#কোন্ননগর: করোনা আবহেও ফিকে হচ্ছে না পাঁচশো ছেষট্টি বছরের জৌলুস। এবারও পুজো হবে কোন্নগরের ঘোষালবাড়িতে। তবে বাদ পড়ছে বেশ কিছু আনন্দ অনুষ্ঠান। বন্ধ পংকতি ভোজন। মাটির মালসায় ভোগ বিতরণ। প্রসাদ বিতরণ। তবে এবার পুজো দেখা যাবে ঘোষাল বাড়ির ফেসবুক লাইভে।
করোনার কারণে পাঁচশো ছেষট্টি বছরের পুজো এবার ভার্চুয়াল। ফেসবুক লাইভে সরাসরি দেখা যাবে কোন্ননগরের ঘোষালবাড়ির পুজো । অষ্টমীর সন্ধ্যের পারিবারিক নাটকও দেখা যাবে অনলাইনে। করোনা অসুরকে বধ করতে এবছর নিজেই অসুরের ভূমিকায় অভিনয় করবেন বাড়ির কর্তা। উত্তরপাড়ার বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল। ঠাকুরদালানে চলছে তারই মহড়া। পাশেই তৈরি হচ্ছে মূর্তি।
দিল্লির সম্রাট আকবরের শাসনকালে কোন্নগরের ঘোষালরা জমিদারের স্বীকৃতি পান। দুর্গাপুজো শুরু তখন থেকেই। হাওড়া, হুগলি থেকে বহু প্রজা আসতেন। ভেট হিসেবে প্রজাদের আনা কাঁচা আনাজ, মাছ, নারকেল দিয়েই পুজো হত। ব্রিটিশ আমলে পুজোর খরচ হিসেবে সাতশো পঞ্চাশ টাকা মঞ্জুর করা হত। প্রতিপদ থেকে শুরু চণ্ডীপাঠ। পঞ্চমীর দিন বাড়িতে তৈরি হয় নারকেল নাড়ু। তাই দিয়েই অতিথিদের মিষ্টি মুখ করানোর রীতি।
ঘোষাল বাড়ির পুজোয় ঢাকের বদলে ঢোল ও কাঁসর বাজে। গঙ্গা থেকে ধরে আনা জেলেদের ইলিশ মাছ ভাজা ও পান্তা খেয়ে দশমীর দিন বাড়ির মহিলারা দুর্গা বিসর্জনে যান। প্রাচীন ঐতিহ্য আজও ধরে রেখেছে নতুন প্রজন্ম। এক সময় অষ্টমীর দিন গান গাইতে আসতেন বড়ে গুলাম আলি, হেমন্ত মুখোপাধ্যায় সহ বিভিন্ন শিল্পী। এখন নিজেরাই নাটক করেন। করোনা পরিস্থিতিতে পুজোয উন্মাদনা এবার কম। বসে খাওয়া বন্ধ। মাটির মালসায় ভোগ বিতরণ। গোটা ফলে পুজো। ঠাকুর দালানে রাখা থাকবে মাস্ক ও স্যানিটাইজার।
অনেক আত্মীয়-ই এবার আসতে পারবেননা। অংশ নিতে পারবেন না পারিবারিক নাটকে। করোনাকালে এবছর বাড়িতে বসেই ঘোষালবাড়ির পুজো দেখা।