#RanjiTrophy: বাংলার জয়ের নায়ক এক ট্যাক্সি চালকের ছেলে! জেনে নিন তাঁর লড়াইয়ের কাহিনি

Last Updated:

গত বছর ডিসেম্বরে বাবাকে হারিয়েছেন মুকেশ কুমার। বাংলাকে সেমিফাইনালে তুলে মুকেশের বারবার মনে পড়ছে বাবা কাশীনাথ সিংয়ের কথা

#কলকাতা:১৩  বছর পর রঞ্জি ট্রফির ফাইনাল বাংলা। সেমিফাইনালে ইডেনে কর্ণাটকে হারানোর পেছনে অবদান এক ট্যাক্সি চালকের ছেলের। দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেট নিয়ে শক্তিশালী কর্ণাটক ব্যাটিং অর্ডার একাই শেষ করে দেন মুকেশ কুমার। সিম বোলার মুকেশ কুমারের বোলিং বুঝতে না পেরে প্যাভিলিয়নের ফিরেছিলেন মনীশ পান্ডের মতো তারকা ব্যাটসম্যান। রাতারাতি নায়ক বনে গেছেন বাংলা ডানহাতি ফাস্ট বোলার।
বিহারের ভূপালগঞ্জের এক অখ্যাত গ্রামে জন্ম মুকেশ কুমারের। বাবা কাশীনাথ সিং ট্যাক্সি চালাতেন কলকাতায়। তালতলা এক কামরার ঘরে থাকতেন। ছোট থেকেই মুকেশের শখ ক্রিকেটার হওয়ার। তবে কোনদিনও ক্রিকেট কোচিং ক্যাম্প ক্রিকেট শেখা হয়নি মুকেশের। গলি ক্রিকেট থেকে খেপের মাঠ খেলে বাড়ানোই ছিল মুকেশের কাজ। ২০০৩ সালে মুকেশের বাবা তাকে ডাকেন কলকাতায় কাজ করার জন্য। মুকেশের জন্য চাকরি খুঁজছিলেন। কিন্তু চাকরি নয় মুকেশের মন পড়েছিল ২২ গজে। খোঁজখবর নিয়ে একদিন পৌঁছে যান দ্বিতীয় ডিভিশন ক্লাব বাণী নিকেতনে। সেখানে পারফর্ম করেই প্রথম ডিভিশনে শিবপুর ক্লাব। বল হাতে প্রথম থেকেই পারফর্ম করতে শুরু করেন মুকেশ। চলে আসেন সৌরভের তৈরি ভিশন ২০২০ ক্যাম্পে। তবে সেই প্রাথমিক ক্যাম্পে সেভাবে নজর করতে পারেননি মুকেশ। সেই সময় ফাস্ট বোলারদের দায়িত্বে ছিলেন পাক কিংবদন্তী ওয়াকার ইউনিস। কিন্তু বাংলার বোলিং কোচ রণদেব বসুর মনে ধরে মুকেশকে। প্রথম দিন অনুশীলনে বোলিং স্পাইক ছিলনা মুকেশের কাছে। দৌড়ানোর জুতা পরেই বল করতে চলে আসেন ব্রেট লি-র অন্ধভক্ত। তাই সমস্যায় পড়তে হয়। সব শুনে রণদেব বসু কিছুটা জোর করেই মুকেশ কুমারকে স্কোয়াডে রেখে দেন। সেখান থেকেই ধাপে ধাপে নিজেকে প্রমাণ করে বাংলা দলে পাঁচ বছর আগে সুযোগ পান মুকেশ।
advertisement
ক্রিকেটের অ-আ-ক-খ ভিশন ২০২০ ক্যাম্পেই শেখেন মুকেশ। ফিটনেস সমস্যা ছিল মুকেশ কুমারের নিত্যসঙ্গী। মাঝেমধ্যেই চোট থাকায় দলের বাইরে থাকতেন। রণদেব বসু পরামর্শে ফিটনেস প্রচুর পরিশ্রম করেন মুকেশ। বাড়তি ট্রেনিং করতে হতো রোজ। ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নে মুখ বুজে সেসব করে যেতেন ডানহাতি পেসার। বাবা ট্যাক্সি চালালেও ছেলেকে কোনোদিন এই পেশায় আসতে বলেননি। এমনকি গাড়ি চালাতে জানেন না জাহির খানের ভক্ত মুকেশ। বাংলাকে সেমিফাইনালে তুলে মুকেশের বারবার মনে পড়ছে বাবার কথা। সাফল্যের এই দিনটা দেখে যেতে পারলেন না মুকেশের বাবা। গত ডিসেম্বরে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। বাবা হাসপাতালে ভর্তি থাকার সময় হাসপাতাল থেকে বাংলা অনুশীলন আসতেন মুকেশ। তাই সাফল্যের দিনে বাবার কথা বারবার মনে পড়ছে মুকেশ কুমারের। যদি দেখে যেতে পারতেন ইডেনে অটোগ্রাফ দিচ্ছেন ছেলে।
advertisement
advertisement
বল সিমে পড়ে কোন দিকে যাবে সেটা মুকেশ নিজেই জানেন না। পিচের একই জায়গায় প্রথম চারটে বল পড়ে বাইরে গেল। পঞ্চম বলটা ওই জায়গাতে পড়েই আচমকা ভেতরের দিকে ঢুকে এলো। এতেই বিভ্রান্তিতে পড়ে যান বিপক্ষ ব্যাটসম্যানরা। মুকেশ নিজেও জানেন না কি করে এই কৌশল তিনি করেন। মুকেশের জবাব, "আমিও আমার বোলিং বিশেষত্বটা জানিনা। বিপক্ষের ব্যাটসম্যানরাও জানে না তাই আমি উইকেট পাই।" অশোক দিন্দা, ঈশান পোড়েলের ছায়ায় পড়ে এতদিন কিছুটা আড়ালেই ছিলেন মুকেশ। বাংলা দলের সবচেয়ে লাজুক ছেলেটা সেসব নিয়ে ভাবতেই নারাজ। মুকেশের ছোট্ট উত্তর, "প্রচার বেশি চাইনা, রোজ উইকেট পেলেই হবে।" সোমবারের পর থেকে মুকেশ কুমারই এখন আলোচনার শীর্ষে। বাংলার বোলিংয়ের অন্যতম অস্ত্র মুকেশকে নিয়ে আপ্লুত কোচ রণদেব।
advertisement
রঞ্জি কেরিয়ারের প্রথম উইকেট ছিল বীরেন্দ্র শেওয়াগ। তবে মুকেশ মনে করেন কর্ণাটকের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালটাই সেরা সাফল্য। তবে এখনই বেশি সেলিব্রেশন করতে চান না। বাংলাকে রঞ্জি জিতিয়ে তবেই বাকি সেলিব্রেশন। মুকেশ চান বাংলাকে চ্যাম্পিয়ন আরও একবার সতীর্থদের কাঁধে চেপে মাঠ ছাড়তে।
ERON ROY BURMAN
বাংলা খবর/ খবর/খেলা/
#RanjiTrophy: বাংলার জয়ের নায়ক এক ট্যাক্সি চালকের ছেলে! জেনে নিন তাঁর লড়াইয়ের কাহিনি
Next Article
advertisement
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! তারপরেই, এই এলাকার পুজোর থিম দেখলে অবাক হবেন!
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! অন্যরকম থিম এই এলাকায়
VIEW MORE
advertisement
advertisement