#বাঁকুড়া: সারদার জন্ম ভিটে বাঁকুড়ার জয়রামবাটি। সারা বছর মায়ের আর্শীবাদ নিতে অগনিত ভক্তের সমাগম হয় জয়রামবাটির মাতৃ মন্দিরে । এখানকার দুর্গাপুজোতেও ঢল নামে বহু ভক্তের। নিষ্ঠা ও প্রাচীন নিয়ম মেনে আজও দেবী দুর্গার পুজা পালিত হয় জয়রামবাটি মাতৃ মন্দিরে। তবে করোনা আবহে মায়ের গাঁয়ে মায়ের আরাধনা হবে ক্ষুদ্র আয়োজনের মধ্য দিয়ে। স্বাস্থ্যবিধির দিকে দৃষ্টি দিয়ে নিষ্ঠা ও প্রাচীন রীতি মেনেই দেবী বন্দনা হবে জয়রামবাটীতে।
১৮৫৩ সালে জয়রামবাটির মুখোপাধ্যায় পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন মা সারদা দেবী। অল্প বয়সে বিয়ে হয় কামারপুকুরের শ্রী রামকৃষ্ণদেব অর্থাৎ গদাধর চট্টোপাধ্যারের সাথে। বিয়ের পর জয়রামবাটিতে বেশ কয়েক বছর ছিলেন তিনি । পরে ছিলেন কামারপুকুর এবং কলকাতায়। জয়রামবাটির পুরানো বাড়ি ও নতুন বাড়িতে দীর্ঘ কয়েক বছর কাটিয়ে ছিলেন তিনি। জয়রামবাটির পর দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করেছেন কলকাতার বাগবাজারে। তবে শেষ সময়ে প্রায় চার বছর জয়রামবাটির নতুন বাড়িতে কাটিয়েছিলেন জগত জননী মা সারদা।
জয়রামবাটীতে দুর্গাপুজা হত না। জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু হয় বহু কাল আগে। জানা গিয়েছে মা সারদা দেবীর মা শ্যামা সুন্দরী দেবী শুরু করেছিলেন জগদ্ধাত্রী পুজো। ধুমধাম করে আজও মহাসমারোহে জগদ্ধাত্রী পুজো পালিত হয়। ১৯২৩ সালে বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজ স্বামী সারদানন্দজীর উদ্যোগে সারদা দেবীর দুটি বাড়িকেই অক্ষত রেখে জয়রামবাটিতে প্রতিষ্ঠা করা হয় মিশন । ১৯২৫ সালে ঘট পেতে দুর্গা পুজা শুরু হয় জয়রামবাটিতে। পরবর্তী কালে ১৯৫৩ সালে মাতৃ মন্দির চত্বরে মন্ডপ করে মহাসমারোহে নিষ্ঠা ও ভক্তির মধ্য দিয়ে মাটির প্রতিমা তৈরী করে দেবী বন্দনা শুরু হয়। বিশুদ্ধ পঞ্জিকা মতে মন্ত্র , বিধি ও তিথি নিয়মানুসারে আজও পালন করা জয়রামবাটী মাতৃমন্দিরে দুর্গাপূজা।প্রতিবছর অষ্টমীর দিন তিথি মেনেই কুমারী পুজা পালন করা হয় জয়রামবাটিতে। জয়রামবাটি মাতৃ মন্দিরের পুজো দেখতে ভিড় জমে হাজার হাজার দুরদুরান্ত থেকে আসা ভক্তদের।
বর্তমানে করোনা পরিস্থিতিতে ক্ষুদ্র আয়োজনের মধ্য দিয়ে পুজিতা হবেন দেবী দুর্গা। করোনা মহামারীর কথা মাথায় রেখে স্বাস্থ্য সুরক্ষার দিকে বিশেষ দৃষ্টি দিয়ে সমারোহ ছাড়ায় শুধুমাত্র প্রাচীন নিয়ম ও নিষ্ঠার সাথে দুর্গাপুজা পালিত হবে জয়রামবাটি মাতৃমন্দিরে। করোনা পরিস্থিতির কারণে প্যান্ডল করে দুর্গাপুজা আয়োজন হচ্ছে না জয়রামবাটি মাতৃমন্দিরে। নাট মন্দিরের মধ্যে দুর্গাপুজা আয়োজন করা হয়েছে। করোনা আবহে কুমারী পুজো হবে কিনা সে বিষয়ে এখন নিশ্চিত নয়। তবে সব নিয়ম কানুন রক্ষা করা সম্ভব হলে হতে পারে কুমারী পুজো, এমনটায় জানাচ্ছেন জয়রামবাটী মাতৃ মন্দির কর্তৃপক্ষ।
তবে পুজো দেখতে যে সমস্ত ভক্ত এবং দর্শনার্থী আসবেন স্বাস্থ্য বিধি এবং সামাজিক দুরত্ব মেনেই পুজো দেখার সুযোগ পাবেন। বেশী ক্ষণ ঘোরার সুযোগ পাওয়া যাবে না। স্বল্প সময়ের জন্য দর্শন ও প্রণাম সারতে পারবেন ভক্তরা। ভীড় কোন ভাবেই করা যাবেনা মাতৃমন্দির চত্বরে। সময় মেনেই মিলবে দর্শনের সুযোগ৷ সকাল সাড়ে আট থেকে ১১টা এবং বিকেলে সাড়ে তিনটা থেকে সাড়ে পাঁচটা পর্য্যন্ত প্রধান ফটক খোলা থাকবে। ভক্তদের প্রসাদ গ্রহণ এবং মাতৃ মন্দির গেস্ট হাউসে থাকা সম্পুর্ন বন্ধ। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে বিভিন্ন স্বাস্থ্য বিধি মেনেই জয়রামবাটিতে দুর্গাপুজাতে বিশেষ ব্যবস্থা জয়রামবাটি মাতৃমন্দির কর্তৃপক্ষের।
Mritunjoy Dasনিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: durga-puja-2020, Puja-in-corona, Traditional Durga Puja 2020