মুণ্ড ছাড়াই দিব্য বেঁচে ছিল এই মুরগি !
Last Updated:
#কলোরাডো:মুণ্ড ছাড়া টানা আঠারো মাস দিব্যি বেঁচেছিল একটা মুরগি! গল্পকথা নয়, এক্কেবারেই বাস্তব!
তবে গোড়া থেকেই শুরু করা যাক! খাবার দোকানে মুরগি সরবরাহর কাজ করতেন কলোরাডোর ফ্রুটা শহরের বাসিন্দা লয়েড ওলসেন ও তাঁর স্ত্রী ক্লারা। ১৯৪৫-এর সেপ্টেম্বর মাস! এক সকালে গোটা চল্লিশেক মুরগি কাটার পর তাঁদের নজর পড়ে, ধড় থেকে মাথা আলাদা হয়ে গেলেও একটি মুরগি টলতে টলতে হেঁটে বেরাচ্ছে! খানিক অবাক হয়েই, মুরগিটিকে মারলেন না! বরং সেটির মৃত্যুর অপেক্ষায়, একটি বাক্সে রেখে দিয়ে ঘুমোতে চলে গেলেন দম্পতি।
advertisement
পর দিন সকালে ঘুম ভেঙে লয়েড, ক্লারা যা দেখলেন, তাতে চোখ কপালে! দিব্য বেঁচে রয়েছে মুরগিটা! দ্রুত খবর ছড়িয়ে পড়ল ছোট্ট শহরে। রাতারাতি মুরগি সেলেব্রিটি। অলৌকিক ভাবে নতুন জীবন পাওয়া মুরগির পোশাকি নাম হয়ে গেল ‘মিরাকল মাইক’।
advertisement
কিন্তু মাথা ছাড়া কী ভাবে বেঁচে রইল মাইক? প্রশ্ন জেগেছিল চিকিত্সক ও প্রাণী বিশেষজ্ঞদের মনে! পরীক্ষা করে দেখা গেল, লয়েড যখন মাইকের মাথায় কোপ মারেন, তখন তার একটা কান বাদ দিয়ে চোখ, ঠোঁট-সহ গোটা মাথাটাই কেটে বাদ চলে যায়। কিন্তু মুরগিদের মাথার পিছনেই থাকে মস্তিষ্কের মূল অংশটা। মাইকের ক্ষেত্রে আশ্চর্যজনক ভাবে বেঁচে যায় তার মস্তিষ্কের ৮০ শতাংশ অংশই।
advertisement
মাইকের মস্তিষ্কের এই অংশটাই তার শ্বাস-প্রশ্বাস, হৃদ্স্পন্দন, খিদে, হজম নিয়ন্ত্রণ করত। সময় মতো মাইকের ক্ষতর কাছে রক্তও জমাট বেঁধে গিয়েছিল, ফলে সে ভাবে রক্তক্ষরণও হয়নি। মাথা না থাকায় একটি ড্রপারে করে তরল খাবার ও জল সরাসরি খাদ্যনালিতে ঢেলে দেওয়া হত। সিরিঞ্জ দিয়ে খাদ্যনালির চার দিকের ময়লা পরিষ্কার করে দিতেন লয়েড। এ ভাবেই সব দিব্যি চলছিল।
advertisement
এক বার পশ্চিম আমেরিকার ফিনিক্স শহরে প্রদর্শনীর শেষে একটি মোটেলে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন লয়েড দম্পতি ও মাইক। হঠাৎই একটা শব্দে দম্পতি চমকে ওঠেন। দম আটকে মাইকের প্রাণ তখন ওষ্ঠাগত। কিন্তু ওই যে সিরিঞ্জ, সেটি প্রদর্শনীতেই ফেলে এসেছিলেন লয়েডরা।
১৯৪৭ সালের মার্চ মাসের সেই রাতে খাবার আটকে মৃত্যু হয় মাইকের।
যদিও মারা গিয়েও বেঁচে ছিল মাইক। তার মনিব দীর্ঘ দিন তার মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যেই আনেননি। কেউ খোঁজ করলেই লয়েডরা বলতেন, বেচে দেওয়া হয়েছে মাইককে। এ ভাবেই মৃত্যুর পরেও বেঁচে ছিল মিরাক্ল মাইকের মিথ।
advertisement
কলোরাডোর ফ্রুটা শহরে গেলে এখন মুণ্ডহীন মুরগির স্ট্যাচুর দেখা মেলে। মাইকের স্মৃতিতে প্রতি বছর মে মাসে পালন হয় ‘হেডলেস চিকেন ফেস্টিভ্যাল’।
Location :
First Published :
November 06, 2018 7:42 PM IST