West Midnapore News: ২০০ বছরেরও বেশি আগে রানি শিরোমণি ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ধরেছিলেন অস্ত্র, চুয়াড় বিদ্রোহের নেত্রীকে মনে রাখেনি ইতিহাস
- Published by:Arpita Roy Chowdhury
- hyperlocal
- Written by:Bangla Digital Desk
Last Updated:
West Midnapore News: রানি শিরোমনি বীরগাথা ইতিহাসকে পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্তের দাবি ইতিহাস গবেষকদের
রঞ্জন চন্দ, মেদিনীপুর: বিপ্লবের মাটি মেদিনীপুর। এই মাটিতেই জন্মেছেন একাধিক বিপ্লবী। হেমচন্দ্র কানুনগো, ক্ষুদিরাম বসু-সহ নানা বিপ্লবী জীবন নিবেদন করেন সশস্ত্র বিপ্লবে। তবে মেদিনীপুরের বিপ্লবের মাটিতে কান পাতলে শোনা যায় রানী শিরোমণির কথাও। আজকের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনি বিধানসভার কর্ণগড়ই ছিল তাঁর কর্মভূমি।
এই কর্ণগড়েই জন্ম হয়েছিলেন বীরাঙ্গনা রানি শিরোমণির। যিনি ভারতবর্ষের প্রথম সশস্ত্র আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন ইংরেজদের বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র আন্দোলন চুয়াড় বিদ্রোহের নেত্রী। তবে আজ তাঁকে কেউ মনে রাখেনি। ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাঈয়ের জন্ম ১৮২৮ সালে। তাঁর জন্মের ১০ বছর আগে মৃত্যুবরণ করেন বিদ্রোহী রানি শিরোমণি। অথচ হারানো ইতিহাসে কান পাতলে শোনা যায় শিরোমণি মানেই ‘মেদিনীপুরের লক্ষ্মীবাঈ’।
advertisement
কেশরী বংশের রাজা ইন্দ্রকেতু কর্ণগড় রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর উত্তরসূরি নরেন্দ্রকেতু রাজ্যের দায়ভার তুলে দেন লোধা সর্দার রণবীর সিংহের হাতে। অপুত্রক রাজা ভবিষ্যতের শাসক হিসেবে দত্তক নেন জনৈক মাঝি অভয়ার পুত্রকে। উত্তরসূরী রাজা অজিত সিংহের মৃত্যুর পরে রাজ্য পরিচালনার দায়িত্বভার তুলে নেন দ্বিতীয় রানি শিরোমণি।
advertisement
টিলার উপরে মাকড়া পাথর ও পোড়া ইটের রাজপ্রাসাদ হয়ে উঠল বিপ্লবের আঁতুড়ঘর। বিপ্লবের জন্য ব্যয় করতে থাকেন দু’হাত উজাড় করে। হয়ে ওঠেন নেত্রী। মূলত এই কৃষক বিদ্রোহকে ইংরেজরা হেয় করার জন্য নাম দিল ‘চুয়াড় বিদ্রোহ’।দাউ দাউ করে জ্বলছে বিপ্লবের আগুন। ১৭৯৮ সালে প্রায় ৪০০ ‘চুয়াড়’ তাঁদের তির-ধনুক, বল্লম, লাঠি, আগুন নিয়ে লুঠ করতে শুরু করল সরকারি অফিস, গুদামঘর।
advertisement
বিদ্রোহ দমন করতে এসে বিনা খাদ্য, জলে বন্দি হয় ইংরেজবাহিনী। এদিকে কালেক্টরেট থেকে খবর গিয়েছে কোম্পানিতে। মেদিনীপুরে আসতে শুরু করেছে ইংরেজ সেনাবাহিনী। রানির কাছে পৌঁছল সেই খবর। গোলা, বারুদ, বন্দুক নিয়ে ইংরেজ সৈন্য ঘিরে ফেলেছে দুর্গ। সুড়ঙ্গ দিয়ে কর্ণগড় থেকে আবাস-গড়ে যাওয়ার পথে বন্দি করা হল রানিকে। সময়টা ১৭৯৯ সালের ৬ এপ্রিল।
advertisement
জনদরদী রানিকে বন্দি করে নিয়ে আসা হয় আবাসগড়ে। পরদিন কলকাতায়। প্রিভি কাউন্সিল থেকে আদেশ এল যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের। নাড়াজোলের রাজা আনন্দলাল খানের মধ্যস্থতায় শিরোমণি গৃহবন্দি থাকলেন আবাসগড়ে।
১৮১২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন জনগণের দেবী। গৃহবন্দি থাকা অবস্থায় তাঁর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়? না কি গুপ্তহত্যা? সেই প্রশ্ন আজও তোলে মেদিনীপুরবাসী।এখনও বিপ্লবের ইতিহাস বহন করে চলেছে শিরোমণি গড়ের ধ্বংস স্তুপ। অধুনা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কর্ণগড়ের গড়ে সৌন্দর্যায়ন হচ্ছে জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে। উদ্যোগী স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
advertisement
তারই মধ্যে সরকারের কাছে ইতিহাসবিদদের একাংশের দাবি উঠেছে সৌন্দর্যায়নের পাশাপাশি রাণী শিরোমণির বীরগাথা ইতিহাসে পড়ুক ছেলে মেয়েরা। পাঠ্যবইয়ে স্থান পাক এই বীরাঙ্গনার ইতিহাস।
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
May 17, 2023 4:58 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/পশ্চিম মেদিনীপুর/
West Midnapore News: ২০০ বছরেরও বেশি আগে রানি শিরোমণি ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ধরেছিলেন অস্ত্র, চুয়াড় বিদ্রোহের নেত্রীকে মনে রাখেনি ইতিহাস