সমুদ্রবাঁধ ভাঙছে শঙ্করপুরে, গভীর নিম্নচাপে ফের ভয়াবহ পরিস্থিতির আশঙ্কা

Last Updated:

শঙ্করপুরে আবারও সেই পুরানো দুঃস্বপ্ন—ভাঙা বাঁধে প্রবল ঢেউয়ের হানা।

+
শঙ্করপুরে

শঙ্করপুরে ভাঙা সমুদ্রবাঁধ

মদন মাইতি, শঙ্করপুর, পূর্ব মেদিনীপুর: বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়েছে গভীর নিম্নচাপ। তার জেরে সমুদ্র এখন অস্বাভাবিকভাবে উত্তাল। উপকূলজুড়ে শুরু হয়েছে ভারী বৃষ্টি। সমুদ্র শুরু হয়েছে জলোচ্ছ্বাস। এই পরিস্থিতিতে পূর্ব মেদিনীপুরের শঙ্করপুর উপকূলে আবারও আতঙ্ক ছড়িয়েছে। কারণ, দিঘা মোহনা থেকে শঙ্করপুর পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্রবাঁধ বছরের পর বছর ভাঙা অবস্থায় পড়ে আছে। ২০২১ সালে ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’-এর ধাক্কায় সদ্য নির্মিত কংক্রিটের বাঁধ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। তারপর থেকে সেই ভাঙন আর থামেনি। বরং দিনে দিনে তা আরও ভয়াবহ আকার নিয়েছে। এখন সামান্য জোয়ারেই ঢুকে পড়ছে সমুদ্রের জল। সামনে রয়েছে ষাঁড়াষাড়ির কোটাল। তার আগেই বাঁধ মেরামত না হলে বিপদ নিশ্চিত।
এই এলাকার বহু মানুষ মূলত মৎস্যজীবী এবং দিনমজুর। তাঁদের ঘরবাড়ি, বাজার, রাস্তা—সবই সমুদ্রের খুব কাছাকাছি। বর্ষায় একটু বেশি ঢেউ উঠলেই তাঁদের বাড়ির উঠোনে জল ঢুকে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দা আশীষ ভট্টাচার্য বলেন, “প্রতিবার জলোচ্ছ্বাসের সময় মনে হয় এবার বুঝি শেষ। বাঁধ ভেঙে গেছে, সরকার কিছু করে না।” এক গৃহবধূধ জানান, “ঘরে জল ঢুকে যায়। খাবার নষ্ট হয়। ছোট বাচ্চা নিয়ে এই দুর্দশায় থাকা যায় না।” প্রশাসনের নীরবতায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’-এর পর একবার বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু সেই কাজ মাঝপথেই থেমে যায়। বর্তমানে কাল পাথরের মধ্যে ছড়িয়ে আছে ভাঙা কংক্রিটের চাঁই। অনেক জায়গায় বাঁধের অস্তিত্বই নেই। ঢেউ এসে সরাসরি ধাক্কা মারছে পাড়ে।
advertisement
advertisement
এতে ভাঙন আরও বাড়ছে। বিশেষত বিশ্ববাংলা পার্কের সংলগ্ন এলাকায় ভাঙনের গতি বেশি। ওই অংশ থেকে সামান্য দূরেই রয়েছে শঙ্করপুর মৎস্যবন্দর। যেকোনও বড় জলোচ্ছ্বাসেই বন্দর প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বাঁধ ভেঙে গেলে শুধু বসতি নয়, মারাত্মক ক্ষতি হবে জেলার অর্থনীতিরও। শঙ্করপুর বন্দর থেকে প্রতিদিন বিপুল মাছ রফতানি হয়। এই বন্দর কার্যত মৎস্যজীবীদের প্রাণ। সেটি বিপন্ন হলে হাজার হাজার মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়বেন। তার সঙ্গে ক্ষতি হবে রাজ্যের রাজস্বেরও। ভাঙা বাঁধ মানে শুধু একটি রাস্তা বা দেয়াল নয়—একটি অঞ্চলের জীবনরেখা ভেঙে পড়া। বছরের পর বছর ধরে শঙ্করপুরের ভাঙা সমুদ্রবাঁধ সংস্কার হয়নি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিকবার পরিদর্শন হলেও, বাস্তবে কাজ কিছুই হয়নি। এর ফলে উপকূলবর্তী জনজীবন রোজ এক অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
advertisement
বর্তমানে বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। সামনে রয়েছে ষাঁড়াষাড়ির কোটাল। এই অবস্থায় দ্রুত কোনও ব্যবস্থা না নিলে, শঙ্করপুরে বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। স্থানীয়রা স্পষ্টভাবে জানাচ্ছেন—এটাই শেষ সুযোগ। ভাঙা বাঁধের জায়গায় স্থায়ী ও মজবুত সমুদ্রপ্রাচীর না হলে, পরবর্তী দুর্যোগে গোটা এলাকা জলের তলায় চলে যেতে পারে। শুধু ঘরবাড়ি নয়, ক্ষতি হবে বহু মানুষের জীবিকা, ভেঙে পড়বে মৎস্যবন্দর, বিপর্যস্ত হবে পর্যটন ও অর্থনীতি।
view comments
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
সমুদ্রবাঁধ ভাঙছে শঙ্করপুরে, গভীর নিম্নচাপে ফের ভয়াবহ পরিস্থিতির আশঙ্কা
Next Article
advertisement
Rhino rescue: বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
  • ১৩ দিনের অপারেশন রাইনোতে ১০টি গন্ডার উদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা

  • বিপর্যয়ের সময় জলদাপাড়া থেকে ভেসে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি গন্ডার

  • অক্লান্ত পরিশ্রমের পর বনকর্মীরা গন্ডারগুলোকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হন

VIEW MORE
advertisement
advertisement