Milkha Singh Death Anniversary: দুধ-ডিমের লোভে দৌড় শুরু! সেই যুবক হন ফ্লাইং শিখ, মিলখা সিংকে আজই হারিয়েছিল দেশ

Last Updated:

Milkha Singh Death Anniversary:দেশ ভাগের যন্ত্রণা, প্রিয়জনদের হারানোর বেদনা ও ক্ষুধার তাড়না জীবনের এই সব প্রতিকুলতাকে পিছনে ফেলে সামনে এগোতে গিয়েই দৌড়বিদ হয়ে উঠেছিলেন মিলখা সিং। জীবনে এমন সব দুর্বিসহ ধাক্কা সামলে সকলে জয়ের বীরগাঁথা তৈরি করতে পারে না। কারণ সকলে মিলখা সিং নয়।

কলকাতা: করোনা অতিমারী আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছিল অনেক খ্যাতনামাদের। তার মধ্যে অন্যতম হলেন কিংবদন্তী ভারতীয় অ্যাথলিট মিলখা সিং। ভারতীয় অ্যাথলিট নিয়ে যে কোনও ধরনের আলোচনাতেই যে ‘ফ্লাইং শিখ’-এর নাম একেবারে প্রথম সারিতে থাকবে তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। দেশ ভাগের যন্ত্রণা, প্রিয়জনদের হারানোর বেদনা ও ক্ষুধার তাড়না জীবনের এই সব প্রতিকুলতাকে পিছনে ফেলে সামনে এগোতে গিয়েই দৌড়বিদ হয়ে উঠেছিলেন মিলখা সিং। জীবনে এমন সব দুর্বিসহ ধাক্কা সামলে সকলে জয়ের বীরগাঁথা তৈরি করতে পারে না। কারণ সকলে মিলখা সিং নয়।
করোনা অতিমারীর কারণে ৯১ বছর বয়সে থেমেছিল মিলখা সিংয়ের জীবনের দৌড়। বাড়ির এক পরিচারিকার থেকে করোনা সংক্রামিত হয়েছিলেন মিলখা সিং ও তাঁর স্ত্রী নির্মল কৌর। ১৩ জুন মৃত্যু হয় নির্মল কৌরের। ৩০মে মিলখা সিং কিছুটা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও ফের অক্সিজেনের অভাব হওয়ায় ফের তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবশষে চিকিৎসকজের যাবতীয় প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে ১৮ জুন ২০২১ সালে প্রয়াত হন কিংবদন্তী মিলখা সিং। শোক প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে ক্রীড়া, রাজনৈতিক, বিনোদন জগৎ সহ সর্বস্তরের মানুষ। ১৮ জুন ২০২৩ দেখতে দেখতে ২ বছর হয়ে গেল মিলখা সিংয়ের প্রয়াণের।
advertisement
মিলখা সিং দ্বিতীয় বার্ষিকীতে এমন কিছু তথ্য আপনাদের জানাব যা অনেকের কাছেই অজানা। ১৯২৯ সালের ২০ নভেম্বর অবিভক্ত ভারতের ও এখনকার পাকিস্তানের মুজফফরগড় জেলার গোবিন্দপুর গ্রামে এক শিখ রাজপুত পরিবারে জন্ম হয় মিলখা সিংয়ের। দেশভাগের অশান্তির সময় চোখের সামনে নিজের মা-বাবা-ভাই-বোনদের খুন হতে দেখেছিলেন ছোট্ট মিলখা। তারপর ভারতে এসে আশ্রয় নেন এক দিদির বাড়িতে। অভাবের সংসারে ক্ষুধা ছিল নিত্য দিনের সঙ্গী। সেখান থেকেই শুরু হয় জীবনযুদ্ধে ছোট্ট মিলখা থেকে ফ্লাইং শিখ হয়ে ওঠার দৌড়।
advertisement
advertisement
১৯৫২ সালে চতুর্থবারে চেষ্টার সেনা বাহিনীতি চাকরি পান মিলখা সিং। সেনায় থাকাকালীন বিভিন্ন স্পোর্টস ইভেন্টে অংশ নেন মিলখা। দৌড়, খেলাধুলার প্রতি বরাবরই আকর্ষণ ছিল মিলখার। দৌড়ে মিলখার ধারেকাছে যে সেনাবাহিনীর অন্য জওয়ানরা কেউ ধারে কাছে আসতে পারত না, এই বিষয়টি সেনা কর্তাদের নজরে আসে। সেখানে দুধ ও ডিমের লোভে ছুটতেন মিলখা সিং। আর সেখান থেকেই শুরু হয় মিলখার দৌড়বিদ হওয়ার যাত্রা।
advertisement
