আসছে চিপ দেওয়া ই-পাসপোর্ট! হতে চলেছে নতুন যুগের সূচনা

Last Updated:

এই তালিকায় ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, মেক্সিকো, ব্রাজিল, ফ্রান্স, ইতালি, জাপান এবং আরও অন্যান্য দেশ। এর ফলে আন্তর্জাতিক ভ্রমণের আধুনিকতায় আসবে বড়সড় আমূল পরিবর্তন।

News18
News18
কলকাতা: অবশেষে ১২০টিরও বেশি দেশের বিশ্বব্যাপী গোষ্ঠীতে আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগ দিল ভারত। এই তালিকায় ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, মেক্সিকো, ব্রাজিল, ফ্রান্স, ইতালি, জাপান এবং আরও অন্যান্য দেশ। এর ফলে আন্তর্জাতিক ভ্রমণের আধুনিকতায় আসবে বড়সড় আমূল পরিবর্তন।
কারণ আনা হচ্ছে চিপ-ভিত্তিক বায়োমেট্রিক ই-পাসপোর্ট। মূলত সীমান্তে সুরক্ষা উন্নত করা, আইডেন্টিটি ফ্রড বা পরিচয়মূলক প্রতারণা প্রতিরোধ করা এবং ভারতীয় নাগরিকদের জন্য অভিবাসন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যেই এই পরিবর্তনমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
ভারতীয় পাসপোর্ট প্রযুক্তির নয়া যুগের সূচনা:
advertisement
পুনর্গঠন করা পাসপোর্ট সেবা প্রোগ্রাম ২.০-র আওতায় ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে দেশ জুড়ে রোল আউট শুরু হয় ভারতের ই-পাসপোর্ট। মূলত নাগপুর, ভুবনেশ্বর, জম্মু, গোয়া, শিমলা, রায়পুর, অমৃতসর, জয়পুর, চেন্নাই, হায়দরাবাদ, সুরাত এবং রাঁচির মতো মূল শহরগুলিতেই এর বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। ২০২৫ সালের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে পুরোপুরি ভাবে তা সম্পন্ন হয়ে যাওয়ার কথা।
advertisement
পরবর্তী-প্রজন্মের এই পাসপোর্টগুলিতে থাকবে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন (আরএফআইডি) চিপ। আর ব্যাক কভারে এম্বেড করা অবস্থায় থাকবে একটি অ্যান্টেনা। আর এই চিপের মধ্যে নিরাপদে থাকবে পাসপোর্টধারীর বায়োমেট্রিক এবং ব্যক্তিহত তথ্য। এর মধ্যে অন্যতম হল – মুখের ছবি, ফিঙ্গারপ্রিন্ট, নাম, জন্মতারিখ এবং পাসপোর্ট নম্বর। বেসিক অ্যাক্সেস কন্ট্রোল (বিএসি), প্যাসিভ অথেন্টিকেশন (পিএ) এবং এক্সটেন্ডেড অ্যাক্সেস কন্ট্রোল (ইএসি)-র মতো আন্তর্জাতিক সিকিউরিটি প্রোটোকলের আওতায় এই তথ্য সম্পূর্ণ রূপে এনক্রিপ্টেড এবং সুরক্ষিত থাকবে।
advertisement
আন্তর্জাতিক ভ্রমণের সংজ্ঞাই যেন বদলে যাবে:
বর্তমানে নিরাপদ এবং নিরবচ্ছিন্ন ভ্রমণের জন্য আন্তর্জাতিক মানদণ্ড হয়ে উঠছে বায়োমেট্রিক ই-পাসপোর্ট। অভিবাসন চেকপয়েন্ট, ই-গেটের মাধ্যমে অটোমেটেড এনেবল এবং কন্ট্যাক্টলেস বর্ডার কন্ট্রোলের ক্ষেত্রে রিয়েল-টাইম অথেন্টিকেশনের অনুমতি দেবে এই এম্বেডেড চিপটি। এই ব্যবস্থার ফলে অপেক্ষার সময় অনেকটাই কমে যাবে। আর ম্যানুয়াল ভেরিফিকেশনের কোনও প্রয়োদন থাকবে না। যা আন্তর্জাতিক ভ্রমণার্থীদের অনেক সুবিধা প্রদান করবে।
advertisement
