#কলকাতা: নজিরবিহীন ঘটনা। দলের জন্য সমর্থন করতে এসে গলাধাক্কা! গ্যালারি থেকে বের করে দেওয়া হল সমর্থকদের। এরকম নজিরবিহীন ঘটনা ঘটলো ইডেনে রনজি সেমিফাইনালে।
বাংলা-কর্ণাটক রনজি সেমিফাইনালে ম্যাচ। সোমবার বাংলা দলকে সমর্থন করতে সকালবেলা মাঠে হাজির হন বেশ কয়েকজন সমর্থক। অনুষ্টুপ-সুদীপদের জন্য গলা ফাটাতে শুরু করেন। ক্লাবহাউসের পাশে বি-ব্লকে বসে ছিলেন তারা। কিন্তু আচমকাই সেখানে ম্যাচ রেফারি ও দুর্নীতি দমন শাখার অফিসারকে নিয়ে হাজির হন কর্নাটকের ক্রিকেটার। দুজন নির্দিষ্ট সমর্থকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে কর্নাটক শিবির। ম্যাচ রেফারি তখনই বাংলা ক্রিকেট দলের দুই সমর্থককে গ্যালারি থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। নিরাপত্তারক্ষী দিয়ে দুজনকে ইডেনের বাইরে বের করে দেওয়া হয়। এমনকি যাতে ওই দুজন অন্য গেট দিয়ে মাঠে ঢুকতে না পারেন সেই নির্দেশও দেওয়া হয়। এরকম ঘটনা বাকি সমর্থকরাও বিস্মিত হয়ে যায়।
কেন এরকম সিদ্ধান্ত নিলেন ম্যাচ রেফারি? ক্রিকেট ম্যাচে একজন ম্যাচ রেফারির কাজ ক্রিকেট সংক্রান্ত। দর্শকদের আচরণ দেখার কাজ তো ম্যাচ রেফারির নয়? আসলে ঘটনার সূত্রপাত রবিবার ম্যাচের দ্বিতীয় দিন। রবিবার খেলা শেষে ম্যাচ রেফারির কাছে লিখিত অভিযোগ করেন কর্নাটকের ক্রিকেটার কৃষ্ণাপ্পা গৌতম। ফিল্ডিং করার সময় মাঠে নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন বলে চিঠি দেন ম্যাচ রেফারি, দুর্নীতি দমন শাখা ও বিসিসিআইকে। মাঠে নিরাপত্তা বেশি চায় কর্নাটক শিবির।
চিঠিতে লেখা ছিল, গ্যালারি থেকে নির্দিষ্ট কয়েকজন কর্নাটকের ২ -১ জন ক্রিকেটারকে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি ও গালিগালাজ করেছেন। এই চিঠির পাশাপাশি ম্যাচ চলাকালীন এক দর্শক ইডেনের ফেন্সিং টপকে মাঠে ঢুকে কে এল রাহুলকে জড়িয়ে ধরেন। এই ঘটনা এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত ইস্যুতে অভিযোগ পেয়ে নড়েচড়ে বসেন ম্যাচ রেফারি প্রকাশ ভট ও দুর্নীতি দমন শাখার অফিসার। ইডেনের ক্লাবহাউসের গেটের বদলে অন্য গেট দিয়ে টিম বাস নিয়ে এসে ক্রিকেটারদের হোটেলে পাঠানো হয়। সোমবার সকাল থেকে মাঠে নিরাপত্তারক্ষী বাড়ানো হয়। গ্যালারিতে প্রথম তিনটি রো ছেড়ে সমর্থকদের বসতে বলা হয়। ইডেনের গেট গুলিতেও পুলিশ বাড়ানো হয়।
এই পর্যন্ত বিষয়টি ঠিক ছিল বলেই মনে করে সিএবি এবং ক্রিকেটমহল। তবে সোমবার সকালের ঘটনা চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। দুজন সমর্থকে চিহ্নিত করা হয় কর্নাটক দলের তরফে। এমনকি ম্যাচে রেফারিকে বলা হয় এই দুইজন সমর্থকই রবিবার গালিগালাজ করেছিলেন। সোমবার ফের অভিযোগ পেয়ে গ্যালারিতে গিয়ে ওই দুজনকে মাঠ থেকে বের করে দেন ম্যাচ রেফারি। এখানেই ম্যাচ রেফারির অতি তৎপরতা দেখছে ক্রিকেটমহল। তবে ওই দুই সমর্থক সিএবি প্রেসিডেন্ট অভিষেক ডালমিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সিএবি প্রেসিডেন্ট বিষয়টি শুনে ওই দুই সমর্থককে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া জন্য কথা বলেন দুর্নীতি দমন শাখার অফিসারের সঙ্গে।
অভিষেকের হস্তক্ষেপে কয়েক ঘন্টা পর অন্য গেট দিয়ে ওই দুই সমর্থককে মাঠে ঢুকতে দেওয়া হয়। তবে নিরাপত্তারক্ষীরা ওই দুজনের ছবি তুলে রাখেন। মাঠে ঢুকে সারাক্ষণ বাংলা দলের জন্য সমর্থন করে যান দুই সমর্থক। আর ফেন্সিং টপকে মাঠের ঢুকে পড়ার ঘটনায় চারজন নিরাপত্তারক্ষীকে সাসপেন্ড করা হয়। দিনের শেষে বাংলা ক্রিকেট দলের ওই দুই সমর্থক সিএবি প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানান। আর জানিয়ে যান বাংলা কে ফাইনালে তোলার জন্য গলা ফাটাতে মঙ্গলবার সকাল থেকেই ইডেনে আসবেন। ম্যাচ রেফারি প্রকাশ ভাটের এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ বাংলা ক্রিকেট দল। সিএবি কর্তারা বিষয়টিকে ভালোভাবে নেননি সিএবি কর্তারা বিষয়টিকে ভালোভাবে নেননি। কারণ তারাই বাংলা দলকে সমর্থন করার জন্য ইডেনের গেট খুলে দিয়েছেন সাধারণ দর্শকদের জন্য। তবে দুই দলের সব মিটমাট হয়ে যাওয়ায় এই নিয়ে জল ঘোলা করতে নারাজ সিএবি।
ERON ROY BURMAN
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।