Buying House vs Staying on Rent: ৫০ লাখ টাকার বাড়ি কিনবেন না কি ভাড়াবাড়িতে থাকাই ভাল? উত্তর জানলে অবাক হবেন !
- Published by:Dolon Chattopadhyay
- Written by:Trending Desk
Last Updated:
Buying House vs Staying on Rent: ফ্ল্যাট কিনবেন, নাকি ভাড়াবাড়িতেই থাকবেন—এই প্রশ্নে অনেকেই দ্বিধায় পড়েন। ৫০ লাখ টাকার ফ্ল্যাটের ইএমআই, রক্ষণাবেক্ষণ খরচ ও ট্যাক্স ছাড় মিলিয়ে কোনটা লাভজনক? বিশ্লেষণ দেখে চমকে উঠবেন।
প্রত্যেক মানুষের স্বপ্ন হল, একদিন নিজের একটি বাড়ি হবে। বেশিরভাগ চাকরিজীবী ব্যক্তি তাঁদের সমস্ত সঞ্চয় ব্যয় করে থাকেন নিজের বাড়ি কেনার জন্য। শুধু তাই নয়, তাঁরা ২০-৩০ বছর ধরে একনাগাড়ে ইএমআই পরিশোধ করতে হলেও হোম লোন নিয়ে থাকেন এবং এর ফলে ঋণ পরিশোধে তাঁদের জীবনের অর্ধেকেরও বেশি সময় ব্যয় হয়ে যায়। এখন এমন পরিস্থিতিতে একটি প্রশ্ন ওঠে যে আসলেই কি বাড়ি কেনা উচিত?
advertisement
প্রত্যেক মানুষের স্বপ্ন হল, একদিন নিজের একটি বাড়ি হবে। বেশিরভাগ চাকরিজীবী ব্যক্তি তাঁদের সমস্ত সঞ্চয় ব্যয় করে থাকেন নিজের বাড়ি কেনার জন্য। শুধু তাই নয়, তাঁরা ২০-৩০ বছর ধরে একনাগাড়ে ইএমআই পরিশোধ করতে হলেও হোম লোন নিয়ে থাকেন এবং এর ফলে ঋণ পরিশোধে তাঁদের জীবনের অর্ধেকেরও বেশি সময় ব্যয় হয়ে যায়। এখন এমন পরিস্থিতিতে একটি প্রশ্ন ওঠে যে আসলেই কি বাড়ি কেনা উচিত?
advertisement
অনেকেই বলবেন যে বাড়ি কেনার একটা আবেগগত মূল্য আছে। কথাটা নেহাত মিথ্যাও নয়। নিজের একটা বাড়ি থাকা কোথাও একটা গিয়ে যেন জোর দেয়। ভাড়া বাড়িতে থাকা অন্য দিকে তৈরি করে দেয় একটা হীনম্মন্যতা। এই আবেগগত দিক থেকেই কিন্তু শুরু হয় পার্সোনাল ফিনান্সের হিসেব। শুরু হয় টাকা গোনা, হোম লোন নেওয়া। হিসেব যদি আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়, তাহলে নিজের বাড়ি এক সম্পদের মধ্যে পড়ে, তা বিক্রি করে এককালীন মোটা অঙ্কের টাকা উপার্জন করা যেতে পারে প্রয়োজন হলে। অথবা ভাড়া দিয়ে মাসে মাসে ব্যয়নির্বাহের সুরাহাও করা যায়। ভাড়া বাড়ি এই সব সুবিধা দেয় না।
advertisement
প্রতিদিন এই কারণেই সোশ্যাল মিডিয়ায় বাড়ি কেনা উচিত না কি ভাড়ায় বসবাস করা উচিত তা নিয়ে বিতর্ক চলছে। বিভিন্ন ব্যক্তিকে বিভিন্ন পরামর্শ দিতে দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ বিশ্বাস করেন যে, বাড়ি কেনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, আবার কেউ কেউ বাড়িকে বোঝা হিসেবে বিবেচনা করেন। বিশেষ করে যখন এটি হোম লোন নিয়ে তা কিনতে হয়। তাই এক নজরে দেখে নেওয়া যাক যে, আমাদের বাড়ি ক্রয় করা উচিত না কি ভাড়ায় বসবাস করারও কোনও বিশেষ সুবিধা আছে।
advertisement
