Independence Day 2025: সামান্য ভুলে রক্ষা ব্রিটিশ শাসকের, গায়ে কাঁটা দেয় অবিভক্ত মেদিনীপুরে রাতের অন্ধকারে বিপ্লবীদের মাইন বসানোর অভিযান
- Published by:Arpita Roy Chowdhury
- local18
- Written by:Bangla Digital Desk
Last Updated:
Independence Day 2025: ট্রেনে করে ফিরছিলেন ছোটলাট, প্রাণে মেরে ফেলার পরিকল্পনা বিপ্লবীদের, জেলার এই জায়গায় প্রথম বিস্ফোরণ ঘটান বিপ্লবীরা।
পশ্চিম মেদিনীপুর, রঞ্জন চন্দ: ভারতবর্ষে তখন চলছে ব্রিটিশ শাসন। ব্রিটিশ হঠাতে দিকে দিকে তৈরি হচ্ছে যুবসমাজ। বারীন ঘোষ, উল্লাস কর দত্ত, প্রফুল্ল চাকীর মত যুবকরা ব্রিটিশ তাড়াতে নিজেদের সংগঠিত করছে। কখনও গুলি চালান, কখনও আবার রেললাইন উড়িয়ে দেওয়ার মতো পরিকল্পনা নিয়েছেন তাঁরা। জেলার ঠিক এই জায়গায় রেললাইনে পাতা হয়, মাইন। লুকিয়ে থাকেন বিপ্লবীরা। ট্রেন আসতেই হয় বিস্ফোরণ। তবে তেমন কার্যসিদ্ধি হয়নি বিপ্লবীদের।তবে এখানে এখন বোমা গুলির শব্দ নেই, নেই ব্রিটিশ হটানোর প্রাণপণ লড়াই। নামও পরিবর্তিত হয়েছে রেলপথের। যে পথে ইংরেজ সাহেবকে মারতে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিলেন বীর বিপ্লবীরা, সেই পথ দিয়ে এখন চলে দূর পাল্লার নানা এক্সপ্রেস থেকে পণ্যবাহী ট্রেন।
তবে জানেন, পরাধীন ভারতবর্ষে সাহেব মারতে বাংলায় প্রথম বোমা বিস্ফোরণ ঘটেছিল মেদিনীপুরের নারায়ণগড়ে? পরাধীন ভারতে এক শীতের ডিসেম্বরে ইংরেজ সাহেবকে মারতে বোমা বিস্ফোরণ করেন বীর বিপ্লবীরা। বিপ্লবের ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, বঙ্গপ্রদেশে প্রথম বোমা বিস্ফোরণ ঘটেছিল মেদিনীপুরেই। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, নারায়ণগড়ে। বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিলেন পরাধীন ভারতবর্ষের বিপ্লবীরা। ঘটনা ১৯০৭ সালের ৬ ডিসেম্বরের। অত্যাচারী শাসক অ্যান্ড্রু ফ্রেজার-এর ট্রেন এই পথ ধরে আসার খবর পেয়ে রেললাইনে পাতা হয় মাইন। এই দিনেই রাতের ট্রেনে ওড়িশার দুর্ভিক্ষ পীড়িত এলাকা পরিদর্শন করে ফিরছিলেন তৎকালীন ছোটলাট ফ্রেজার। যিনি বিপ্লবীদের চোখে অত্যাচারী, বঙ্গভঙ্গে লর্ড কার্জনের পরামর্শদাতা তথা মূল কারিগর হয়ে উঠেছিলেন।
advertisement
