West Medinipur News: দস্যু দলপতির নামে গড়? রোমাঞ্চে ঘেরা ইতিহাস জানলে গায়ে কাঁটা দেবে

Last Updated:

West Medinipur News: একটা সময় এখানে একটি আমোদ প্রমোদের ভবন, আস্তাবল, বারদুয়ারি, শান বাঁধানো পুকুর-সহ একাধিক স্থাপত্য ও স্থান ছিল। এখন সবটাই ভগ্নপ্রায়। ক্রমেই ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়েছে এই সমস্ত ঐতিহ্য।

+
ভগ্নপ্রায়

ভগ্নপ্রায় ইমারত

পশ্চিম মেদিনীপুর: ভগ্নপ্রায় একটি বাড়ি, কয়েক মিটার দূরে শান বাঁধানো পুকুর, জঙ্গলে ঘেরা এলাকায় এই প্রাচীন ইমারত এক ইতিহাসের আকর। নেপথ্যে রয়েছে দস্যুবৃত্তি ছেড়ে মূল স্রোতে ফিরে আসার এক কাহিনী। কয়েকশো বছর পিছনে গেলে রাজাদের রাজ শাসন এবং দস্যুদের আক্রমণ একটি সাধারণ ঘটনা ছিল। রাজা অত্যাচারী, আমোদবিলাসী কিংবা দস্যুদের দস্যুবৃত্তির অনেক উদাহরণ আছে এ রাজ্যে। ইতিহাস ঘেঁটে এমনই নানা তথ্যের কথা জানা যায়। এক সময়ে দস্যুদলপতির নামে গড়বাড়ি গড়ে তুলেছিলেন এক রাজা, এমন ঘটনা শুনলে অবাক হবেন। দস্যু দলপতির নামে গড়বাড়ি? তবে ইতিহাসবিদরা এমনই উদাহরণ দিয়েছেন। এমনই উদাহরণ রয়েছে মেদিনীপুর জেলাতেই। চারিদিকে সবুজের ক্ষেত্র। ধীরে ধীরে জনবসতির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর মাঝে নানা ইতিহাস নিয়ে এখনও ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে ইতিহাসের ইমারত। যা বহু ঘটনার সাক্ষী।
রাজা অত্যাচারী ও প্রজাহিতৈষী ছিলেন এমন উদারহণ আছে অনেক। কিন্তু রাজার ভালবাসায় এলাকায় দস্যুবৃত্তি করে একসময় রাজাকে অতিষ্ঠ করে তোলা দস্যু দলপতি, রাজার সৈন্য দলে অংশ নিয়ে রাজাকেই রক্ষা করেছে এমন উদাহরণও হয়ত হাতে গোনা। আবার সেই দস্যু দলপতির নামে গ্রাম তথা গড় তৈরি করে দেওয়ার উদাহরণ আছে কি? ইতিহাস ঘেটে যদিও এর সদর্থক উত্তর মেলে। পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়ের ইতিহাস ঘেঁটে, গবেষকদের গবেষণায় এমনটাই জানা যাচ্ছে। নারায়ণগড়ের পাল রাজবংশ অনেক প্রাচীন। শুরু হয়েছিল বাংলার ৬৭১ সনে। ইংরেজির ১২৬৩-৬৪। তখন বাংলায় অরাজক পরিস্থিতি। খয়রা, মিজি দস্যুজাতির ভয়ে তটস্থ এলাকার মানুষ। মুহুর্মুহু ঘটত চুরি, ছিনতাই এর মতো ঘটনা। মনে করা হয় সেই সময়ে, নারায়ণগড়ে পাল বংশের প্রতিষ্ঠা হয়। গন্ধর্ব পাল যার প্রতিষ্ঠাতা। সে সময় খয়রা ও মিজি নামে দস্যুজাতি দস্যুবৃত্তি করেই তাদের জীবিকা চালাত।
advertisement
advertisement
গবেষকেরা মনে করেন, শিকার প্রিয়, দস্যুজাতি খয়রাজাতি নারায়ণগড় রাজার যত্নে ও ভালবাসায় দস্যুবৃত্তি ছেড়ে রাজার সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিল। গন্ধর্ব পালের পুত্র নারায়ণবল্লভের নামে পরে নাকি ‘নারায়ণগড়’ নাম হয়েছে। এমনটাই মত প্রকাশ করেছেন অনেক গবেষক। তার পুত্র দেবীবল্লভের (বাংলা ৭২০-৭৩৬ ) কাজ স্মরণীয়। তিনি অত্যন্ত ভালবাসতেন খয়রাজাতিদের। আমোদপ্রিয় দেবীবল্লভ নারায়ণগড় থেকে দুই, তিন ক্রোশ দুরে জঙ্গলাকীর্ণ একটি মনোরম স্থানে গড়বাড়ি নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তার নাম দেন বিনয়গড়। ছিল হাওয়ামহল, আস্তাবল, বারদুয়ারি। পরের দিকে এসব হয়েছে। ইতিহাসবিদরা মনে করেন দস্যু দলপতি বিনায়কের নামে নামাঙ্কিত হয় এই গড়বাড়ি। বিনয়গড়ে ছিল পাল রাজাদের প্রমোদ ভবন। এখনও সুরম্য, কারুকার্য খচিত সেই ভবনের ধ্বংসাবশেষ দেখা যায়। বিস্মিত করে এর ভেতরের পরিকল্পনা ও কারুকাজ দেখে।
advertisement
প্রায় দেড়হাজার বিঘা ভূমি এই গড়ের অন্তর্ভুক্ত ছিল। খয়রাজাতিরা এখানে বসবাস, পশু শিকার ও চাষ আবাদেও যুক্ত হয়। পাশেই বৃহৎ ঝিল ছিল। যার বাঁধ রণবাঁধ নামে পরিচিত। উষর ভূমি উর্বর করা হয়েছিল। পাল বংশের শেষ রাজা পৃথ্বীবল্লভের সময়ে বিনয়গড়ের অনেকটা শ্রীবৃদ্ধি ঘটে। নতুন করে, মনের মতন সাজিয়ে ছিলেন তিনি। সেই শ্রী রাজার মৃত্যুর পর ধ্বংসের দিকে হেঁটেছে। একটা সময় এখানে একটি আমোদপ্রমোদের ভবন, আস্তাবল, বারদুয়ারি, শান বাঁধানো পুকুর-সহ একাধিক স্থাপত্য ও স্থান ছিল। এখন সবটাই ভগ্নপ্রায়। ক্রমেই ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়েছে এই সমস্ত ঐতিহ্য। স্থানীয়দের দাবি প্রশাসন এই জায়গার উন্নতি করে পর্যটকদের আসা এবং ইতিহাসক্ষেত্র হিসেবে উন্মুক্ত করুক।
advertisement
রঞ্জন চন্দ
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
West Medinipur News: দস্যু দলপতির নামে গড়? রোমাঞ্চে ঘেরা ইতিহাস জানলে গায়ে কাঁটা দেবে
Next Article
advertisement
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! তারপরেই, এই এলাকার পুজোর থিম দেখলে অবাক হবেন!
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! অন্যরকম থিম এই এলাকায়
VIEW MORE
advertisement
advertisement