ঢাক বাজিয়ে হারাচ্ছেন পুরুষদের, মহিলা ঢাকি দল পেতে বুকিং করতে হয় তিন মাস আগে

Last Updated:

এখন এই দলের চাহিদা বিপুল। পুরুষরাও স্বীকার করে নিচ্ছেন, এখন তাঁদের থেকে অনেক বেশি চাহিদা মহিলা ঢাক শিল্পীদের ।

 RAJARSHI ROY
#অশোকনগর: নারী পুরুষের চিরাচরিত দ্বন্দ্বে আবারও এগিয়ে গেলেন মহিলারা। ঢাকের তালে কোমর দুলিয়ে, তাঁদের চাহিদা এখন সবচেয়ে বেশী।পাড়া পাড়ায় পুজো, জন্মদিন, অন্নপ্রাশন, কিংম্বা রাজনৈতিক দলের প্রচার অথবা সরকারি প্রকল্পে সচেতনতা মূলক প্রচার... সর্বত্র এখন মহিলা ঢাকি দলের চাহিদা তুঙ্গে। সেই কথা খুব সহজভাবেই জানাচ্ছেন মহিলা ঢাকি দলের সদস্যারা। আর হার মানা হার গলায় একপ্রকার পরে নিয়েই পুরুষ ঢাকিরা সেই কথা স্বীকারও করে নিচ্ছেন।
advertisement
লোকশিল্পের পীঠস্থান বলে খ্যাত কল্যাণগড়ের নট্টপাড়ার শিল্পীরা। দিল্লি এশিয়াডে যোগদানকারী এই পাড়ার অধিবাসী এক‌ই পরিবারের তিনজন। এও এক নজির‌ই বলা যায়। এই পরিবারের‌ই  উচ্চ শিক্ষিত সজল নন্দী। পারিবারিক ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য তাঁর পিতা স্বর্গীয় অমূল্য চন্দ্র নন্দীর নামে তৈরি করেছেন লোকশল্পীদের নানারকম তালিম দেওয়ার জন্য একটি সাংস্কৃতিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সানাই, বাঁশি, ঢাক, ঢোল-সহ অন্যান্য শিক্ষাদানের সঙ্গে সঙ্গেই ঢাক তৈরীর‌ও প্রশিক্ষণ দেন সজল নন্দী। হাবড়া, অশোকনগর সহ ‌দূর দূরান্তের বহু পুরুষ ও মহিলারা এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তালিম নিয়ে আজ প্রতিষ্ঠিত।
advertisement
advertisement
এরকমই প্রায় ৫০ জন মহিলা ঢাকি শিল্পী ঢাক বাজিয়ে এলাকার নাম উজ্জ্বল করেছেন। এক সময় বর্ষার পর পর কর্মহারা কৃষি শ্রমিকরা পুজোর সময় ছেলে বা ভাইয়ের হাত ধরে গ্রাম ছাড়তেন। কাঁধে ঢাক ও পুটুলি নিয়ে শিয়ালদহ কিম্বা বড় শহরের বাজারে বা বাস স্টান্ডে দাঁড়িয়ে থাকতেন পঞ্চমী কিংম্বা ষষ্ঠীর দিন থেকে। গায়ে মলিন জামা, ছেঁড়া চাদরে মোড়া ঢাকির আজও দেখা মেলে। কিন্তুু মহিলা ঢাকির দল পেতে তিন মাস আগে বুকিং করতে হয় বর্তমান সময়ে। করোনা প্রকোপে এ বছর মহিলা ঢাকি দলের চাহিদা চলে গিয়েছিল তলানিতে। পূজার এক মাস আগেও কোনও বুকিং নেই। ঘরের মানুষ বেকার, পূজার আনন্দটাই মাটি হতে বসেছিল মহিলা ঢাকি দলের। কিন্তু রাজ্য সরকার পূজা কমিটি গুলিকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার ঘোষণার পরেই পরিস্থিতির পরিবর্তন এসেছে। এখন আবার একটি দু’টি করে বুকিং আসছে। কল্যানগড়ে নট্টপাড়ায় মহিলা ঢাকি দলের রেওয়াজ শুরু হয়েছে। এই ঢাকি দলটি আবার নিজেদের ঢাক নিজেরাই তৈরী করেন।
advertisement
৮২-র এশিয়াডে বাজানো ঢাক শিল্পী পরিমল নন্দীর কথায়, প্রয়াত  প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি তাঁদের দিল্লির দরবারে বাজানোর সুযোগ করে দিয়েছিলেন। বাংলার ঢাককে সর্বভারতীয় পরিচিত দিয়েছিলেন। সে সময় পুরুষরাই শুধু ঢাক বাজাতেন। আর বর্তমানে মহিলা ঢাকির দল তৈরি হওয়ার পর পুরুষ ঢাকিদের কদর কমছে বলে তাঁর মত। পরিমলবাবুর ভাই রতন নন্দীও সেই কথাকে সমর্থন করেন। আর অঞ্জনা নন্দী কিম্বা সোনা সরকারের কথায়, দিন দিন মহিলা ঢাকির দলের চাহিদা বাড়ছে। স্বগর্বে তাঁদের ঘোষণা, শুধু মহিলা বলেই যে তাঁদের লোকে ডাকছেন তা কিন্তু নয়, তাঁরাও পুরষের মত সুন্দর করে ঢাক বাজান। আর নিজেদের ঢাকটা নিজে হাতে বানানও। তাই প্রচার সর্বস্ব এই মহিলা ঢাকি দলকে মিডিয়া একটু বেশী প্রচার দেওয়ায় এ বছরও বেশ কয়েকটি বুকিং তাঁরা পেয়ে গিয়েছেন।
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
ঢাক বাজিয়ে হারাচ্ছেন পুরুষদের, মহিলা ঢাকি দল পেতে বুকিং করতে হয় তিন মাস আগে
Next Article
advertisement
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! তারপরেই, এই এলাকার পুজোর থিম দেখলে অবাক হবেন!
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! অন্যরকম থিম এই এলাকায়
VIEW MORE
advertisement
advertisement