তাই বিপ্লবীদের কাছে চক্ষুশূল হয়ে উঠেছিলেন এই ইংরেজ সাহেব। তাঁকেই বিপ্লবীরা দণ্ড দিতে প্রস্তুত হন। আগেও ব্যর্থ হয়েছেন বিপ্লবীরা। এ বার যেন বিফল না হয়। প্রতিজ্ঞা করেছেন গুপ্ত সমিতির বিপ্লবীরা। তাই সচেতনভাবে, সবদিকে নজর দিয়ে এবং সন্তর্পণে ৬ ডিসেম্বর রাতে রেললাইনে পোঁতা হল বোমা।
advertisement
বঙ্গ প্রদেশে ব্রিটিশ শাসক হত্যায় কলকাতার গুপ্ত সমিতির উদ্যোগ ও মেদিনীপুরের গুপ্ত সমিতির সহযোগিতায় এই দুঃসাহসিক কাজে যুক্ত ছিলেন বারীন্দ্রনাথ ঘোষ তথা বারীন ঘোষ, বিভূতি সরকার এবং পরবর্তীতে কিংসফোর্ডকে হত্যার কাজে নিযুক্ত ক্ষুদিরামের সহযোগী প্রফুল্ল চাকি। এই কাজে আরও একজন বিপ্লবী পূর্ণচন্দ্র সেনের উপর দায়িত্ব থাকলেও খড়্গপুর পর্যন্ত এসে তাঁকে ফিরে যেতে হয়। বারীন তাঁর আলিপুর বোমা মামলার স্বীকারোক্তিতে বলেছিলেন, দু’জনকে পাহারায় বসিয়ে তিনি নিজেই মাইন পুঁতেছিলেন। যাতে সবটা নিঁখুতভাবে হতে পারে। জেলার অন্যতম বিপ্লবী হেমচন্দ্র কানুনগো তখন প্যারিসে। বোমা তৈরির কৌশল আয়ত্ত করার কাজ শেষ করে ফেরার আগে পর্যন্ত বোমা তৈরির কারবারে তখন যুক্ত ছিলেন উল্লাস কর দত্ত। তাঁর তৈরি বোমা আনা হয়েছিল মেদিনীপুর তথা নারায়ণগড়ে।
advertisement
আরও পড়ুন : মাইনে নেন না এক পয়সা, অবসরের পরও পড়িয়ে চলেছেন ‘দাদু স্যার’
খড়গপুর থেকে ওড়িশাগামী বেঙ্গল নাগপুর রেলওয়ে যা বর্তমানে দক্ষিণ পূর্ব রেলওয়ে শাখা, সেই শাখার নারায়ণগড় স্টেশনের কাছেই রেললাইনের নীচে পোঁতা হয় ডিনামাইট বোমা। উল্লাস কর দত্তের প্রস্তুত ডিনামাইট বোমাটি নারায়ণগড় স্টেশনের অল্প দূরে রেললাইনের নীচে বসান বিপ্লবীরা। তবে বিপ্লবীদের সামান্য ভুলে অত্যাচারী এই শাসক প্রাণে বেঁচে যান।
advertisement
তবে বিপ্লবীদের সেই স্মৃতি আজও দগদগে নারায়ণগড়ের এই এলাকায়।বাংলায় বিস্ফোরণের সেই প্রথম স্মৃতিকে ধরে রাখতে রেল লাইনের ধারে ডহরপুর শবরপল্লিতে ১৯৭২ সালের ৬ ডিসেম্বর স্মৃতিস্তম্ভ গড়েছেন প্রবোধকুমার ভৌমিক। উদ্বোধন করেছিলেন বিপ্লবী ভূপতি মজুমদার। আজও স্মৃতিস্তম্ভ সেই স্মৃতিকে জাগিয়ে রেখেছে। তবে সেই ঐতিহাসিক ডিসেম্বরে স্মৃতি আজও টাটকা মেদিনীপুরের ইতিহাসে।
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
August 06, 2025 5:02 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/পশ্চিম মেদিনীপুর/
Independence Day 2025: সামান্য ভুলে রক্ষা ব্রিটিশ শাসকের, গায়ে কাঁটা দেয় অবিভক্ত মেদিনীপুরে রাতের অন্ধকারে বিপ্লবীদের মাইন বসানোর অভিযান