মা স্কুলের অস্থায়ী সাফাইকর্মী, সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে মাধ্যমিকে সেই স্কুলেরই সেরা সঈদুল
- Published by:Shubhagata Dey
- news18 bangla
Last Updated:
এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় স্কুলে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে সঈদুল। সব বাধা কাটিয়ে মাধ্যমিকে ৫৯৯ নম্বর পেয়ে সঈদুল আজ গ্রাম ও স্কুলের গর্ব ।
#হাওড়া: স্বামীর মৃত্যুর পর তিন সন্তানের পেট ভরাতে এলাকার স্কুলে সাফাইকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন মাসুরা বিবি। ছোট ছেলেকে সঙ্গে করেই কাজে যেতেন। স্কুলের পোশাক পরে আসা পড়ুয়াদের দেখে পড়াশোনার ইচ্ছে হয়েছিল ছোট্ট ছেলেটার। তার ইচ্ছাকে সন্মান জানাতে স্কুলের শিক্ষকরা এগিয়ে আসেন। স্কুলে ভর্তি হয় সে। আর আজ সেই ছাত্রের ফলাফলেই গর্বিত গোটা স্কুল।
এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় স্কুলে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে সঈদুল। তার পরিবার প্রতিবেশীরা কেউ স্কুলের আঙিনায় পা পর্যন্ত রাখেনি। বাড়িতে জ্বলেনি শিক্ষার আলো, পারিপার্শ্বিক পরিবেশও শিক্ষার অনুকূলে নয়। এহেন চরম প্রতিবন্ধকতার মধ্যে দাঁড়িয়েও স্বপ্নপূরণের লড়াই চালিয়ে কিশোর সেখ সঈদুল আলম আজ উলুবেড়িয়া হীরাগঞ্জের হীরের টুকরো ছেলে হয়ে উঠল।
একচিলতে ভাঙাচোরা ঘরে মা ও তিন ভাইকে নিয়ে কোনওরকমে দিনযাপন। সঈদুলের বড় দাদা জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী । তিন সন্তানের আহার জোগাড় করতেই হিমশিম খেতে হয় পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী সঈদুলের মা'কে। তার মধ্যে সন্তানদের পড়াশোনার কথা চিন্তায় করতে পারেননি তিনি। স্থানীয় স্কুলে সাফাইকর্মী হিসাবে কাজ করে মাসে ৮০০ টাকা আয়। বড় ছেলের প্রতিদ্বন্দ্বী ভাতা আর জরির কাজ করে কোনও রকমে সংসার চলে। সকাল থেকে স্কুল তারপর ঘরে ফিরে জরির কাজ। ভাঙা ঘরে রাতের পর রাত জেগে লড়াই করে আজ সঈদুল সাফল্যের প্রথম সিঁড়িতে পা রাখল।
advertisement
advertisement
ভাতের হাঁড়ি না চড়লেও অঙ্ক কষা থেমে থাকেনি। সব বাধা কাটিয়ে মাধ্যমিকে ৫৯৯ নম্বর পেয়ে সঈদুল আজ গ্রাম ও স্কুলের গর্ব । টিউশন বা কোচিং ক্লাস না জুটলেও, স্কুলের শিক্ষকদের ভালবাসা ও সাহায্যে কোনও কমতি ছিল না। স্কুল ছুটির শেষে মেধাবী ছাত্রটিকে আলাদা করে পড়িয়েছেন শিক্ষকরা। কখনও বই-খাতা কিনে দিয়েছেন, জানিয়েছে সঈদুল।
advertisement
তবে ৫৯৯ নম্বর পেয়ে পাস করেও আনন্দ তাকে স্পর্শ করতে পারেনি। উল্টে আরও একরাশ চিন্তা তাকে গ্রাস করছে। মাধ্যমিক পাস করে বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে চায় সে। কিন্তু কী করে এগিয়ে নিয়ে যাবে পড়াশোনা, বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে তো অনেক খরচ, কোথা থেকে আসবে টাকা! তাহলে কি এখানেই শেষ হয়ে যাবে সব স্বপ্ন? সেই চিন্তাতেই ঘুম উড়েছে মা মাসুরা বিবির। তিনি বলেন, "কখনও ভাবতে পারিনি আমার ছেলে এতো ভাল রেজাল্ট করবে। চাই না ছেলের পড়াশোনা বন্ধ হোক। কেউ একটু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলে ছেলেটা লেখাপড়া করতে পারে আরও একটু।"
advertisement
Debasish Chakraborty
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
First Published :
July 15, 2020 10:43 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
মা স্কুলের অস্থায়ী সাফাইকর্মী, সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে মাধ্যমিকে সেই স্কুলেরই সেরা সঈদুল