#বাঁকুড়া: গ্রামের নাম একসময় ছিল , তবে আজ ডোকরা গ্রাম বললেই মানুষ দেখিয়ে দেন বিকনা গ্রাম ৷ কলকাতা থেকে জাতীয় সড়ক ধরে বাঁকুড়া শহরে যাওয়ার সময় পথেই পড়ে এই গ্রাম ৷ ভোটের ঠিক আগে কেমন আছে এই গ্রাম , তার মানুষ সেই খোঁজ নিতে গিয়েছিল News 18 বাংলা .Com ৷
গ্রামে ঢুকতেই একটাই ছবি, ছবিটা ব্যস্ততার ৷ নারী -পুরুষ নির্বিশেষে ব্যস্ত শিল্প সৃষ্টিতে ৷ একের পর এক পদক্ষেপ মেনে তৈরি হয়ে যাচ্ছে অনুপম সৃষ্টি ৷ কোনটা থেকে গণেশ, কোনটা থেকে দুর্গা, কোনটা থেকে আবার আরও অন্য কিছু ৷ সময় এগিয়ে চলে তাই শুধু আর এই প্রচলিত চেনা জিনিসের বাইরেও তৈরি হচ্ছে নান্দনিকতার ছোঁওয়ায় মোড়া আধুনিক জিনিস ৷ যেমন টাওয়েল হ্যাঙ্গার, সোপ কেস, দরজার কড়া-র মত রোজকার প্রয়োজনীয় জিনিস ৷ পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে গয়নাও ৷
পদ্ধতি এখনও নিজেদের পুরনো ঐতিহ্য মেনেই হয় ৷ তবে আগে মূলধনের জন্য মহাজনের কাছে চড়া সুদে হাত পাততে হত ৷ জিনিস বিকোলে ধার শোধেই বেরিয়ে যেত সব আর মোটা টাকার লাভ করত মিডল ম্যান বা ফোড়েরা ৷ এখন এই ছবিটা আস্তে আস্তে বদলেছে ৷ তৈরি হয়েছে শিল্পী সমবায়।
আরও পড়ুন - প্রকৃতিকে বাঁচানো না উন্নয়ন, ভোটে কোন পথে হাঁটবে অযোধ্যা পাহাড়
প্রয়োজনে ওই সমবায় থেকে নামমাত্র সুদে ঋণ পাচ্ছেন শিল্পীরা। ডোকরা সামগ্রী বিক্রি করে শোধ করছেন ঋণ। শিল্পীদের থেকে সামগ্রী কিনছে রাজ্য সরকার। তৈরি হয়েছে শিল্প বিপণিও। আর কেউ যদি সমবায়ের সদস্য না হয়ে কাজ না করতে চান তাতেও কোনও বাধা নেই ৷ কারণ বাজার এখন বড় হয়েছে তাই ক্রেতারা সরাসরি পৌঁছে যেতে পারছেন এঁদের কাছেও ৷
বিভিন্ন শিল্পের ক্ষেত্রে যেমন পরবর্তী প্রজন্ম এগিয়ে আসে না ডোকরা গ্রামে ছবিটা অবশ্য সেরকম নয় ৷ পড়াশুনোর পাশাপাশি এই কাজও করছে তাঁরা ৷ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত পসরা নিয়ে নিজেরা সরাসরি পৌঁছে যাচ্ছে পাশাপাশি অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও এখন এই শিল্পসামগ্রীর পসরা নিয়ে ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে ৷ স্মার্টফোনের হাত ধরে আমাজন, ফ্লিপকার্টের মত প্ল্যাটফর্মকেও এখন বেছে নিচ্ছে নতুন প্রজন্ম ৷
বিকনা ডোকরা গ্রামে সব মিলিয়ে ৬০টি শিল্পী পরিবারের বাস। Online প্ল্যাটফর্মে গিয়ে বিক্রির কথা ভাবলেও আধুনিক পদ্ধতিতে এই ডোকরা তৈরি করার দিকে খুব একটা ঝুঁকছেন না তারা ৷ কারণ তাদের সাফ কথা প্রাচীন পদ্ধতিতে আগুনেরভাটিতে ডোকরার ছাঁচে ধাতু ভরে গলানোতে যে পরিমাণ অর্থ লাগে আধুনিক কোনও পদ্ধতিতে ধাতু গলাতে খরচ এক ধাক্কায় অনেকটা বেড়ে যায় ৷
এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষদের মতে এতে আরও একটা সমস্যা রয়েছে ৷ এই জিনিসগুলির কোনও নায্য মূল্যের নির্ধারিত তালিকা না থাকাটা তাদের ভোগায় ৷ ক্রেতারা এসে দেদার দরদাম করেন ৷ যাতে কাঁচামাল -জ্বালানির মূল্যটা হয়ত উঠে যায় কিন্তু শিল্পী স্তত্বার পরিশ্রম , সৃষ্টিশীলতার মূল্য মেলে না ৷ রাজ্য সরকারের উদ্যোগে কালো রাত কাটিয়ে ভোরের আলো তাঁরা দেখতে পারছেন ৷ সমবায় সমিতির পদাধিকারী থেকে সাধারণ কর্মী সকলের মতেই ছবিটা অনেকটাই বদলেছে ৷ আগামী ভোটের পরেও যেন তাদের নিয়ে ভাবনা রাখে সরকার এমনটাই তাদের দাবি ৷ চাই শিল্পের মর্যাদা, চাই শিল্পীর সম্মান এই দাবিপূরণের স্বপ্ন নিয়েই ষষ্ঠ পর্বের লোকসভা ভোটে ভোট দেবে বিকনা ৷
লোকসভা ভোটের ষষ্ঠ দফায় ১২ মে ভোটগ্রহণ হবে বাঁকুড়ায় ৷ এই লোকসভা কেন্দ্রটি বর্তমানে তৃণমূলের দখলে ৷ তৃণমূলের হয়ে এবার এই কেন্দ্র থেকে ভোটে দাঁড়িয়েছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায় , এছাড়া ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থী সুভাষ সরকার আর বামপন্থী প্রার্থী অমিয় পাত্র (সিপিআইএম) ৷
আরও দেখুন
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Bankura S25p36, Dokra, Lok Sabha elections 2019, Sixth Phase, Special Story