#কলকাতা: "অযোধ্যায় রাম মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন আর বাংলায় তৃণমূল সরকারের মৃত্যু ঘন্টা। বুধবার একই সঙ্গে দুটোর সূচনা।" অন্য কেউ নন, অযোধ্যায় ভূমিপুজোর দিন এভাবেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধলেন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং।
সকাল থেকেই টিভির পর্দায় চোখ রেখে বসেছিলেন দাপুটে সংসদ। ফোনে ফোনে খবর নিচ্ছিলেন জেলার কোন মন্দিরে কখন পুজো শুরু হবে! তারপর বেলা গড়াতেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে হাজির ভাটপাড়ার মেঘনা মোড়ের রাম-সীতার মন্দিরে। মন্ত্র আউরে, ধূপধুনোয় পূজা-আচ্চা, হোম যজ্ঞ। সবটাই সারলেন নিষ্ঠা ভরে। রাজ্যে সাপ্তাহিক লকডাউনের দিনে পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি বাতিল করে ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ ফিরে গেলেন বাড়িতে নিজের দফতরে। সেখান থেকেই নিয়ন্ত্রণ করলেন গোটা জেলার রাম-বন্দনা।
বাড়ির দোতলায় নিজের কার্যালয়ে বসেই অর্জুন বলছিলেন, "পাঁচ বার লকডাউনের দিন পরিবর্তন হয়েছে। অথচ আজকের দিনটাকেই সাপ্তাহিক লকডাউনের দিন হিসেবে বেছে নিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। জনগণের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এই সরকার। চার মাস পরে মানুষ এই সরকারকে ছুড়ে ফেলে দেবে।"
সাংসদের পুজো পাঠ শেষ হতেই বাড়ি লাগোয়া মন্দিরে লাগিয়ে দেওয়া হয় ঢাউস সাউন্ড সিস্টেম। লকডাউন তখন শিকেয়। অর্জুনের পাড়ায় বুড়ো থেকে বাচ্চা তখন রাস্তায়। লাগাতার 'জয় শ্রীরাম স্লোগান'-র সঙ্গেই শুরু হল উদ্দাম নাচ আর শব্দবাজির ব্যবহার। সাপ্তাহিক লকডাউনের বিধি-নিয়মের পরোয়া না করে শুরু হয়ে গেল শব্দবাজির যথেচ্ছ ব্যবহার।
ভাটপাড়ার মেঘনা মোড়ে মোতায়েন থাকা বিশাল পুলিশবাহিনীর নজরে আসতেই শুরু হয় টহলদারি। পুলিশের পেট্রোলিং-র সঙ্গে লুকোচুরি খেলায় মেতে ওঠে অর্জুন বাহিনী। পুলিশ দেখলেই রাস্তা ছেড়ে অলিগলিতে আশ্রয় নেয় ভাটপাড়ার রাম ভক্তরা। পুলিশ ভ্যান চোখের আড়াল হতেই রাস্তা দখল নিয়ে আবারও দেদার নাচ আর শব্দ বাজির ব্যবহার।
এরইমধ্যে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে জানকি মাহাতো ও বিকাশ মাহাতো নামে দুই স্থানীয়কে শব্দ বাজি ফাটানোর অভিযোগে বাজি সমেত আটক করে জগদ্দল থানার পুলিশ। তবে অযোধ্যায় ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দিন বাকি সময়টা ঘরের বাইরে বেরোননি সাংসদ অর্জুন সিং। সেটাই রক্ষে!
PARADIP GHOSH