হোম /খবর /খেলা /
দিবানিদ্রায় সিএবি! বোর্ডের নিষেধাজ্ঞা সত্বেও বোলিং করলেন ভবানীপুরের ঋত্বিক

দিবানিদ্রায় সিএবি! বোর্ডের নিষেধাজ্ঞা সত্বেও বোলিং করলেন ভবানীপুরের ঋত্বিক চ্যাটার্জী!

Eden: বিসিসিআই এর তরফ থেকে চাকিং অর্থাৎ বৈধ বোলিং অ্যাকশন নয় (বোলিং এর সময় বল ছুঁড়ে করার) অভিযোগে অভিযুক্ত ক্রিকেটার নির্দ্বিধায় সিএবি ক্লাব ক্রিকেটে বোলিং করছেন। 

  • Share this:

কলকাতা: দিবানিদ্রায় সিএবি! ফের বিতর্কে বঙ্গ ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা।। বিসিসিআই এর তরফ থেকে চাকিং অর্থাৎ বৈধ বোলিং অ্যাকশন নয় (বোলিং এর সময় বল ছুঁড়ে করার) অভিযোগে অভিযুক্ত ক্রিকেটার নির্দ্বিধায় সিএবি ক্লাব ক্রিকেটে বোলিং করছেন।

শুনতে অবাক লাগলো এরকমটাই ঘটে চলেছে। আর বিষয়টি সামনে আসতেই ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা সিএবি কর্তাদের। বাংলা সিনিয়র দলের নিয়মিত ক্রিকেটার ঋত্বিক চট্টোপাধ্যায় বিসিসিআই পরিচালিত একদিনের টুর্নামেন্ট বিজয় হাজারে ট্রফিতে খেলার সময় সন্দেহজনক বোলিং অ্যাকশনে আটকে যান।

আরও পড়ুন- বুমরাহকে ফের অস্ত্রোপচারের উপদেশ ডাক্তারদের! ক্যারিয়ার শেষ নাকি? সন্দেহ

ম্যাচ আম্পায়ার স্পিন অলরাউন্ডার ঋত্বিকের বোলিং অ্যাকশনে আপত্তি জানান। নিয়ম মাফিক যে ভাবে বোলিং করার কথা সেভাবে ঋত্বিক বল না করে ছুঁড়ে বোলিং করছেন বলে অভিযোগ ওঠে। ফলে ঋত্বিকের বোলিং বন্ধ করে দেয় বিসিসিআই। অর্থাৎ কোনওরকম প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে ঋত্বিক চট্টোপাধ্যায় আর বল করতে পারবেন না।

বিসিসিআই তরফ থেকে পুনরায় বল করার ছাড়পত্র না পাওয়া পর্যন্ত বোর্ড পরিচালিত এমনকি সিএবি টুর্নামেন্টও বল করার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। ফলে ঋত্বিককে রঞ্জি স্কোয়াড থেকে বাদ দেন বাংলার কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্লা।

সেই মতো ক্লাব ক্রিকেটেও ঋত্বিক বল করা বন্ধ করে দেয়। যদিও মঙ্গলবার সিএবি ক্রিকেট লীগে কালীঘাট ক্লাবের বিরুদ্ধে গয়েশপুরের মাঠে ছয় ওভার বোলিং করলেন ঋত্বিক। একটি মেডেনসহ ১৪ রান দিয়ে একটি উইকেটও নেন। সিএবির স্কোর আপডেট অ্যাপসে ঋত্বিকের বোলিং করার তথ্য দেওয়া হয়েছে।এরপরই নিউজ এইট্টিন বাংলার চোখে পড়ে বিষয়টি।

ঋত্বিক চট্টোপাধ্যায়-এর বোলিং এর ওপর নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও কি করে ক্লাব ম্যাচে তিনি বল করলেন? নিউজ এইট্টিন বাংলার প্রতিনিধি প্রথমে যোগাযোগ করেন ভবানীপুর ক্লাবের কোচ আব্দুল মোনায়েমের সঙ্গে। তিনি জানান, সিএবির পক্ষ থেকে ঋত্বিক চট্টোপাধ্যায়ের বোলিং করার উপর কোনওরকম নিষেধাজ্ঞার কথা ক্লাব কর্তৃপক্ষ জানেন না।"

এর পরই খোঁজ খবর করে জানা যায়, চলতি মরশুমে ক্লাব ক্রিকেটে‌ মঙ্গলবার প্রথম বল করলেন ঋত্বিক। কালীঘাটের বিরুদ্ধে তিনি বল করতে চেয়েছিলেন নিজে থেকেই। খোঁজ করে আরো জানা যায়, ম্যাচের আম্পায়ার কিংবা সিএবির observer কারোর কাছেই ঋত্বিকের বোলিং নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে কোনো খবর নেই। ‌

