#শ্রীরামপুর: কলকাতায় যখন করোনা সতর্কতায় প্রতিমার চক্ষুদান। ঠিক তখন, শ্রীরামপুরে এ বছর বন্ধই হয়ে যাচ্ছিল ১৩৬তম বছরের দুর্গাপুজো। শেষ মূহূর্তে পারিবারিক ঐতিহ্য মেনে একচালার ছোট প্রতিমায় নিয়মরক্ষার পুজো হচ্ছে শ্রীরামপুরের কুণ্ডু বাড়িতে। সাজছে ঠাকুরদালান।
শ্রীরামপুর স্টেশন থেকে দশ মিনিটের পথ। গঙ্গার ধারে কুন্ডু বাড়ি। বয়স তিনশো পেরিয়েছে। শরীর জুড়ে জরা। ইট বেরনো, শ্যাওলা ধরা নোনা দেওয়ালে সময়ের হিসেবনিকেষ। ভাঙাচোরা বাড়ি সংলগ্ন ঠাকুরদালানে দুর্গা আরাধনা। ১৮৮৫ সালে পুজো শুরু করেন গোপাল কুণ্ডু। পেশায় ব্যবসায়ী। উত্তরপ্রদেশের ফৈজাবাদ থেকে আখের গুড় ও বিহারের ভাগলপুর থেকে গাওয়া ঘি আসত গঙ্গা দিয়ে বজরা করে। শ্রীরামপুর কলেজের পাশে কুণ্ডুদের নামে ঘাটও রয়েছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়। ১৯৪৩ সাল থেকে ১৯৪৭ সাল। ব্রিটিশরা কুণ্ডু বাড়ির দখল নেয়। তৈরি হয় সেনা ছাউনি। তখন শুধুমাত্র বন্ধ ছিল পুজো। আর কোনও দিন পুজো থামেনি। এখনও জন্মাষ্টমীর দিন কাঠামো পুজো দিয়ে শুরু। আগে ছিল খড়ের চাল দেওয়া মাটির ঠাকুরদালান। পরে বদলায় কংক্রিটের। পুজোর শুরু পঞ্চমী থেকে। অষ্টমীতে কুমারীপুজো।
করোনা পরিস্থিতিতে এ বার পুজো করা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। পরে একচালা ছোট প্রতিমায় পুজো করার সিদ্ধান্ত হয়। গোটা ফলে দেওয়া হবে নৈবেদ্য। পুজোর আড্ডা বসবে না। আত্মীয়রা আসতে পারবেন না দূরদূরান্ত থেকে। পুজোও হবে নমো-নমো করে। মন ভাল নেই কুণ্ডু পরিবারের।