North 24 Parganas News: তাঁর বিয়ে দিয়েছিলেন স্বয়ং বিদ‍্যাসাগর! সৃষ্টি হল বিধবা বিবাহের ইতিহাস, শ্রীশচন্দ্রকে কি ভুলতে বসেছে বাংলা?

Last Updated:

ডিসেম্বরের রাতে বিদ্যাসাগর বিয়ে দিয়েছিলেন এই ব্যক্তির। কে তিনি? জানুন ইতিহাস

তাঁর বিয়ে দিয়েছিলেন স্বয়ং বিদ‍্যাসাগর! সৃষ্টি হল বিধবা বিবাহের ইতিহাস, শ্রীশচন্দ্রকে কি ভুলতে বসেছে বাংলা?
তাঁর বিয়ে দিয়েছিলেন স্বয়ং বিদ‍্যাসাগর! সৃষ্টি হল বিধবা বিবাহের ইতিহাস, শ্রীশচন্দ্রকে কি ভুলতে বসেছে বাংলা?
উত্তর ২৪ পরগনা: ১৮৫৬ সালের ডিসেম্বর, সময় বলা যায় রাতের দ্বিতীয় প্রহর। কলকাতার সুকিয়া স্ট্রিটের রাজকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে তখন ভিড় নিমন্ত্রিতদের। প্রায় ৮০০ জনকে কার্ড দিয়ে নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল। রাস্তায় পুলিশের পাহারা চলছে।
এমন সময় পালকি চেপে বিয়ে করতে এলেন মুর্শিদাবাদের জজ পণ্ডিত শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্ন। পাত্রী কালীমতি বর্ধমানের পলাশডাঙার প্রয়াত ব্রক্ষানন্দ মুখ্যোপাধ্যায়ের দশ বছরের বিধবা মেয়ে। কালীমতির প্রথম বিয়ে হয়েছিল চার বছর বয়সে। আর বিধবা হন ছয় বছর বয়সে। কালীপ্রসন্ন সিংহ, রমাপ্রসাদ রায়, নীলকমল মুখ্যোপাধ্যায়, প্যারীচাঁদ মিত্র, রামগোপাল ঘোষ-সহ আরও অনেকের উপস্থিতিতে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে বিদ্যাসাগর কনের মা লক্ষ্মীদেবীকে দিয়ে কন্যা সম্প্রদান করালেন।
advertisement
advertisement
সেই সঙ্গে এই দিনটি ঘিরে তৈরি হল এক ইতিহাস। বিধবা বিবাহ আইন পাশের পর বিদ্যাসাগর বিস্তর খরচ করে প্রথম বিধবা বিবাহের জমকালো এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন।ভারতের ইতিহাসে স্বর্নাক্ষরে লেখা রইল প্রথম বিধবা বিবাহের দিনটি। সেই দিনের বিধবা বিবাহ নিয়ে পরবর্তীতে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে।
advertisement
পাশাপাশি উত্তর ২৪ পরগনা জেলার গোবরডাঙ্গার খাঁটুরার বাসিন্দা শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্ন প্রথম বিধবা বিবাহ করে চক্ষুশুল হয়ে উঠেছিলেন তৎকালীন সমাজে। এমন কাজের পর এই সমাজ সংস্কারককে বিশেষ মর্যাদা দেয় ব্রিটিশ সরকার। বঁনগার ডেপুটি ম্যাজিস্টেট পদে উন্নিত হন শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্ন। পরবর্তীতে ১৮৭০ সালে গোবরডাঙ্গা পৌরসভা স্থাপিত হলে প্রথম পৌরপিতা হন শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্ন। বিধবা বিবাহ করার পর শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্নকে অনেক প্রতিকুলতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল বলে জানালেন গোবরডাঙ্গার বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ পবিত্র মুখ্যোপাধ্যায়।
advertisement
তিনি বলেন, সমাজ সংস্কারক শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্নকে শুধুমাত্র্র বিধবা বিবাহ করার জন্য গোবরডাঙ্গায় তার পৈত্রিক ভিটেতে আসতে নিরুতসাহিত করেন তৎকালীন ব্রাহ্মণ সমাজ। স্ত্রী কালীমতি দেবীর মৃত্যুর পর সমাজ ব্যবস্থার চাপে প্রায়শ্চিত্ব করে শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্নকে আসতে হয় গোবরডাঙ্গায় তার পৈত্রিক ভিটেতে। প্রথম পৌরপিতা হয়ে তিনি গোবরডাঙ্গার উন্নয়নে এনেছিলেন আমুল পরিবর্তন। গোবরডাঙ্গার পৌরসভা স্থাপন, রেললাইন স্থাপন সহ পৌর এলাকায় রাস্তাঘাট সংস্কার করে গোবরডাঙ্গার ভোল পাল্টে দেন তিনি।
advertisement
শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্ন ছিলেন গোবরডাঙ্গা পৌরসভার প্রথম নির্বাচিত পৌরপ্রধান। ইতিহাসবিদ পবিত্র মুখ্যোপাধ্যায় আক্ষেপ করে জানালেন, গোবরডাঙ্গার গর্ব তিনি। অথচ শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্নের স্মৃতি সেভাবে দেখা যায় না। বলা ভালো সংরক্ষন করা হয়নি। এমন একজন সমাজ সংস্কারক তথা শিক্ষাবিদের বসত ভিটে আজ নিশ্চিহ্ন।
তবে ১৮৬৮ সালে তার মায়ের নামে গোবরডাঙ্গার কঙ্কনা বাওড়ের ধারে গড়ে তোলা জোড়া শিব মন্দিরের অস্তিত্বটুকু বর্তমান রয়েছে। শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্ন প্রথম নির্বাচিত পৌরপ্রধান, সেটুকু স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে পৌরসভার পক্ষ থেকে খাঁটুরায় তার বাড়ির সামনের রাস্তাটির নামকরন করা হয়েছে শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্ন সরনী। পৌরসভায় খোদাই করা রয়েছে শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্ন ভবন নামটি। গোবরডাঙ্গার ইতিহাস সৃষ্টিকারী এই মানুষটিকে স্মরণ করতে বা নতুন প্রজন্মের কাছে শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্নের পরিচয় তৈরি করে দিতে বিগত এতগুলো বছরেও তেমন ভুমিকা দেখা যায়নি পৌরপ্রশাসনের পক্ষ থেকে। শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্ন আজও অবহেলায় থাকলেও, তার অবদানকে ভুলতে পারেননি গোবরডাঙ্গার শিক্ষিত সমাজ।
advertisement
Rudra Narayan Roy
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
North 24 Parganas News: তাঁর বিয়ে দিয়েছিলেন স্বয়ং বিদ‍্যাসাগর! সৃষ্টি হল বিধবা বিবাহের ইতিহাস, শ্রীশচন্দ্রকে কি ভুলতে বসেছে বাংলা?
Next Article
advertisement
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! তারপরেই, এই এলাকার পুজোর থিম দেখলে অবাক হবেন!
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! অন্যরকম থিম এই এলাকায়
VIEW MORE
advertisement
advertisement