অর্থাৎ সিএবি সংশ্লিষ্ট ভবানীপুর ক্লাবকে এবং আম্পায়ার কমিটিকে সরকারিভাবে কিছুই জানায়নি। নিউজ এইট্টিন বাংলার পক্ষ থেকে সিএবিতে গিয়ে বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান অনু‌ দত্ত কিছু জানেন না বলে দেন। তারপর সিএবি সচিব নরেশ ওঝাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি প্রথমে বলেন, রঞ্জি জয়ী ক্রিকেটার দত্তাত্রেয় মুখার্জি‌র থেকে ঋত্বিক ছাড়পত্র পেয়েছে। আমরা ঋত্বিক চট্টোপাধ্যায়কে বিসিসিআই এর চেন্নাইয়ে বায়ো মেকানিক্যাল ইনস্টিটিউটে পাঠাবো। তবে এখানেই প্রশ্ন উঠছে  দত্তাত্রেয় মুখার্জি তো বিসিসিআইয়ের কোন ব্যক্তি নয় সে ক্ষেত্রে তিনি কি করে ছাড়পত্র দেবেন?

যেখানে এখনো বিসিসিআই তরফ থেকে ছাড়পত্র আসেনি। দত্তাত্রেয় মুখার্জির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি ছাড়পত্র দেওয়ার কে। বোলিং অ্যাকশনের ত্রুটি বিষয়টা নিয়ে আমি ব্যক্তিগতভাবে কাজ করি। আমি জানি বিষয়টি। তাই সিএবি আমার কাছে পাঠিয়েছিল বোলিং অ্যাকশনে কি সমস্যা আছে একটু দেখে দেওয়ার জন্য। 2D ক্যামেরায় দেখে মনে হয়েছে সমস্যা নেই তাই আমি বলেছি চেন্নাইয়ে বিসিসিআই পরিচালিত নির্দিষ্ট ইনস্টিটিউট আছে সেখানে ঋত্বিককে পাঠিয়ে সরকারিভাবে পরীক্ষা করানোর জন্য।"

ফলে প্রশ্ন উঠছে ঋত্বিক কার অনুমতিতে বোলিং করা শুরু করল। ঋত্বিক চট্টোপাধ্যায় এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, বিসিসিআই নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও একজন ক্রিকেটার কিভাবে ক্লাব ক্রিকেটে বোলিং করলেন। এতটাই কমিউনিকেশন গ্যাপস সিএবির মধ্যে।

চলতি বছর বাংলার অনূর্ধ্ব ১৯ এর ক্রিকেটার যুধাজিত গুহ একই কারণে বিসিসিআইয়ে নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছেন। ফলে ক্লাব ক্রিকেটে কলকাতা পুলিশ তাকে রেজিস্ট্রেশন করাইনি লীগের জন্য। ফলে স্পষ্ট হচ্ছে সিএবির অপদার্থতা।

বিসিসিআইয়ের গাইডলাইন মেনে ক্লাবগুলোকে কেন জানালো না সিএবি, সেই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। কয়েক বছর আগে ঋত্বিক চট্টোপাধ্যায়ের এরকমই নিষেধাজ্ঞা ছিল তার বোলিংয়ে। কিন্তু সেই সময় বিসিসিআইয়ের ছাড়পত্র পেয়ে সে পুনরায় বোলিং শুরু করেন।

এবার ছাড়পত্র আসার আগেই ঋত্বিক বোলিং করে বসলেন। ক্রিকেট মহলের প্রশ্ন, সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটার যদি বিষয়টি না জেনেও করেন ক্লাব ও সিএবি কি করছিল? ক্রিকেট মহলের মত, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের নিয়ম অমান্য করার খবর যদি বিসিসিআই কর্তাদের কাছে পৌঁছয়। তাহলে সিএবি এবং সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটার প্রশ্নের মুখে পড়তে পারেন।

অর্থাৎ সিএবির গাফিলতিতে নষ্ট হতে পারে একজন ক্রিকেটারের ক্যারিয়ার। দিনের পর দিন এত আলোচনা করেন, মিটিং করেন কর্তারা। এই সামান্য তথ্যটুকু ক্লাবকে জানাতে পারলেন না কেন? এই প্রশ্নে সরগরম কলকাতা ময়দান।

Published by:Suman Majumder
First published:

Tags: Cricket Association of Bengal