Mamata Banerjee: ত্রাণের কাজে ঢিলেমি নয়...বার্তা আধিকারিকদের, আজ বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বীরভূমে বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী
- Published by:Siddhartha Sarkar
- news18 bangla
- Reported by:ABIR GHOSHAL
Last Updated:
Mamata Banerjee on West Bengal Flood: ত্রাণের কাজে ঢিলেমি নয়, ফের বার্তা আধিকারিকদের।
আবীর ঘোষাল, কলকাতা: ‘‘নিজেদের বড় বড় মূর্তি বানিয়ে, বড় বড় বিল্ডিং বানিয়ে টাকা খরচ না করে ফ্লাড কন্ট্রোলের এক চতুর্থাংশ টাকা যদি আমরা পাই, আমরা কাজ করতে পারি।’’ বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে প্রায় ১ ঘণ্টার প্রশাসনিক বৈঠক সেরে এভাবেই বিজেপিকে বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তাঁর সাফ কথা, ‘‘বাংলার বঞ্চনা মানব না। মানুষই এর উত্তর দেবে। গতকালের পরে আজ, মঙ্গলবার ফের প্রশাসনিক বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বীরভূম জেলার প্রশাসনিক আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে তিনি এই বৈঠক করবেন।
গতকাল, সোমবার একাধিক ত্রাণ শিবির পরিদর্শন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে আশ্বস্ত করে বলেন, ‘‘ঘাবড়াবেন না প্রশাসন আপনাদের সঙ্গে আছে। জেলাশাসক ও এসডিওকে ভিডিওতে নির্দেশ দেন ত্রাণকার্যে যেন কোনওরকম অবহেলা না করা হয়।’’ মন্ত্রী-বিধায়ক-সংসদদের সঙ্গে নিয়ে ত্রাণশিবিরে সকলের সঙ্গে কথা বলে ত্রাণ তুলে দেন কয়েকজনের হাতে।
advertisement
advertisement
গতকাল, সোমবার প্রশাসনিক বৈঠকের শুরুতেই জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের ফিল্ডে নেমে কাজ করার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, কে কী করছে সব খবর তিনি রাখেন। প্রশাসনের এক আধিকারিককে বাড়িতে বসে না থেকে ফিল্ডে নেমে কাজ করার নির্দেশ দেন। গতকাল বৈঠকে বর্ধমানে দামোদর নদের ওপর দ্বিতীয় সেতু নির্মাণের কাজ এখনও শুরু না হওয়ায় রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
advertisement
বন্যা পরিস্থিতিতে সকলকে আরও সক্রিয়ভাবে কাজ করতে বলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এই দু-তিনদিনে আরও বৃষ্টি হবে। যেসব জায়গায় জল জমে আছে, আবার জল জমবে, আবার ডিভিসি যদি জল ছাড়ে তাহলে বিপদ বাড়বে। এইসব জায়গায় বিডিও, ডিএম, আইসিদের বলা হয়েছে মানুষকে বুঝিয়েসুঝিয়ে কাজ করবেন। কেউ বাসস্থান ছাড়তে চায় না। বিধায়কদেরও গুরুত্ব দিতে বলেছি। বন্যার জল চলে গেলে বর্ধমান, বাঁকুড়া, বীরভূম, নদীয়া, উত্তর ২৪ পরগনা প্রভৃতি জেলার যেগুলি শস্যভাণ্ডার সেই সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের জমির শস্যবিমার টাকা দিতে বলেছি। চাষীদের চিন্তা করতে বারণ করেছি। বাংলার দুর্ভাগ্য। বাংলার অবস্থান নৌকার মতো। বাংলায় বন্যা বেশি হয়। বাংলা নদীমাতৃক দেশ। ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি হলেই নিজেদের বাঁচাতে জল ছেড়ে দেয় বাংলার উপর। ফরাক্কার জলেও প্লাবিত হয়। দীর্ঘদিন ড্রেজিং না করার ফলে জলটা ছেড়ে দেয়। মালদহ, মুর্শিদাবাদ এবং বিহারের কিছুটা প্লাবিত হয়। বিহার বাঁধ কেটে দিয়ে বাংলায় জল ঢুকিয়ে দেয়। গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যান, ফ্লাড কন্ট্রোল সব দিল্লির অধীন। আজ পর্যন্ত তারা কোনও কাজ না করার ফলে সব ডুবে যাচ্ছে। সব রাজনৈতিক দলকে বলব, নিজেদের মূর্তি বানিয়ে, বড় বড় বিল্ডিং বানিয়ে টাকা খরচ না করে ফ্লাড কন্ট্রোলের এক চতুর্থাংশ টাকা যদি আমরা পাই, আমরা কাজ করতে পারি।’’