ই-পাসপোর্ট আনছে ভারত। আর এই পরিবর্তন আসলে ইন্টারন্যাশনাল সিভিল অ্যাভিয়েশন অর্গানাইজেশন (আইসিএও) দ্বারা প্রতিষ্ঠিত সিকিউরিটি স্ট্যান্ডার্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ডিজিটাল ভাবে উন্নত দেশগুলির ভ্রমণার্থীদের সঙ্গে ভারতীয় ভ্রমণার্থীদের যাতে সমকক্ষ করে তোলা যায় এবং বিশ্ব মঞ্চে দেশের বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধি করা যায়, সেটাই এর অন্যতম লক্ষ্য।
কোন কোন দেশের ই-পাসপোর্ট রয়েছে?
ভারতের এই পরিবর্তন বিশ্বব্যাপী প্রবণতার প্রতিফলন। প্রধান দেশগুলি কীভাবে চিপ-এনেবলড পাসপোর্ট কার্যকর করেছে, তা এখানে দেওয়া হল:
advertisement
আমেরিকা:
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র: ২০০৭ সাল থেকে ফেসিয়াল এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট বায়োমেট্রিক্স ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
কানাডা: চালু হয়েছিল ২০১৩ সালে। এটি অটোমেটেড বর্ডার কিয়স্ক সাপোর্ট করে।
মেক্সিকো: সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করার জন্যই চালু হয়েছিল ২০২১ সালে।
ব্রাজিল, আর্জেন্তিনা, চিলি, কলম্বিয়া, পেরু: ২০১০ সাল থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে রোল আউট করা হয়েছিল। আইসিএও-সম্মত এবং ব্যাপক ভাবে গৃহীত এটি।
advertisement
ইউরোপ:
ফ্রান্স, ইতালি, জার্মানি: সবার আগে এখানেই চালু হয়েছিল। সেই ২০০৫ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে চালু হওয়া এই ব্যবস্থা শেঙ্গেন ই-গেটের সঙ্গে ইন্টিগ্রেটেড।
ইউক্রেন, রাশিয়া: ডিজিটাল আইডি ইন্টিগ্রেশন-সহ সম্পূর্ণ বায়োমেট্রিক।
এশিয়া:
জাপান, চিন, দক্ষিণ কোরিয়া: সেই ২০০০-এর মাঝামাঝি সময় থেকেই চালু রয়েছে। বারবার আপগ্রেডও করা হয়ে থাকে।
বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল: অ্যাক্টিভ ই-পাসপোর্ট প্রোগ্রাম চালু রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিতে।
advertisement
মালয়েশিয়া: এক্ষেত্রে সেই ১৯৯৮ সাল থেকে পথ প্রদর্শক এই দেশ। ২০১০ সালের মধ্যে আইসিএও মানদণ্ডে উন্নীত।
সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া: বিশ্বব্যাপী সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় সম্পূর্ণ রূপে একীভূত।
আফ্রিকা:
নাইজেরিয়া, কেনিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, রোয়ান্ডা: রিজিওনাল এবং গ্লোবাল নির্দেশিকাগুলির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ভাবে বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট চালু করা হয়েছে।
ওশিয়ানিয়া:
অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড: সবার প্রথম দিকেই এই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। এটি স্মার্ট ই-বর্ডার সিস্টেমের সঙ্গে নির্বিঘ্নে সুসংহত।
এই ব্যবস্থা ভারতেও গ্রহণ করা হচ্ছে। ফলে এবার থেকে ভারতীয় নাগরিকরাও এখন ভিসা-অন-অ্যারাইভাল এবং ই-গেট এনেবলড দেশগুলিতে দ্রুত এবং আরও নিরাপদ প্রবেশের অধিকার উপভোগ করতে পারবেন। যা বিশ্বব্যাপী গতিশীলতার ক্ষেত্রে ভারতের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে।
