East Bardhaman News: অভাবে আটকে স্বপ্ন! দেশের হয়ে খেলার জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে কাটোয়ার মালতী
- Published by:Sudip Paul
- hyperlocal
- Reported by:Bonoarilal Chowdhury
Last Updated:
East Bardhaman News: কাটোয়ার মালতী বিশ্বাস, অভাবকে সঙ্গী করে খেলোয়ার হওয়ার স্বপ্নে বেঁচে থাকা এক মেয়ের গল্প। কাটোয়া শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাশীগঞ্জ ঘাটের এক সরু গলির ভিতরেই থাকে মালতী।
পূর্ব বর্ধমান, বনোয়ারীলাল চৌধুরী: কাটোয়ার মালতী বিশ্বাস, অভাবকে সঙ্গী করে খেলোয়ার হওয়ার স্বপ্নে বেঁচে থাকা এক মেয়ের গল্প। কাটোয়া শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাশীগঞ্জ ঘাটের এক সরু গলির ভিতরেই থাকে মালতী। সাধারণ একটা বাড়ি, সামান্য আসবাব, আর অভাব অনটনে ভরা সংসার। বাবা টোটো চালক, মা অন্যের বাড়িতে রান্নার কাজ করেন। তবে এই অভাবের মধ্যেই এক অদ্ভুত শক্তি রয়েছে মালতীর মধ্যে। ছোটবেলা থেকেই দৌড় যেন অন্যরকম নেশা মালতীর। মাঠ হোক বা রাস্তাঘাট, যেখানে সুযোগ পেয়েছে সেখানেই ছুটেছে সে। দৌড়ে নাম লিখিয়ে একের পর এক ট্রফি, সার্টিফিকেট, পদক ঘরে এনেছে।
সম্প্রতি দিল্লির আগ্রা শহরে রাজ্য স্তরের প্রতিযোগিতায় ৫ হাজার মিটার আর ১৫০০ মিটার দৌড়ে স্বর্ণপদক জিতে আবারও সবার নজর কেড়েছে মালতী। তবুও মালতীর জীবন একেবারেই সহজ নয়। ভোর তিনটেয় ঘুম থেকে উঠে মাত্র কুড়ি টাকা হাতে নিয়ে সে ট্রেনে চেপে চলে যায় বলাগর। সেখানে কোচ তরুণ ঘোষের কাছে নিয়মিত প্র্যাকটিস করে। কোচিংয়ের ফি দেওয়ার মতো সামর্থ্য নেই তার, কিন্তু কোচই ভরসা, নিজের সাধ্য মতো সাহায্য করেন তিনি।
advertisement
দিনের পর দিন প্র্যাকটিসের পর দুপুরে ট্রেনে ফিরে আসে কাটোয়ায়। সঙ্গে থাকলে একটু মুড়ি খায়, না হলে খালি পেটেই ফিরতে হয়। ভাত আর মুড়িই তার সারা দিনের খাবার। অন্য খেলোয়াড়দের মতো দামি জুতো, জার্সি, প্রোটিন এসব তার কাছে স্বপ্ন মাত্র। তবু সে মন থেকে মেনে নেয়, হাসিমুখেই লড়াই চালিয়ে যায়। মালতী কান্নার সুরে বলে,”আমারও ইচ্ছা করে দামি জুতো, জার্সি পরে খেলার। একটু ভাল খাবার খেয়ে খেলাধুলা চালিয়ে যাওয়ার। কিন্তু বাবা মায়ের সামর্থ্য নেই তাই আমিও চাপ দিইনা। যেরকম জোটে সেরকম ভাবেই চালিয়ে যায়। স্বপ্ন রয়েছে একদিন দেশের নাম উজ্বল করার।”
advertisement
advertisement
আজও মালতীর ঘরে সাজানো রয়েছে অগণিত ট্রফি ও পদক। রাজ্যের নানা প্রান্তে, এমনকি ভিন রাজ্য থেকেও সে জিতে ফিরেছে বারবার। কিন্তু বিদেশে গিয়ে খেলার স্বপ্ন এখনও স্বপ্নই থেকে গেছে। কারণ সেখানে যেতে হলে প্রয়োজন মোটা টাকার। অভাবের সংসারে তা কেবল কল্পনাই। মালতীর মা গৌড়ি বিশ্বাস বলেন,”আমাদের সামর্থ্য নেই ওকে চালানোর মত, নিজদের সংসার ঠিকভাবে চলেনা। ওকে বহুবার বারণ করেছি ও তাও শোনেনা। খেলার জন্য ছুটে চলে যায় বিভিন্ন জায়গায়। প্রশাসনের তরফে সাহায্য পেলে অনেক উপকার হবে ওর।”
advertisement
কাটোয়ার হাতেগোনা কিছু মানুষ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন মালতীর জন্য। তার মধ্যে অন্যতম ভরত বিশ্বাস। কিন্তু প্রশাসনের তরফে এখনও কোনও সাহায্য মেলেনি। তবু মালতীর চোখে শুধু একটাই স্বপ্ন দেশের হয়ে দৌড়াবে, দেশের নাম উজ্জ্বল করবে। তবে বর্তমানে অভাব তার বড় সমস্যা, উপায় নেই তাই অভাবকে সঙ্গী করেই ছুটে চলেছে মালতী। মনের মধ্যে কষ্ট দুঃখ চেপে রেখেই চালিয়ে যাচ্ছে লড়াই। কে জানে হয়তো একদিন সত্যিই এই গরিব ঘরের মেয়েই হয়ে উঠবে দেশের গৌরব।
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
September 01, 2025 3:36 PM IST