প্রথমে বুঝতে হবে কাদের বাড়ি কেনা উচিত এবং কখন কেনা উচিত-বাড়ি কেনার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এটি কেনার জন্য নিজেদের কাছে টাকা থাকা উচিত অথবা হোম লোনের ইএমআই পরিশোধ করার জন্য জোর থাকা উচিত। যদি কেউ এই শর্তটি পূরণ করেন, তাহলে দ্বিতীয় যে জিনিসটি পরীক্ষা করা উচিত তা হল, এটি নিজেদের প্রথম বাড়ি কি না, না কি কেবল বিনিয়োগের কথা ভাবা হচ্ছে। কেউ যদি জীবনযাপনের জন্য একটি বাড়ি কিনতে চান, তাহলে অবশ্যই একটি বাড়ি কেনাই উচিত হবে। তবে, যতটা সম্ভব কম হোম লোন নেওয়ার চেষ্টা করা উচিত এবং পরিশোধের সময়কালও কম হওয়া উচিত। ঋণ পরিশোধের সময়কাল যত কম হবে, তত কম সুদ দিতে হবে।
advertisement
হিসেব বুঝতে হবে -ধরে নেওয়া যাক যে, কেউ ২০ বছরের জন্য হোম লোন নিয়েছেন এবং ৫০ লাখ টাকার একটি বাড়ি কিনছেন। সেক্ষেত্রে, কমপক্ষে ২০% অর্থাৎ ডাউন পেমেন্টের জন্য ১০ লাখ টাকা প্রয়োজন হবে। বাকি ৪০ লাখ টাকা ব্যাঙ্ক থেকে হোম লোন হিসেবে নেওয়া যেতে পারে। ধরে নেওয়া যাক কেউ ৯% হারে হোম লোন পাবে। এখন আমাদের এটাও মনে রাখতে হবে যে, কম EMI হওয়া উচিত। সেক্ষেত্রে, শুধুমাত্র ২০ বছরের জন্য EMI রাখার চেষ্টা করতে হবে। এই ক্ষেত্রে, EMI হবে প্রায় ৩৫,৯৮৯ টাকা।
advertisement
এইভাবে, ২০ বছরে হোম লোনের EMI-তে মোট ৮৬,৩৭,৩৬০ টাকা পরিশোধ করতে হবে, যার মধ্যে ৪৬,৩৭,৩৬০ টাকা কেবল সুদ। এই সময়ের মধ্যে হোম লোনের সুদের হার একই থাকলেও এটি ঘটবে। এর পাশাপাশি, এই ২০ বছরে বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের জন্যও অর্থ ব্যয় করতে হবে। ধরে নেওয়া যাক যে, প্রতি মাসে গড়ে ২০০০ টাকা ব্যয় করতে হবে। এই ব্যয়গুলিও প্রতি বছর ৬-৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে। যদি আমরা সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ হার দেখি, তাহলে ২০ বছরে কেবল রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রায় ১২ লাখ টাকা ব্যয় করতে হবে। এইভাবে, ডাউন পেমেন্ট (১০ লাখ টাকা), ঋণের পরিমাণ (৮৬,৩৭,৩৬০ টাকা) এবং বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ (১২ লাখ টাকা) সহ, ২০ বছরে একটি বাড়ির উপর মোট বিনিয়োগ প্রায় ১,০৮,৩৭,৩৬০ টাকা অর্থাৎ প্রায় ১.০৮ কোটি টাকা হয়ে যায়।
advertisement
advertisement
এটিও মনে রাখতে হবে -বাড়ির দাম ছাড়াও, অন্য কিছু চার্জও দিতে হবে। বাড়ির দামের ১ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ৫০ হাজার টাকা রেজিস্ট্রেশন চার্জ হিসেবে দিতে হবে। এছাড়াও, ৪-৬ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ২-৩ লাখ টাকা স্ট্যাম্প ডিউটি হিসেবে দিতে হবে। তাই মোট ২.৫ থেকে ৩.৫ লাখ টাকা লাগবে। আলাদাভাবে এর ব্যবস্থা করতে হবে, এটি হোম লোনের অংশ নয়।
advertisement
কে ভাড়ায় বসবাস করতে পারেন -যদি কারও চাকরি বা আয় স্থিতিশীল না হয়, তাহলে বাড়ি কেনার কথা মোটেও ভাবা উচিত নয়। তাঁদের ভাড়ায় বসবাস করা উচিত। কারণ যে বেতনই পাওয়া হোক না কেন, প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট EMI দিতে হবে। অন্য দিকে, যদি কারও চাকরি এমন হয় যে ঘন ঘন শহর পরিবর্তন করতে হয়, তাহলে ভাড়ায় বসবাস করা তাঁর জন্য ভাল, অন্যথায় নিজের বাড়ির EMI এবং অন্য শহরে বসবাসের জন্য ভাড়াও দিতে হবে। মোদ্দা কথা, যদি অল্প সময়ের জন্য দরকার হয়, তাহলে বাড়ি না কেনার কথাই বিবেচনা করা উচিত।
