Doctors: ডাক্তারদের কেন 'ভগবান' বলে এ যেন তারই নজির! দিনমজুর সন্তোষের প্রাণ বাঁচাতে অসাধ্যসাধন বাংলার হাসপাতালে

Last Updated:

Doctors: দু'টি বিরলতম রোগ থেকে মুক্তি পেতে চলেছে দিনমজুর পরিবারের ছেলে। বুকে ব্যথা, জ্বর, কাশির উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে যে রোগের শিকার জানা গিয়েছিল তা ভয়ঙ্কর। জানুন...

উঠে বসেছে সন্তোষ
উঠে বসেছে সন্তোষ
পশ্চিম মেদিনীপুর: আবারও এক অসাধ্যসাধন। দু’টি বিরলতম রোগ থেকে মুক্তি পেতে চলেছে দিনমজুর পরিবারের ছেলে। যে ছেলেটা তিন বছর আগে থেকে শয্যাশায়ী, সে ছেলে এখন বসতে পারছে। এক সময় যে বুকে ব্যথা, জ্বর, কাশি ছিল তাও কমে গিয়েছে। স্বাভাবিক ভাবে সরকারি এই হাসপাতালের চিকিৎসকরা নতুন জন্ম দিয়েছে এই যুবককে।
বছর তিনেক আগে জঙ্গলমহল ঝাড়গ্রামের এক যুবক হঠাৎ অসুস্থতা নিয়ে চিকিৎসা শুরু করেন। জঙ্গলমহলের প্রত্যন্ত দিনমজুর পরিবারের ছেলে সন্তোষ হেমব্রমকে নিয়ে চিন্তায় ছিল পরিবার। এবার সেই অসুস্থ যুবককে কার্যত জীবন ফিরিয়ে দিচ্ছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ। পরপর দু’টি বিরলতম রোগ থেকে মুক্তি মিলেছে।
আরও পড়ুন: ‘ব্যাগে তল্লাশি চালানো হবে’, ক্লাস ৮-৯-এর ছাত্রদের ব্যাগ থেকে যা যা উদ্ধার হল ভাবতে পারবেন না! শেষে পুলিশ ডাকতে হল, কোথায়?
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, প্রত্যন্ত গ্রামের এই যুবক সন্তোষের কোমরে ব্যথা, হাত-পায়ের জোর কমে যাওয়া বা দুর্বল হয়ে পড়ার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। সঙ্গে জ্বর আর শুকনো কাশি। ক্রমেই হাঁটাচলা বন্ধ হয়ে সন্তোষ শয্যাশায়ী হয়ে পড়ে সে। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের আউটডোরেই চিকিৎসা শুরু করে পরিবারের লোকজন।
advertisement
advertisement
আরও পড়ুন: ‘পিৎজা খেতে গিয়েছিলাম, আচমকা আয়ানের…’, ক্যানসার আক্রান্ত ইমরান হাশমির ছেলের অস্ত্রোপচারে বাদ গিয়েছে কিডনি!
চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে জানতে পারেন, সন্তোষ আক্রান্ত হয়েছেন অ্যাঙ্কাইলোজিং স্পন্ডিলাইটিস-এ। যা অত্যন্ত বিরল রোগ। ভারতে এমন রোগ বিরলতম। শুধু তাই না, তার শুকনো কাশি ও বুকে ব্যথা উপসর্গ ছিল। চিকিৎসকেরা অনুমান করেন, সন্তোষের শরীরে শুধু অ্যাঙ্কাইলোজিং স্পন্ডিলাইটিস নয়, অন্য আরও রোগ থাকতে পারে। পরে চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করেন সন্তোষের। বাইসেপস মাসেলের বায়পসি করে তাঁরা দেখেন সন্তোষ আরেক বিরলতম রোগ আক্রান্ত। তার মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি-সিন্থেটেজ সিনড্রোমও। একসঙ্গে এই দু’টি রোগ সারা বিশ্বে প্রায় বিরলতম বলেই দাবি চিকিৎসকদের।
advertisement
