লকডাউনের সুযোগ নিয়ে অবাধে চলছে পরিযায়ী পাখি শিকার, খেজুরির হলুদবাড়ি অঞ্চল হয়ে উঠছে বধ্যভূমি !

Last Updated:

অভিযোগ, সুস্বাদু এই মাংস খেতে তাদের বেশ লাগছে বলে প্রকাশ্যেই ‘দাবি’ করছে চোরা শিকারীরা।

#হলদিয়া: লক ডাউনের নিস্তব্ধতায় মানুষ যখন গৃহবন্দি, সেই সময় ও সুযোগকে কাজে লাগিয়ে খেজুরির হলুদবাড়ি এলাকায় পরিযায়ী পাখি শিকারে মত্ত হয়ে উঠেছে এক শ্রেণীর চোরা শিকারীরা। দুর দুরান্ত থেকে আসা নয়, পাখি শিকারে মেতে উঠেছে এলাকারই এক শ্রেণীর মানুষ। বাধা দেওয়ার কেউ নেই। প্রায় সবাই ছুটির মেজাজে। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই চলছে এই পাখি শিকার।
মূলত খেজুরির হলুদবাড়ি এলাকাতেই  চলছে এই বে-আইনিভাবে পাখি শিকার। লক ডাউনের কারনে ঘরবন্দি হতে হয়েছে। একঘেয়েমিও বাড়ছে। সেই একঘেয়েমি  কাটাতেই পাখিশিকার চলছে বলে স্থানীয় মানুষজনের অভিযোগ। রাতে মদের আসরে ভোজনের মেনু হিসেবে থাকছে এইসব পাখির মাংস। একটি পাখি মারলে প্রায় দু’কেজি থেকে আড়াই কেজি মাংস পাওয়া যাচ্ছে।
অভিযোগ, সুস্বাদু এই মাংস খেতে তাদের বেশ লাগছে বলে প্রকাশ্যেই ‘দাবি’ করছে  চোরা শিকারীরা। কিন্তু পাখি শিকার করা যে ঘোরতর অন্যায়, সেটা অবশ্য মানছেন না অভিযুক্তরা। মানছেন না এবং পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকে কোনও বাধাও আসছে না বলে লকডাউনের এই কঠিন সময়ে প্রতিদিনই চোরা শিকার বাড়ছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এসব বেশ কয়েকদিন ধরেই চলছে বলে  জানান এলাকার সমাজ কর্মী দেবাঞ্জন গুচ্চাইত। তিনি বলেন, লকডাউনের  সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পরিযায়ী পাখি শিকার করা চলছে।
advertisement
advertisement
খেজুরির হলুদবাড়ি এলাকায় প্রতিদিনই প্রচুর শামুখ খোল সহ বিভিন্ন পরিযায়ী পাখির ভীড় লক্ষ্য  করা যাচ্ছে। ছররা বন্দুক হাতে নিয়েই এইসব পাখি শিকার চলছে। খাঁচা রেখেও চলছে পাখি শিকার। তবে পুলিশ প্রশাসন চুপ থাকলেও বসে নেই স্থানীয় মানুষজন। পুলিশ আর বন দফতরকে জানিয়েও কাজ না হওয়ায় তারাই পাকড়াও চালিয়ে  চোরা শিকারিদের আটক করছেন। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনকে পাকড়াও করে ব্লক প্রশাসনের নজরে আনেন স্থানীয়রা। খেজুরির বিডিও রমল সিং বিরদী এরপর নিজেই বন দফতরের অধিকারিকদের বিষয়টি জানান। বাজকুল ফরেস্ট রেঞ্জ-এর আধিকারিকরা গ্রামবাসীদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া পাখি নিজেদের হেফাজতে নেন।
advertisement
জানা গিয়েছে, মূলত এশীয় শামুকখোল মাঠ, মিষ্টি জলাশয়, হ্রদ, ধানক্ষেত, উপকূলীয় বন ও নদীর পাড়ে বিচরণ করে। সচরাচর ছোট ঝাঁকে থাকে।বড় জঙ্গলে রাত্রিবাস ও প্রজনন করে। খাবারের অভাব না হলে এরা সাধারণত এক জায়গা থেকে নড়ে না। কমবয়েসী শামুকখোলগুলি উড়তে শেখার পর বিশাল অঞ্চলে পরিভ্রমণ করে। ভোরে আবাস ছেড়ে খাদ্যের সন্ধানে বের হয়।  ডানা ঝাপটিয়ে আর গ্লাইড করে দল বেঁধে জলাভূমির দিকে উড়ে যায়। দিনের উষ্ণতম সময়ে ডানা না নাড়িয়ে বিশেষ কৌশলে ধীরে ধীরে চক্রাকারে আকাশের উঁচুতে উঠে যায় আর দল বেঁধে ঘুরতে থাকে। আবার জলাশয়ের একদিক থেকে আরেক দিকে ক্রমান্বয়ে উড়ে উড়ে খাদ্য খুঁজে বেড়ায়। জলাশয়ের ধারে বা অগভীর জলাশয়ে হেঁটে হেঁটে কাদায় ঠোঁট ঢুকিয়ে খাবার খুঁজে বেড়ায়। এদের খাদ্য তালিকার বিরাট অংশ জুড়ে রয়েছে শামুক, ঝিনুক আর গুগলি। এছাড়া ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী, ব্যাঙ ও কাঁকড়াও খায়। সচরাচর জলের নিচে শামুকের খোলক ভেঙে এরা জলের উপর মাথা তুলে শামুকের মাংস গিলে খায়। সাধারনত এর থেকেই শামুক খোল নামে পরিচিত এশীয় মহাদেশের এই পাখি। এইসবরেই শিকার চলছে খেজুরিতে। যার ফলে হলুদবাড়ির মতো পরিযায়ীদের প্রিয় জায়গাই হয়ে উঠছে পাখিদের বধ্যভূমি!
advertisement
 SUJIT BHOWMIK
view comments
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
লকডাউনের সুযোগ নিয়ে অবাধে চলছে পরিযায়ী পাখি শিকার, খেজুরির হলুদবাড়ি অঞ্চল হয়ে উঠছে বধ্যভূমি !
Next Article
advertisement
Rhino rescue: বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
  • ১৩ দিনের অপারেশন রাইনোতে ১০টি গন্ডার উদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা

  • বিপর্যয়ের সময় জলদাপাড়া থেকে ভেসে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি গন্ডার

  • অক্লান্ত পরিশ্রমের পর বনকর্মীরা গন্ডারগুলোকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হন

VIEW MORE
advertisement
advertisement