বটগাছে ঢাকা পাথরের দেওয়াল, গা ছমছমে পরিবেশ! আজও রাজ্যের এই মন্দিরের দেবী কালী ভারতমাতা রূপে পূজিতা, জানুন
- Published by:Madhab Das
- hyperlocal
- Reported by:Dipika Sarkar
Last Updated:
ওঁ বন্দে মাতরম জয় জয় ভারতবর্ষম।চিরাচরিত রীতি মেনে ভবানী পাঠকের কালীমন্দিরে আজও ভারত মাতা রূপে বন্দে মাতরম মন্ত্রে পূজিত হন মা কালী।
দুর্গাপুর, পশ্চিম বর্ধমান, দীপিকা সরকার: ওঁ বন্দে মাতরম জয় জয় ভারতবর্ষম।চিরাচরিত রীতি মেনে ভবানী পাঠকের কালীমন্দিরে আজও ভারত মাতা রূপে বন্দে মাতরম মন্ত্রে পূজিতা হন মা কালী। দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের অম্বুজা নগরিতে রয়েছে দেবীচৌধুরানী ভবানী পাঠকের কালীমন্দির। ওই মন্দিরের কালী মায়ের পুজোর প্রথম মন্ত্র শুরু হয় ‘ওঁ বন্দে মাতরম জয় জয় ভারতবর্ষম’। কে এই মন্ত্রে পুজিত করতেন এবং কেনই বা করতেন? সেই নিয়ে রয়েছে ব্রিটিশ বিদ্রোহী দেশপ্রেমীদের ইতিহাস।
একসময় দুর্গাপুরের এই মন্দির ছিল বিদ্রোহী দলের গুপ্ত ঘাঁটি। শিল্পাঞ্চলের প্রাণকেন্দ্র সিটি সেন্টার আজও ইতিহাসের গন্ধে ম ম করে। ওই কালীমন্দিরের পাশেই রয়েছে বেলে পাথরের তৈরি একটি বিশাল সুরঙ্গ। একসময় বিপ্লবীদের আস্তানা ছিল ভবানী পাঠকের মন্দিরে। স্বাধীনতা সংগ্রামের বিপ্লবীরা মা কালীর আশীর্বাদ নিয়ে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যেতেন। তাই প্রচলিত মন্ত্রে নয়, ভবানী পাঠকের মা কালী আজও বন্দে মাতরম মন্ত্রে পূজিত হন। ভবানী পাঠক প্রতিষ্ঠিত এই মন্দিরে ডাকাতরানি দেবী চৌধুরানীও থাকতেন। ভবানী পাঠক ও দেবী চৌধুরানী তাঁদের দলবল নিয়ে ব্রিটিশ সরকারের সংগৃহীত খাজনা লুঠ করে দরিদ্র মানুষদের ও বিপ্লবীদের মধ্যে বিলিয়ে দিতেন।
advertisement
advertisement
দেশ সেবায় সাহায্য করতেন বলে শোনা যায়। ব্রিটিশরা তাঁদের ডাকাত আখ্যা দিয়েছিলেন। সেই সময়কার অনেক নিদর্শন আজও বর্তমান। এখনও পশ্চিম বর্ধমানে গা-ছমছমে পরিবেশের এই মন্দিরের প্রধান বেদিতে লেখা রয়েছে “ওঁ বন্দে মাতরম্ জয় জয় ভারতবর্ষম।” দেশের সেবায় খাজানা লুঠ করার সময় তাঁরা ওই মন্ত্রে কালী মাকে পূজিত করতেন। পাথরের দেওয়ালের প্রাচীন মন্দির ঢাকা পড়ে গিয়েছে বহু পুরানো একটি বটগাছের ডালপালায়। পাশেই গড়ে উঠেছে আধুনিক মন্দির। মন্দির চত্বরে রয়েছে প্রাচীন একটি কুয়ো। মন্দিরের পাশে আছে বেলেপাথরের তৈরি একটি ঐতিহাসিক সুড়ঙ্গ। পিছনে রয়েছে বিশাল এক জলাশয়। এগুলি সবই এলাকার ঐতিহাসিক নিদর্শন, এমনই দাবি কর্তৃপক্ষের। জলাশয়টি লোকমুখে ‘ইছাই সরোবর’ নামে পরিচিত।
advertisement
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
মন্দিরের সেবায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মন্দিরে প্রতিবছর মায়ের বাৎসরিক পুজো হয় কৃষ্ণপক্ষে ভূত চতুর্দশীতে অর্থাৎ শ্যামাপুজোর আগের দিন। পুজোয় প্রচুর ভক্ত সমাগম হয়। ঐতিহাসিকবিদ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিট্রিশ বিদ্রোহের অন্যতম চরিত্র ভবানী পাঠক। যাদের কার্যকলাপ মূলত ছিল উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন গ্রামে। জলপাইগুড়ির বৈকন্ঠপুরে একটি চা বাগানে রয়েছে দেবী চৌধুরানী ও ভবানী পাঠকের মন্দির। ইতিহাসে বর্ণিত তথ্যের ভিত্তিতে, এই দুইজন মূলত ডাকাতি করতেন দুষ্টের দমন করতেন। ইংরেজদের সংগৃহীত খাজনা লুঠ করে গরিব ও বিপ্লবীদের মধ্যে বিলিয়ে দিতেন।
advertisement
কিন্তু এই ভবানী পাঠক দুর্গাপুরে এলেন কোথা থেকে? ইতিহাসবিদদের মতে, দেবী চৌধুরানী যে বজরা নিয়ে ডাকাতি করতে যেতেন, সেই বজরা নিয়ে ভেসে এসে দামোদরের পাড়ে গভীর জঙ্গলে আস্তানা গড়ে তুলেছিলেন। পরবর্তী ক্ষেত্রে এই জায়গা থেকেই নিজের কাজ চালিয়ে যেতেন ঐতিহাসিক দুই চরিত্র ভবানী পাঠক ও দেবী চৌধুরানী।
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
Kolkata [Calcutta],Kolkata,West Bengal
First Published :
August 13, 2025 4:17 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
বটগাছে ঢাকা পাথরের দেওয়াল, গা ছমছমে পরিবেশ! আজও রাজ্যের এই মন্দিরের দেবী কালী ভারতমাতা রূপে পূজিতা, জানুন