advertisement
এর হিসেব বুঝতে হবে -কেউ যদি ভাড়ায় থাকেন, তাহলে দিল্লি-এনসিআরের মতো জায়গায় প্রতি মাসে প্রায় ১৫-২০ হাজার টাকা ভাড়া দিতে হবে। ধরে নেওয়া যাক যে, যদি ১বিএইচকে বা সস্তা বাড়িতে থাকা হয়, তবুও প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ করতে হবে। এভাবে বছরে প্রায় ১.৮ লক্ষ টাকা দিতে হবে। প্রতি বছর প্রায় ১০ শতাংশ হারে ভাড়া বাড়বে। এমন পরিস্থিতিতে, ২০ বছরে মাত্র ভাড়ায় প্রায় ১ কোটি টাকা খরচ হবে।
advertisement
বাড়ি না কিনে কত সম্পদ অর্জন করা যেতে পারে -অন্য দিকে, বাড়ি না কিনে ১০ লাখ টাকা ডাউন পেমেন্ট সাশ্রয় করা যাবে। শুধু তাই নয়, কোনও রেজিস্ট্রেশন চার্জ বা স্ট্যাম্প ডিউটি দিতে হবে না, যা প্রায় আড়াই-তিন লক্ষ টাকা হবে। সুতরাং মোট প্রায় ১৩ লাখ টাকা সাশ্রয় হবে, যা প্রথম দিন থেকেই স্টক মার্কেট বা মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করা যেতে পারে। এতে গড়ে ১২ শতাংশ সুদ পাওয়া যাবে। এইভাবে, সেই ১৩ লাখ টাকা ২০ বছরে প্রায় ১.২৫ কোটি টাকা হয়ে যাবে।
advertisement
কেউ প্রতি মাসে ৩৬,০০০ টাকার EMI দিয়ে SIP করতে পারেন, যা ৪০ লাখ টাকার হোম লোন নিয়ে পরিশোধ করতে হত। ধরে নেওয়া যাক যে, কেউ ২০ বছরে এতেও প্রায় ১২ শতাংশ রিটার্ন পাবেন। এই ক্ষেত্রে, ২০ বছর পরে সেই টাকা ৩,৫৯,৬৯,৩২৫ টাকা (প্রায় ৩.৬০ কোটি টাকা) হয়ে যাবে। অন্য দিকে, ১৩ লাখ টাকার এককালীন বিনিয়োগ করে ২০ বছরে প্রায় ১.২৫ কোটি টাকা আয় করা যেতে পারে। এইভাবে, কেউ যদি বাড়ি না কিনে টাকাটি এভাবে বিনিয়োগ করেন, তাহলে ২০ বছর পর নিজেদের মূলধন হবে ৪,৮৪,৬৯,৩২৫ টাকা (প্রায় ৪.৮৫ কোটি টাকা)।
advertisement
তাহলে বাড়ি কেনা উচিত না কি ভাড়ায় থাকা উচিত -ধরে নেওয়া যাক যে কেউ ২০ বছর পর নিজের বাড়ি বিক্রি করছেন এবং এই সময়ের মধ্যে এর দাম প্রতি বছর প্রায় ৭-৮ শতাংশ হারে বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে, সেই বাড়ি প্রায় ২.৫ কোটি টাকায় বিক্রি হবে। একই সঙ্গে, ২০ বছরে সেই বাড়ির পিছনে সমস্ত চার্জ এবং রক্ষণাবেক্ষণ সহ প্রায় ১.০৮ কোটি টাকা ব্যয় হবে। তাহলে ২০ বছর পর প্রায় ১.৫ কোটি টাকা লাভ হবে। অন্য দিকে, কেউ যদি বাড়ি না কিনে সমস্ত অর্থ মিউচুয়াল ফান্ডের SIP-তে বিনিয়োগ করতে থাকেন, তাহলে ২০ বছর পর সেই টাকা ৪.৮৫ কোটি টাকা হয়ে যাবে। এর থেকে, যদি কেউ ২০ বছরে ভাড়ার জন্য ব্যয় করা মাত্র ১ কোটি টাকা বাদ দেন, তাহলে নিজের কাছে প্রায় ৩.৮৫ কোটি টাকা অবশিষ্ট থাকবে। এখন এই হিসাব দিয়ে যে কেউ নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন যে, তিনি বাড়ি কিনতে চান না কি ভাড়ায় থাকতে চান!
