সুন্দরবন আবার যাওয়া যাবে তো? আমফানে তছনছ হয়ে যাওয়া ঝড়খালি জেটি দেখে উঠছে প্রশ্ন

Last Updated:

গোটা ঝড়খালি জেটি লন্ডভন্ড হয়ে পড়ে আছে। জেটির পুরো অংশটাই ঝড়ের তাণ্ডবে ভেঙে গেছে। যা অবস্থা দেখে মনে হল এই জেটিকে ফের নতুন করে তৈরি করতে হবে।

#কলকাতা: লকডাউন উঠে গেলেও আপাতত সুন্দরবন যাওয়া বিশবাঁও জলে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ কেটে গেলেও সুন্দরবন যাওয়ার জন্য পর্যটকদের কাছে খুব একটা ভালো খবর নয়। কারণটা অবশ্যই বুধবারের বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় আমফান। ঘূর্ণিঝড়ের এতটাই তান্ডব যে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঝড়খালি জেটিকেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। ছবি দেখলে বোঝা যাচ্ছে না যে এটা সেই ঝড়খালি জেটি যেখান থেকে পর্যটকরা লঞ্চ ধরেন সুন্দরবন যাওয়ার জন্য।
ঝড়খালি যেটির কিছুদূর আগেই রয়েছে সুন্দরবন যাওয়ার বুকিং অফিস। সেই বুকিং অফিসের আবার কিছুটা দূর এগিয়ে এলেই  দেখা যাবে লাইন দিয়ে সাড়ি সাড়ি দোকান। কিছু দোকান অবশ্য খাবারের আবার কিছু দোকান স্থানীয় কিছু জিনিস বিক্রির। এমনিতেই লকডাউন চলার জন্য গত দু মাস ধরেই দোকান গুলি বন্ধ রয়েছে। রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে এই দোকানগুলি সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীদের। কিন্তু প্রশাসনের তরফে আগে থেকে এই ঝড়ের সম্পর্কে সর্তকতা জারি করা হলেও এমনটা অবশ্য মানসিক প্রস্তুতি ছিল না এই ব্যবসায়ীদের। ঝড়ে দোকানের কোন চিহ্ন থাকবে না এমনটা টেরও পাইনি এখানকার স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
advertisement
বাসন্তী থেকে ঝড়খালি জেটির দূরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার। রাস্তাটি খুবই জনপ্রিয় পর্যটকদের কাছে। কারণটা অবশ্যই সবুজায়ন। কেননা রাস্তার দু'ধারে অজস্র গাছ। কিন্তু বুধবারের ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডব একেবারেই এই সবুজায়ান কে রাস্তায় নামিয়ে এনেছে। রাস্তায় ক্রমশই ঝড়খালি জেটির দিকে এগোতে এগোতে দেখা গেল সবুজের চিহ্ন মাত্র নেই। সব গাছগুলি রাস্তাতেই ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ে আছে। কিছু গাছ আবার লাইট পোস্টের উপরে পড়ে লাইট পোস্টগুলি কেও ফেলে দিয়েছে মাটিতে। দেখে যেন মনে হচ্ছিল এখানেই ধ্বংসলীলা চালিয়েছে বিধ্বংসী এই ঘূর্ণিঝড়।
advertisement
advertisement
সাধারণত শীতকালে ঝড়খালি তে পর্যটকদের প্রচুর আনাগোনা বাড়ে। অবশ্য ঝড়খালি থেকে বাঘ দেখা না গেলেও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখার মত। ঝড়খালির বাজারে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এক যুবক বলছিল " সবে আমাদের এখানে পরিবারগুলো আয়লার থেকে উঠে দাঁড়িয়েছিল। বুলবুল বা ফণী হলেও তার থেকে আয়লার প্রভাবটাই ছিল সব থেকে বেশি।কিন্তু আমফান আমাদের কাছে এখন অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সবকিছুই শেষ করে দিয়েছে। একে লকডাউন চলছে তার উপরে আমফান আমরা জানি না শেষ পর্যন্ত আমরা কি করে বাঁচবো?"
advertisement
ঝড়খালি জেটি যাওয়া মাত্রই দেখা মিলল এক লঞ্চ চালকের। তিনি অবশ্য দেখতে এসেছিলেন জেটির কি অবস্থা। যদিও জেটির আশেপাশে কোন লঞ্চ ছিলনা। প্রশাসনের তরফে আগে থেকেই বিপদ সংকেত দেওয়ায় লঞ্চগুলোকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাহলে হবে কি আর। ক্ষতি তো হয়ে গেছে। লঞ্চ চালকটি দেখে বলছিলেন " আয়লার পর পর আমাদের প্রচুর ক্ষতি হয়েছিল। গত কয়েক বছর সুন্দরবন যাওয়ার পর্যটক এর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় আমরা কিছুটা হলেও লাভের মুখ দেখছিলাম। সাম্প্রতিক লকডাউন আমাদের ক্ষতির মুখে ফেলেছে। কিন্তু আমফান যা করে দিল তাতে মনে হয় না আগামী এক বছর আমরা কোন পর্যটককে সুন্দরবন নিয়ে যেতে পারবো।"
advertisement
গোটা ঝড়খালি জেটি লন্ডভন্ড হয়ে পড়ে আছে। জেটির পুরো অংশটাই ঝড়ের তাণ্ডবে ভেঙে গেছে। যা অবস্থা দেখে মনে হল এই জেটিকে ফের নতুন করে তৈরি করতে হবে। জেটির অবস্থা দেখতে দেখতে লঞ্চ চালকটি বলছিলেন " আমার যা মনে হয় এই জেটি ঠিক হতেই সময় লেগে যাবে প্রায় এক বছর। এমনিতেই লকডাউন চলার জন্য আমাদের রোজগার বন্ধ। তার উপরে সুন্দরবন যাওয়া বন্ধ হয়ে গেলে আমরা কি করে ভবিষ্যৎ বাঁচাতে পারব তা নিশ্চিত নই।"
advertisement
ঝড়খালি থেকে সোমরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়
view comments
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
সুন্দরবন আবার যাওয়া যাবে তো? আমফানে তছনছ হয়ে যাওয়া ঝড়খালি জেটি দেখে উঠছে প্রশ্ন
Next Article
advertisement
Rhino rescue: বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
  • ১৩ দিনের অপারেশন রাইনোতে ১০টি গন্ডার উদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা

  • বিপর্যয়ের সময় জলদাপাড়া থেকে ভেসে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি গন্ডার

  • অক্লান্ত পরিশ্রমের পর বনকর্মীরা গন্ডারগুলোকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হন

VIEW MORE
advertisement
advertisement