সিঙ্গুরে কথা রেখে ফেরালেন জমি, ছড়ালেন বীজ
Last Updated:
দশ বছর বাদে গোপালনগর এলাকায় পা রেখে বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী নিজের হাতে ২৩ জন কৃষককে জমি ফিরিয়ে দেন।
#সিঙ্গুর: দশ বছর বাদে গোপালনগর এলাকায় পা রেখে বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী নিজের হাতে ২৩ জন কৃষককে জমি ফিরিয়ে দেন। এদিন নিজেই জমিতে নেমে সরষে বীজ ছড়ান মুখ্যমন্ত্রী। কৃষকদের হাতে তুলে দেন সরষে কিট। কথা বলেন তাঁদের সঙ্গে। সবমিলিয়ে, বৃহস্পতিবারের সিঙ্গুর ভেসে গেল বিজয়া সম্মিলনী আর হারিয়ে পাওয়ার আনন্দে।
দীর্ঘ ১০ বছরের প্রতীক্ষার অবসান ৷ পড়চা বিলির পর এবার নিজের হাতে সিঙ্গুরের ২৩ জন চাষীকে নিজের হাতে জমি ফিরিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার ২৯৮ জন কৃষকের মোট ১০৩ একর জমি ফিরিয়ে দেওয়ার কথা। এদিন কৃষকদের হাতে সরষে বীজও তুলে দেন তিনি।
পাশাপাশি, গোপালনগর এলাকায় নিজেই মাটিতে নেমে বীজ ছড়ান তিনি। কৃষকদের সঙ্গে কথাও বলেন তিনি। ১০ বছর আগে সিঙ্গুরে জমি অধিগ্রহণ ঘিরে আন্দোলন গড়ে তোলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিঙ্গুরে প্রকল্প তৈরির পর থেকে ভিতরে ঢোকেননি মমতা। এদিন প্রথম সেই জমিতে পা রাখলেন তিনি ৷
advertisement
advertisement
এদিন গোপলনগর মৌজায় তৈরি মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, আগামী ১০ নভেম্বরের মধ্যে ইচ্ছুক-অনিচ্ছুক সব কৃষকদের জমি ফিরিয়ে দেওয়ার হবে ৷ ভূমি সংস্কার আইনানুযায়ী বর্গাদার-ক্ষেতমজুররাও তাদের অংশ পাবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ জমি হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু আগে মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীর ‘মাটি’ কবিতা দিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয় ৷ সিঙ্গুরের মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায় বলেন, ‘৯৯৭ একরের মধ্যে ৬৫ একরে কাজ চলছে ৷ এই ৬৫ একরের মধ্যে ৩৬ একরে রয়েছে কংক্রিটের নির্মাণ ৷ সেই বাদে বাকি সব জমি ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে ৷ মোট ৯৩২ একর জমি চাষযোগ্য করে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে ৷’
advertisement
মঞ্চে এদিন স্মৃতিমেদুর হয়ে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী ৷ সিঙ্গুরে প্রতিশ্রুতি পূরণের লগ্নে তাঁর কণ্ঠে শোনা গেল, ‘মাটিকে ঘিরেই বাঁচার স্বপ্ন ছিল সিঙ্গুরের ৷ সেই স্বপ্নই বাস্তবায়িত হল আজ ৷’
সিঙ্গুরে অধিগৃহীত জমির প্রায় ৮০ শতাংশই চাষযোগ্য করে তোলা হয়েছে। তবে কংক্রিটের জঙ্গলে ঢাকা ৩৬ একর জমিই এখন রাজ্যের কাছে মূল চ্যালেঞ্জ। ওই জমিতে মাটির নিচে কংক্রিট ভাঙার জন্য নকশা পরীক্ষার কাজ চলছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো ১০ নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই জমি ফেরতের কাজ শেষের ব্যাপারে আশাবাদী রাজ্য।
advertisement
২০০৬ সালে সিঙ্গুরে টাটাদের গাড়ি কারখানা তৈরির জন্য ৯৯৭ একর জমির মধ্যে ৬০ শতাংশ জমির মালিক সরকারের প্যাকেজ মেনে নিয়েছিলেন। চেকও নেন তাঁরা। ৪০০ একরের অনিচ্ছুক কৃষকেরা টাকা নেননি। তাঁদের অভিযোগ ছিল, টাটার কারখানার জন্য কেন রাজ্য সরকার বহুফসলি জমি নেবে। কেন অনিচ্ছুকদের জমিও কাড়া হবে। তারপর দীর্ঘ আন্দোলনের ইতিহাস। এদিন সব শেষে পূর্ণতার পালা ৷
view commentsLocation :
First Published :
October 20, 2016 4:31 PM IST