কলকাতা: ব্রাত্য অরিত্র নজির গড়লেন ২২ গজে। শূন্য রানে হ্যাটট্রিক-সহ ৭ উইকেট। সিভিল সার্ভিস ক্রিকেট টুর্নামেন্টে রেকর্ড গড়লেন বাংলার অরিত্র চট্টোপাধ্যায় (Bengal Cricketer Aritra Chatterjee)। দিল্লিতে আয়োজিত এই প্রতিযোগিতায় আরএসবি কলকাতার হয়ে মাঠে নামেন অরিত্র। মাত্র ২.৪ ওভার বল করে হ্যাটট্রিক-সহ শূন্য রানে সাত উইকেট নিয়ে চমকে দিয়েছেন বাঁহাতি স্পিনার। টি-টোয়েন্টি ফর্ম্যাটের এই টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছে ৩৯টি দল। বাংলার প্রতিনিধিত্ব করছে আরএসবি অর্থাৎ রিজিওনাল স্পোর্টস বোর্ড, কলকাতা। শুক্রবার আরএসবি রায়পুরের বিরুদ্ধে ম্যাচ ছিল কলকাতার বিকাশপুরী স্পোর্টস কমপ্লেক্সে। সেই ম্যাচেই রেকর্ড গড়েন অরিত্র চট্টোপাধ্যায় (Bengal Cricket)।
রায়পুর ইনিংসের পঞ্চম ওভারে বল করতে আসেন অরিত্র। পঞ্চম, সপ্তম ও নবম ওভার করেন তিনি। রায়পুর মাত্র ৮.৪ ওভারে ১৯ রানে অল আউট হয়ে যায়। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৩ ওভারে এক উইকেট হারিয়ে রান তুলে দেয় কলকাতা। অরিত্রর সাতটি আউটের মধ্যে স্টাম্প একটি, তিনটি বোল্ড আর তিনটি এলবিডব্লিউ। দীর্ঘদিন বাংলা সিনিয়র দলে ছিলেন অরিত্র। প্রায় ২৪-২৫টি ম্যাচে বাংলা দলের দ্বাদশ ব্যক্তি হিসেবে থেকেছেন। কিন্তু কোনও অজ্ঞাত কারণে বাংলার হয়ে অভিষেক হয়নি আজও।
সিএবির প্রত্যেক ক্লাব মরশুমে ঝুড়ি ঝুড়ি উইকেট পান। বাংলার প্রাথমিক স্কোয়াডে ডাক পান। কিন্তু শেষপর্যন্ত বাদ পড়েন। বিগত ১০ বছর ধরে একই অবস্থা চলে আসছে অরিত্রর সঙ্গে। গত মরশুমেও সাদা বলের ক্রিকেটে বাংলার স্কোয়াডে ছিলেন। এমনকী, সৌরভের সঙ্গে বাংলার শেষ বিজয় হাজারে ট্রফি জয় দলের সদস্য ছিলেন। রেকর্ড গড়ার দিনে একরাশ অভিমান নিয়ে অরিত্র বললেন, ‘‘আজকে যে রেকর্ডটি করলাম সেটার জন্য ভাল লাগছে। এটা আমার জীবনের প্রথম হ্যাটট্রিক। অফিস টুর্নামেন্টেই রেকর্ড করার জন্য আপনারা আজকে আমার খবর নিচ্ছেন। জানেন তো আরেকটা রেকর্ডও আমি করেছি ইতিমধ্যেই। বলতে খারাপ লাগলেও, সত্যি আমি প্রায় ২৫টি ম্যাচে বাংলার দ্বাদশ ব্যক্তি হিসেবে থেকেছি।’’
আরও পড়ুন-ভাগ্য বদলাল ৫০ বছর আগে কেনা মামুলি খেলনা; বর্তমান দাম শুনলে চোখ কপালে উঠবে!
জল দেওয়ার কাজ করে গিয়েছি। দীর্ঘদিন স্কোয়াডে থেকেও একটাও খেলার সুযোগ পেলাম না এটাও রেকর্ড।" নিজের রেকর্ড গড়ার দিনেও অভিমান ছাড়া আর কিছুই নেই অরিত্রর। লেফট আর্ম স্পিনার অরিত্র এখনও স্বপ্ন দেখেন বাংলার জার্সিতে খেলার। যদি কখনও একটা ম্যাচও সুযোগ পান তাহলে নিজেকে প্রমাণ করে দিতে চান ময়দানের পরিচিত লুথার। তবে শাহবাজ আহমেদ, প্রদীপ্ত প্রামানিকদের উপস্থিতিতে ৩৪ বছর বয়সী অরিত্রকে কি আর বাংলা ডাকবে? উত্তর যতই কঠিন হোক অরিত্র কিন্তু এখনো আশা দেখেন।
অরিত্র বলেন, ‘‘ক্লাব ক্রিকেট কিংবা অফিসের যে কোনও টুর্নামেন্ট হোক না কেন, আমি সব জায়গাতেই নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে খেলার চেষ্টা করি। আসলে প্রতিমুহূর্তে মনে হয় হয়তো বাংলা দলের খেলার সুযোগ আসবে এরকমই কোনও একটি পারফরম্যান্স দেখেই। হয়তো আজকেরই পারফরম্যান্সের পর বাংলার নির্বাচকদের এক মুহূর্তের জন্য হলেও আমার নামটা মাথায় আসবে। বাংলার এখন যারা খেলে বাঁহাতি স্পিনার হিসেবে তাদের থেকে কিন্তু ক্লাব ক্রিকেটে আমার উইকেটের সংখ্যা বেশি। তবুও আমি সুযোগ পেলাম না। একটা প্রশ্ন আপনাকে করি উত্তর দিতে পারবেন? আমাকে একটাও সুযোগ না দেওয়ার কারণটা যদি কোনদিনও জানতে পারেন আমাকে একটু জানাবেন। প্রত্যেকবার স্কোয়াডে নেওয়ার পর কেন বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে? উত্তরটা জানতে পারলে নিজেকে বোঝাতে পারব।’’
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে রেকর্ড করার দিনেও অরিত্রর গলায় প্রতিমুহূর্তে হতাশা। আসলে নিজেকে প্রমাণের একটাও সুযোগ কেন পেলেন না সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে যাচ্ছেন বর্তমানে ক্লাব ক্রিকেটে কালীঘাটে ঋদ্ধিমান সাহার সতীর্থ।
ঈরণ রায় বর্মন
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Bengal Cricket, Latst