১৯৫৬ সালের অলিম্পিকে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন মিলখা সিং। কিন্তু প্রথম রাউন্ড থেকেই ছিটকে যান তিনি। কিন্তু সাফল্য পেতে বেশিদিন অপেক্ষা করতে হয়নি মিলখাকে। ১৯৫৬ এশিয়ান গেমসে ২০০ ও ৪০০ মিটারে সোনা জেতেন। ১৯৫৬ অলিম্পিকের সময় মিলখা সিংয়ের সঙ্গে পরিচয় হয় বিখ্যাত ক্রীড়াবিদ চার্লস জেনকিন্সের। তিনি মিলখা সিংকে প্রশিক্ষণের জন্য উৎসাহিত করেছিলেন এবং একজন ভালো ক্রীড়াবিদ হওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছিলেন। এরপর ১৯৫৮ সাল থেকে আর পিছনে ফিরে তাকেত হয়নি মিলখা সিংকে।
advertisement
১৯৫৮ সালে কার্ডিফে কমনওয়েলথ গেমসে অংশ নেন মিলখা সিংখা। শুধু প্রথম ভারতীয় হিসেবে কমনওয়েলথে সোনা জয় নয়, এমন রেকর্ড গড়েল মিলখা যা অক্ষত ছিল ৫২ বছর। ৪৬.৬ সেকেন্ড দৌড় শেষ করেন মিলখা সিং। হারান সেই সময়কার তারকা আফ্রিকান স্প্রিনটার ম্যালকম স্পেন্সকে। ১৯৫৬ এশিয়ান গেমস ও ১৯৫৮ কমনওয়েলথ গেমসে সোনা জয়ের সুবাদে ১৯৫৮ সালে অর্জুন পুরস্কারে সম্মানিত করা হয় মিলখা সিংকে। একইসঙ্গে ১৯৬০ অলিম্পিকসে পদক জয়ের স্বপ্নও দেখতে শুরু করে গোটা দেশ। কিন্তু সামান্য ভুলের জন্য ১৯৬০ অলিম্পিকসে পদক হাতছাড়া হয় মিলখা সিংয়ের। চতুর্থ হন ভারতীয় স্প্রিনটার। ২৫মিটারে পৌছে জিতেছেন ধরে নিয়ে স্পিড কমাতেই, পদকের সঙ্গে দূরত্ব বেড়ে যায় মিলখার।
advertisement
অলিম্পিকে পদক না পাওয়ায় এক সময় মাঠ ছেড়েছিলেন মিলখা সিং। তবে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জহওরলাল নেহেরুর আবেদনে সেই বছর পাকিস্তানে আয়োজিত ‘ডুয়াল চ্যাম্পিয়নশিপ’-এ নামেন মিলখা সিং। সেদেশের স্প্রিনটার ও চিরপ্রতীদ্বন্দ্বী আয়ূব খানের বিরুদ্ধে দুরন্ত গতিতে দৌড়ে প্রথম হন মিলখা। পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আয়ুব খান মিলখার দৌড় দেখে তাকে ‘ফ্লাইং শিখ’ তকমা দেন। এছাড়া ১৯৬২-র এশিয়ান গেমসে ৪০০ মিটার দৌড় এবং ৪০০ মিটার রিলে রেসে সোনা পান তিনি। ১৯৬৪ সালের কলকাতা ন্যাশনাল গেমসেও ৪০০ মিটার দৌড় বিভাগে রূপো জয় করেন মিলখা।
advertisement
ভারতীয় সেনাবাহিনী থেকে অবসরের পর তিনি পঞ্জাব সরকারের পক্ষ থেকে ক্রীড়া পরিচালকের পদে বসেন। সেখান থেকে তিনি ১৯৯৮ সালে অবসর গ্রহণ করেন। ২০১৭ সালে পৃথিবীর বিখ্যাত মিউজিয়াম মাদাম তুসো তার মূর্তি বসানো হয়। সেই মূর্তি দেখতে যান মিলখা সিং। নিজের দৌড়ানোর ভঙ্গিতে ছবিও তোলেন কিংবদন্তী দৌড়বিদ। কিংবদন্তী অ্যাথলিটকে সম্মান জানাতে ২০১৮ সালে ‘খেল রত্ন’ সম্মানে সম্মানিত করা হয় মিলখা সিংকে। মাঝে ২০১৩ সালে মিলখা সিংয়ের জীবনী নিয়ে সিনেমা ‘ভাগ মিলখা ভাগ’ সুপার হিট হয়। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত একজন চ্যাম্পিয়নের মতই লড়াই করেছেন, বেঁচেছেন। তাঁর দ্বিতীয় মৃত্যু বার্ষিকীতে ‘ফ্লাইং শিখ’-কে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ক্রীড়া প্রেমিরা। মিলখা সিংয়ের লড়াই ও বিজয়গাঁথা চিরকাল অমবিন হয়ে থাকবে ভারত তথা বিশ্বের ক্রীড়া ইতিহাসে।
বাংলা খবর/ খবর/খেলা/
Milkha Singh Death Anniversary: দুধ-ডিমের লোভে দৌড় শুরু! সেই যুবক হন ফ্লাইং শিখ, মিলখা সিংকে আজই হারিয়েছিল দেশ
Next Article
advertisement
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! তারপরেই, এই এলাকার পুজোর থিম দেখলে অবাক হবেন!
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! অন্যরকম থিম এই এলাকায়
VIEW MORE
advertisement
advertisement