এরপর মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসকরা শুরু করেন চিকিৎসা মেদিনীপুর মেডিক্যালের মেডিসিন বিভাগের উদ্যোগে বেশ কয়েকজনের টিম শুরু করেন। প্রধান (HOD) সহ দুই সিনিয়র চিকিৎসকের নির্দেশে মেডিসিন বিভাগের ফাইনাল ইয়ারের পিজিটি ডঃ স্পন্দন চৌধুরী, ডঃ অনীক দাসরা সন্তোষের চিকিৎসা শুরু করেন। গত চল্লিশ দিনে সন্তোষের শারীরিক অবস্থার অভাবনীয় উন্নতি হয়। সন্তোষ এখন বসতে পারছে। কোমর থেকে শুরু করে বুকের সেই ব্যথা আর নেই। কাশিও বন্ধ হয়েছে। নিজের হাতে খাওয়া-দাওয়া, টুকটাক কাজও করতে পারছেন সন্তোষ। স্বাভাবিক ভাবে যেন নতুন প্রাণ ফিরে পেয়েছে জঙ্গলমহলের যুবক।
advertisement
মেডিসিন বিভাগের প্রধান প্রফেসর যুগলকিশোর কর বলেন, ‘বিশেষ পরীক্ষা করে আমরা এই বিরল রোগ নির্ণয় করতে পেরেছি। আমাদের পিজিটি টিম তথা জুনিয়র চিকিৎসকেরা দুর্দান্ত কাজ করেছেন।’ চিকিৎসকেরা বলেন, ‘আগামী দু-তিন দিনের মধ্যেই সন্তোষকে ছেড়ে দেওয়া হবে। প্রত্যেক ছয় সপ্তাহ ছাড়া ছাড়া সন্তোষকে ইনফ্লিক্সিম্যাব ইঞ্জেকশন দু’টো করে, টোটাল ২০০ মিলিগ্রাম নিতে হবে। রাজ্যের প্রতিটি সরকারি মেডিক্যাল কলেজে এই ইঞ্জেকশনটি বিনামূল্যে মেলে। অবশ্য যদি সাপ্লাই থাকে।’
advertisement
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার ইন্দ্রনীল সেন বলেন, ‘আমাদের মেডিসিন বিভাগ প্রায় অসাধ্যসাধন করেছেন। আমরা গর্বিত ওঁদের জন্য। আশা করছি, ঠিকঠাক সাপ্লাই থাকলে এই ইঞ্জেকশন প্রতি ছয় সপ্তাহ ছাড়া সন্তোষকে আমরা দিতে পারব।’ ডাক্তাররা আশাবাদী, পরবর্তী চিকিৎসা চলতে থাকলে সন্তোষ হাঁটতেও পারবেন। তবে হাঁটু দুটি রিপ্লেসমেন্ট করা প্রয়োজন। এই ‘নি-রিপ্লেসমেন্ট’-এর বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
advertisement
মেডিসিন বিভাগের পিজিটি স্পন্দন বলেন, ‘আমরা মেডিক্যাল হিস্ট্রি দেখে জেনেছি, সারা বিশ্বে এর আগে এই ধরনের রোগ মাত্র দু’টি নথিভুক্ত (রিপোর্টেড) হয়েছে। আমরা এটা নথিভুক্ত (রিপোর্ট) করলে, তিন নম্বর হবে। আর ভারতে এই বিরলতম রোগ এই প্রথম নথিভুক্ত (রিপোর্টেড) হবে।’ চিকিৎসকদের সহায়তায় সুস্থ হয়ে উঠতে পেরে খুশি সন্তোষ। দিন মজুর পরিবারের তরফে চিকিৎসার এত খরচ সম্ভব হত না, তবে কার্যত চোখের কোণে জল পরিবারের। চিকিৎসকদের এই সাহসী সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সকলে।
advertisement
রঞ্জন চন্দ
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
Doctors: ডাক্তারদের কেন 'ভগবান' বলে এ যেন তারই নজির! দিনমজুর সন্তোষের প্রাণ বাঁচাতে অসাধ্যসাধন বাংলার হাসপাতালে
Next Article
advertisement
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! তারপরেই, এই এলাকার পুজোর থিম দেখলে অবাক হবেন!
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! অন্যরকম থিম এই এলাকায়
VIEW MORE
advertisement
advertisement