Paschim Bardhaman: পরিবেশ দিবস পালন বৃথা! চলছে পরিবেশের সঙ্গে প্রতারণা
Last Updated:
ফলাও করে পরিবেশ দিবস পালন করা হলেও, পরিবেশ নিয়ে এখনও যে বহু মানুষ উদাসীন, তার পরিচয় পাওয়া গেল আবার। শুধুমাত্র আর্থিক লাভের আশায় দুষ্কৃতীরা অবাধে হানা দিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতির ওপর।
পশ্চিম বর্ধমান : ফলাও করে পরিবেশ দিবস পালন করা হলেও, পরিবেশ নিয়ে এখনও যে বহু মানুষ উদাসীন, তার পরিচয় পাওয়া গেল আবার। শুধুমাত্র আর্থিক লাভের আশায় দুষ্কৃতীরা অবাধে হানা দিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতির ওপর। বহুমূল্য গাছ কেটে পাচার করে দেওয়া হচ্ছে শুধুমাত্র অজুহাত দেখিয়ে। সাধারণ মানুষের অসুবিধার অজুহাত দেখিয়ে কেটে দেওয়া হচ্ছে বহু গাছপালা। প্রশাসনের নজর এড়িয়ে এই দুষ্কর্ম চালিয়ে যাচ্ছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এবং পাচারকারীরা। এমনই ছবি উঠে এসেছে পশ্চিম বর্ধমান জেলার রানীগঞ্জে। রানীগঞ্জের অমৃতনগর এলাকায় অসাধু ব্যবসায়ীরা একের পর এক গাছ কেটে পাচার করে দিচ্ছে। যদিও প্রশাসনের নজরে আসতেই শুরু হয়েছে তৎপরতা। পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হচ্ছে। রানীগঞ্জের অমৃতনগর মূলত ধ্বস প্রবন একটি খনি এলাকা। সেখানেই গাছ কেটে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একদল অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। ঝড়-বৃষ্টিতে গাছ পড়ে যেতে পারে, বিদ্যুৎ বিভ্রাট হতে পারে - এই সমস্ত অজুহাত দেখিয়ে কেটে ফেলা হয়েছে একের পর এক গাছ। জানা গিয়েছে, অমৃতনগর এলাকায় বন দফতরের তরফ থেকে মৃত্তিকা ক্ষয় রোধ করতে এলাকায় বনসৃজন করা হয়। কিন্তু বিগত কয়েকদিনে ঝড় বৃষ্টির কারণে কিছু গাছপালার ডাল ভেঙে পড়ে। তারপর থেকেই একদল অসাধু ব্যবসায়ী গাছগুলিকে কেটে পাচার করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় মানুষজন। যদিও তারা নিজেদের নাম প্রকাশ করতে চাননি।
তবে তাদের অভিযোগ, ওই সমস্ত অসাধু ব্যবসায়ীরা নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করতে এই ধরনের অসৎ উপায় অবলম্বন করে পরিবেশকে ধ্বংস করছে। ঝড়-বৃষ্টিতে গাছপালা পড়ে গিয়ে মানুষের অসুবিধা হতে পারে, এমন নজিরবিহীন অজুহাত দেখিয়ে নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, এগারা গ্রাম পঞ্চায়েতের অমৃতনগর কোলিয়ারি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে মৃত্তিকা ক্ষয় রোধ করতে বনবিভাগের তরফ থেকে বনসৃজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বিস্তীর্ণ অংশ জুড়ে কয়েক বছর আগে লাগানো হয় বেশ কিছু গাছ। দীর্ঘ কয়েক বছর আগে লাগানো সেই গাছগুলি বর্তমানে বৃক্ষে পরিণত হয়েছে। স্থানীয় কিছু বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেই সকল গাছগুলির একটি বড় অংশ নির্বিচারে কেটে পাচার করা হচ্ছে। গত কয়েকদিনের কালবৈশাখীর ঝড়ে ভেঙে পড়ার বিষয়কে কাজে লাগিয়ে একশ্রেণীর পাচার চক্র সেই গাছগুলিকে কেটে তা পাচার করছে বলে অভিযোগ করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার বেশ কিছু বাসিন্দা।
advertisement
আরও পড়ুনঃ এবার দুর্গাপুরেও বসবেন পুলিশ কমিশনার
তাদের দাবি, খনি আবাসনের বিভিন্ন বাড়িঘরে গাছ পড়ে যাওয়ার পর, সেই গাছ সরিয়ে দেওয়ার নাম করে গাছগুলিকে বাইরে পাচার করা হয়েছে। তবে এই অভিযোগ মানতে নারাজ এলাকার এক তৃণমূল নেতার দাবি, ঝড় বৃষ্টির কারণে বেশ কয়েকটি গাছের অংশ স্থানীয় কয়েকটি বাড়িতে পড়েছিল। তাতে ঘরবাড়ির যেমন ক্ষতি হয়েছে, তেমনই বড়সড় বিপদের আশঙ্কা ছিল। বাড়িতে পড়ে যাওয়াতে সেই গাছ কেটে সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গাছ পাচারের অভিযোগ মিথ্যে বলে দাবি করেছেন তিনি। যদিও এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বনবিভাগের আধিকারিক, খনি আধিকারিক ও সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের দফতরের সদস্যরা তদন্তে নেমেছেন।
advertisement
advertisement
আরও পড়ুনঃ দূষিত জলে মাছের মড়ক, দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ মানুষ
তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন বলে খবর। তদন্তে কারোর বিরুদ্ধে অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেলে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু বনসৃজন এলাকায় পৌঁছে দেখা গিয়েছে, বেশ কিছু পুরনো মূল্যবান গাছ ঝড়ে পড়ে না গেলেও, সেসব গাছগুলিকে নির্দ্বিধায় কেটে নেওয়া হয়েছে। স্থানীয়দের অনুমান অসাধু ব্যবসায়ী এবং পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা এই কাজ করেছে। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, এভাবে ঝড় বৃষ্টির নামে শুধুমাত্র অর্থ উপার্জনের জন্য ব্যাপক পরিমাণ বৃক্ষচ্ছেদন করা হয়েছে। যার জেরে এলাকাটি যেকোনো মুহূর্তে বিপদজনক হয়ে যেতে পারে।
advertisement
Nayan Ghosh
Location :
First Published :
June 06, 2022 6:32 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/পশ্চিম বর্ধমান/
Paschim Bardhaman: পরিবেশ দিবস পালন বৃথা! চলছে পরিবেশের সঙ্গে প্রতারণা