advertisement
রাজ্যে অনেক ফ্লাড সেন্টার করা হয়েছে। স্কুল ছুটি হয়ে গেলে সেগুলিকে কাজে লাগাতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘পিএইচইতে জলের খামতি যাতে না হয় তা দেখতে বলা হয়েছে। পূর্ত দফতরকে বলা হয়েছে রাস্তা ঠিক করার জন্য। পঞ্চায়েত দফতরকে বলা হয়েছে বাড়ি তৈরির অর্ধেক বরাদ্দ টাকা ডিসেম্বরে ছাড়ব। জল কমে গেলে সার্ভে করতে বলা হয়েছে। ১১ লক্ষ মানুষের বাড়ি হবে। সংখ্যালঘু দফতরকেও বলা হয়েছে ৬৫ হাজার মানুষকে বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হবে। যাদের মাটির বাড়ি ধ্বসে গেছে, তাদের বাড়িগুলিও সার্ভে করে তাদের পাইওরিটি দিতে হবে। ৫০ লক্ষ বাড়ি দিয়েছি। এখনও অনেক বাকি আছে। যাদের তালিকায় নাম নেই, তাদেরও করে দেওয়ার চেষ্টা করব। যাদের বাড়ি ভেঙে গেছে তাদের তিনটে করে ত্রিপল দিতে বলা হয়েছে। খাওয়াদাওয়া-সহ রিলিফ চলবে যতক্ষণ না স্বাভাবিক পরিস্থিতি হচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, দলের পক্ষ থেকে ১০ ট্রাক খাবার পুলিশকে দেওয়া হয়েছে। পুলিশও অনেক জায়গায় কমিউনিটি কিচেন করে সাহায্য করছে। আমরা সাধ্যমতো ড্রাই প্যাকেট করে দিচ্ছি। কাউকে ৫ কেজি চাল, কাউকে ৫ কেজি মুড়ি, দুধ, চা, ডালও দেওয়া হচ্ছে পরিবার অনুযায়ী। এরপরেও বন্যা হলে আবার দেওয়া হবে। মানুষ যেন না ভাবেন তাঁরা বিপদে পড়ে আছেন। মায়ের কাছে প্রার্থনা করি সব দুর্যোগ কেটে যাক। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিধায়কদের বলা হয়েছে বিধায়ক কোটায় গ্রামীণ রাস্তা করুক। সাংসদরাও টাকা দিয়ে রাস্তা করুক— গ্রামীণ রাস্তাগুলি।’’ উল্লেখ্য, এদিন পূর্বস্থলীর উত্তরের বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় গঙ্গার ভাঙন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বললে মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে জানান, বিধায়ক কোটায় কাজ করতে।
advertisement
মুখ্যমন্ত্রী ফের বলেন, ‘‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানে ৪০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। ডিপিআর তৈরি হচ্ছে। ৩ বছর লাগবে। এটা আমরা করব। অনেক জায়গায় বাঁধ ভেঙেছে। যেখানে জল জমে আছে, সেখানে এসি, টিভি বন্ধ রাখবেন। বিদ্যুতের কাজ হচ্ছে। ডিভিসি নিয়ে আমরা শেয়ার তুলে নিচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি। আমাদের দুজন পদত্যাগ করেছেন। তাদের কিছু জানানো হত না। বাংলার এই বঞ্চনা আমরা মানব না।’’
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
September 24, 2024 10:05 AM IST
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
Mamata Banerjee: ত্রাণের কাজে ঢিলেমি নয়...বার্তা আধিকারিকদের, আজ বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বীরভূমে বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী