাল থেকে। বলতেই বলে সোনায় সোহাগা! আসলে সোনার মতো ধাতু আর দ্বিতীয় নেই। তাই সব ধাতুর মধ্যে সেরা এই ধাতুটি।

ভারতীয় ঐতিহ্যে সোনার কদর অন্য সব ধাতুকে এককথায় টেক্কা দিয়ে আসছে সেই প্রাচীন কাল থেকেই। বিয়ে থেকে উপনয়ন, সবেতেই তাই ভারতীয়দের সোনা ছাড়া চলে না! সোনার গয়না হোক বা শুভ কাজে ধর্মীয় উপাচারে সোনার ব্যবহার, সবেতেই এই ধাতুকে উঁচু আসনেই রেখে এসেছেন ভারতীয়রা।

কিন্তু কেমন হয় যদি বাজারে এমন একটি ধাতু এসে হাজির হয় যা আপনার আমার চেনা, আর যদি জানা যায় যে সেই ধাতুই নাকি সোনার চেয়েও দামি হতে চলেছে?

অবাক হয়ে যাচ্ছেন? তবে শুনুন, বলা হচ্ছে, আগামী ১০ বছরে এই ধাতুর চাহিদা হতে চলেছে সোনার চেয়েও বেশি। যদিও এটি দেখতে রুপোর মতো, তবুও এখনও এর দাম সোনার তুলনায় অনেক গুণ কম বলেই জানা গিয়েছে।

অগাস্টের শুরু থেকেই সোনার দাম ওঠানামা করছে, গতকাল, সোমবার সপ্তাহের প্রথম দিন অর্থাৎ ১১ অগাস্ট ২২ ক্যারেটের সোনার গয়না প্রতি গ্রাম ৯,৩৭৫ টাকায় এবং একটি স্পাইরাল ৭৫,০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

প্রসঙ্গত জেনে রাখা ভাল যে পিতল, রূপা এবং অ্যালুমিনিয়ামের মতো ধাতুতে ব্যবহৃত জিঙ্কের ব্যবহার ভারতে দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

আন্তর্জাতিক জিঙ্ক অ্যাসোসিয়েশন (আইজেডএ) জানিয়েছে, আগামী ১০ বছরে ভারতে জিঙ্কের ব্যবহার ১.১ মিলিয়ন টন থেকে ২০ লক্ষ টন বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

জিঙ্ক কলেজ ২০২৪-এ বক্তব্য রাখতে গিয়ে আইজেডএ-র ডিরেক্টর অ্যান্ড্রু গ্রিন বলেন, "ভারতে জিঙ্কের ব্যবহার এবং চাহিদা ১.১ মিলিয়ন টন। এটি ভারতের বর্তমান উৎপাদনের চেয়েও অনেক বেশি।

শুধু তাই নয়, তিনি বলেন, আগামী ১০ বছরে এটি ২০ লক্ষ টনে পৌঁছনোর সম্ভাবনা রয়েছে। এর বিশেষ দিক হল জিঙ্কের ব্যবহার সোনার তুলনায় বহুগুণ বেশি। উল্লেখযোগ্য যে ভারতে সোনার ব্যবহার প্রতি বছর ৭০০ টনেরও বেশি।"

অ্যান্ড্রু গ্রিন বলেন, প্রাথমিক উৎপাদনের উপর ভিত্তি করে বিশ্বব্যাপী বর্তমানে জিঙ্ক বাজার প্রতি বছর ১৩.৫ মিলিয়ন টন। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, মাথাপিছু জিঙ্ক ব্যবহারের ক্ষেত্রে, বিশ্বব্যাপী গড় জিঙ্কের ব্যবহার ভারতের ব্যবহারের তুলনায় চার থেকে পাঁচ গুণ বেশি।

IZA-এর দায়িত্বে থাকা ডিরেক্টর বলেন, বৈশ্বিক মান পূরণের জন্য এই মুহূর্তে দেশে জিঙ্কের ব্যবহার বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।

এই মুহূর্তে বৈশ্বিক অটোমেশন শিল্পের ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ গ্যালভানাইজড ইস্পাতের অবদান রয়েছে। ভারতে, জিঙ্ক, যা ইস্পাতকে মরচে পড়া থেকে রক্ষা করে, তার ব্যবহার মাত্র ২৩ শতাংশ।

গ্রিন, যিনি গ্যালভানাইজড রিবারের মান নির্ধারণের জন্য বর্তমানে সরকারের সঙ্গে কথা বলছেন, তিনি বলেন, সৌরশক্তি প্রয়োগে জিঙ্কের চাহিদা বিশ্বব্যাপী ৪৩ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে বায়ুশক্তি খাতে দ্বিগুণ হবে এই ধাতুর চাহিদা যা সব রেকর্ডকে ছাড়িয়ে যাবে।