ই-পাসপোর্টের আবেদন প্রক্রিয়া খুবই ইউজার-ফ্রেন্ডলি। নাগরিকরা পাসপোর্ট সেবা পোর্টালের মাধ্যমে স্থানীয় পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্র অথবা পোস্ট অফিস পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রে অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করতে পারবেন। তাঁদের সেখানে গিয়ে বায়োমেট্রিক ডেটা প্রদান করতে হবে।
সমস্ত ই-পাসপোর্টের মুদ্রণ এবং চিপ যোগ করার কাজ করা হয় নাসিকের ইন্ডিয়া সিকিউরিটি প্রেসে। আর এতে পাসপোর্ট প্রোডাকশন দেশের মধ্যেই থাকছে। এটি সরকারের মেক ইন ইন্ডিয়া উদ্যোগকে সহায়তা করবে এবং জাতীয় তথ্য সার্বভৌমত্বকে শক্তিশালী করছে।
কেন আপগ্রেড করা জরুরি:
অতিমারী পরবর্তী সময়ে রীতিমতো ফুলেফেঁপে উঠেছে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ। ২০২৩ সালে ১.৫ বিলিয়ন গ্লোবাল অ্যারাইভ্যাল দেখা গিয়েছিল।
ক্রমবর্ধমান যাত্রীর হারকে কার্যকর এবং নিরাপদ ভাবে সামাল দেওয়ার জন্য দেশগুলি দ্রুত হারে বায়োমেট্রিক সিস্টেমের আপডেট করছে।
ঐতিহ্যবাহী মেশিন-রিডেবল পাসপোর্টগুলি নকল এবং কারসাজির আশঙ্কার মুখে থাকে। ই-পাসপোর্ট একটি শক্তিশালী সমাধান প্রদান করে, বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশনের সঙ্গে ক্রিপ্টোগ্রাফিক এনক্রিপশনের সমন্বয় করে পরিচয় জালিয়াতিকে কার্যত অসম্ভব করে তোলে এবং অভিবাসনের অভিজ্ঞতাকে আরও মসৃণ করে তোলে।
ভবিষ্যতে শুধুই স্মার্ট ট্রাভেল:
ভারতের ই-পাসপোর্ট উদ্যোগ বিশ্বব্যাপী গতিশীলতাকে ডিজিটালাইজ করার ক্ষেত্রে বৃহত্তর দৃষ্টিভঙ্গির মাত্র একটি পদক্ষেপ। ভবিষ্যতের উদ্ভাবনের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে:
১. মোবাইল পাসপোর্ট ওয়ালেট
২. ব্লকচেন-ভিত্তিক আইডেন্টিটি ভেরিফিকেশন
৩. DigiLocker এবং আধারের সঙ্গে ইন্টিগ্রেশন
ডিজিটাল ভিসা সরাসরি চিপে সংরক্ষিত:
এই উন্নতির ফলে কাগজ-ভিত্তিক ডকুমেন্টেশনের প্রয়োজন সম্পূর্ণ ভাবে আর থাকবে না। যা সত্যিকারের কন্ট্যাক্টলেস এবং অনায়াস ভ্রমণ বাস্তুতন্ত্রের পথ প্রশস্ত করবে। চিপ-এনেবলড বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট চালু করার মাধ্যমে ভারত ভ্রমণের ভবিষ্যৎ পুনর্গঠনে বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত দেশগুলির সঙ্গে যোগ দিল।
view comments
বাংলা খবর/ খবর/প্রযুক্তি/
আসছে চিপ দেওয়া ই-পাসপোর্ট! হতে চলেছে নতুন যুগের সূচনা
Next Article
advertisement
Rhino rescue: বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
  • ১৩ দিনের অপারেশন রাইনোতে ১০টি গন্ডার উদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা

  • বিপর্যয়ের সময় জলদাপাড়া থেকে ভেসে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি গন্ডার

  • অক্লান্ত পরিশ্রমের পর বনকর্মীরা গন্ডারগুলোকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হন

VIEW MORE
advertisement
advertisement